জয়েই যাত্রা শুরু সবুজ মেরুনের
-
-
- Nov 21, 2020 08:46 [IST]
- Last Update: Nov 21, 2020 08:46 [IST]
কেরালা ব্লাস্টার্স ০ – এটিকে মোহনবাগান ১ (রয়কৃষ্ণ)
শুধু একটা সুযোগের অপেক্ষাতেই যেন তিনি ছিলেন। তার আগে অবধি বারবার মনে হচ্ছিল তিনি নিস্প্রভ। কিছুই করে উঠতে পারছেন না। বারবার ধরা পড়ে যাচ্ছিলেন। তবে কি প্রথম ম্যাচে চেনা ফর্মে নেই রয়কৃষ্ণ? ম্যাচের ৬৭ মিনিটে যাবতীয় আশঙ্কাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন জাত শিকারিদের জন্য একটা সুযোগই যথেষ্ট। কেরালা রক্ষণের একটা ভুল। উচু বলটা নামিয়ে নিলেন বুকে। চলন্ত বলে বাঁ পায়ে শট জড়িয়ে গেল জালে। তারপরেই ডানা মেললেন রয়কৃষ্ণ। ছুটে গেলেন গোললাইনের দিকে। সঙ্গী হলেন প্রবীর দাস। দু’জন মাতলেন গত বছরের সেই চেনা সেলিব্রেশনে। বুঝিয়ে দিলেন। শুধু জার্সির রঙটাই বদলেছে। দলটার ধার একই আছে। আর সেই ধারেই কিবুর কেরালাকে হারিয়ে জয় দিয়ে আইএসএল অভিযান শুরু এটিকে মোহনবাগানের। সবুজ মেরুন ব্রিগেড জিতলো ১-০ গোলে।
দীর্ঘদিন ফুটবলের বিরতি। কোন অনুশীলন ম্যাচও খেলেনি অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাসের দল। তাই প্রথম ম্যাচে কিছুটা হলেও ছন্নছাড়া লাগলো দলকে। চোটের জন্য দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকা সন্দেশ ঝিনগানকে প্রথম একাদশে রেখে দল নামিয়েছিলেন হাবাস। তিন কাঠির নীচে অরিন্দম ভট্টাচার্য। রক্ষণে প্রীতম কোটাল, সন্দেশ ঝিনগান এবং টিরি। দু’প্রান্তে প্রবীর এবং সুসাইরাজ। মাঝে কার্ল ম্যাকহিউজ, প্রণয় হালদার, জাভি, এডু গার্সিয়া। আক্রমণে রয়কৃষ্ণ। প্রথম থেকেই রয়কৃষ্ণকে চোখে চোখে রেখেছিল কেরালা রক্ষণভাগ। ম্যাচের প্রথমার্ধে দু’দলের খেলা দেখেই মনে হলো, দল গুছিয়ে নিতে সময় লাগবে। যদিও নিজেদের মধ্যে অনেক বেশি পাস খেললো কিবু ভিকুনার কেরালা ব্লাস্টার্স। ৪ মিনিটে কর্নার থেকে সুবিধাজনক জায়গায় বল পেলেও শট নিতে পারেননি রয়কৃষ্ণ। ১২ মিনিটে চোট পেয়ে বেরিয়ে যান সুসাইরাজ। মাঠে আসেন শুভাশিস বোস। প্রথমার্ধে কোন দলের আক্রমণভাগই তেমন বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে নিজের পরিকল্পনা বদলান হাবাস। মাঠে আনেন আরেক স্ট্রাইকার মনবীর সিংকে। আর সেই পরিবর্তন কাজে লেগে যায় মাত্র চার মিনিটের মধ্যে। মনবীর সিং বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে পড়েন কেরালা রক্ষণে। তাঁর ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন কেরালার দুই ডিফেন্ডার ভিসেন্ট এবং সিডোঞ্চা। সুযোগ কাজে লাগিয়ে এটিকে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন রয়কৃষ্ণ। একাধিক পরিবর্তন করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন কিবু ভিকুনা। কিন্তু তা কাজে লাগেনি। বরং মাঝমাঠে নিজের নামের সুবিচার করতে পারেননি প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার সাহাল আব্দুল সামাদ। উলটোদিকে গোটা ম্যাচে রক্ষণ মজবুত রেখেছিলেন প্রীতম কোটাল, সন্দেশ, টিরিরা। তেমন কিছুই করতে পারেননি কেরালা আক্রমণের মূল ভরসা গ্যারি হুপার। ম্যাচের শেষের দিকে ডেডিড উইলিয়ামসকে নামান হাবাস। বড় চেহারার উইলিয়ামস বেশ কিছুটা সুবিধাও করে দেন। শেষ পর্যন্ত জিতেই মাঠ ছাড়েন সবুজমেরুন ফুটবলাররা।
ম্যাচের আগে এটিকে মোহনবাগান কোচ অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাস বারবার বলেছিলেন প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় পাননি। সেটা খেলাতেও বোঝা গেছে। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বলের দখল ছিল কেরালা ফুটবলারদের পায়ে। তবে ফুটবলে গোলই শেষ কথা বলে। এদিনও তাই বললো। ম্যাচের পর তাই খুশি কোচ হাবাস। তিনি জানালেন, ‘অনেকদিন পর ফুটবলাররা মাঠে নামলো। আমি খুব খুশি যে জিতে মাঠ ছাড়তে পারলাম। এই ম্যাচে আমার একটাই লক্ষ্য ছিল জয়। সেটা পেয়ে আমি সন্তুষ্ট।’ কাজটা যে মোটেও সহজ হয়নি তাও মেনে নিয়েছেন হাবাস। ‘ম্যাচটা আমাদের কাছে খুবই কঠিন ছিল। কারণ পর্যাপ্ত অনুশীলনের সময় পাইনি। প্রস্তুতি ম্যাচও খেলিনি। তাও জিততে পেরেছি, এটাই দলের জন্য ভালো। কেরালাও ভালো ফুটবল খেলেছে। তবে পার্থক্য একটাই। ওরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। আমরা পেরেছি।’ পরের ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে। হাবাস জানালেন, ম্যাচের পর আপাতত বিশ্রাম। শনিবার থেকে এই নিয়ে ভাববেন। তবে গোটা শিবিরকে চিন্তায় রেখেছে সুসাইরাজের চোট।
এটিকে মোহনবাগান : অরিন্দম, টিরি, সন্দেশ, প্রীতম, সুসাইরাজ (শুভাশিস), প্রবীর, প্রণয় (মনবীর), কার্ল, এডু, জাভি, রয়কৃষ্ণ (উইলিয়াম)।