জরুরি পরিষেবার কর্মীরাও দিতে পারবেন পোস্টাল ভোট
-
-
- Mar 03, 2021 06:43 [IST]
- Last Update: Mar 03, 2021 06:43 [IST]
দেশে এই প্রথম জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী যদি কেউ ভোটের দিন বুথ এলাকায় না থাকেন কাজের প্রয়োজনে অন্যত্র যেতে হয় তাহলে তিনি পোস্টাল ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এরমধ্যে রয়েছে ভারতীয় রেল, মেট্রো রেল, শিপিং, অ্যাভিয়েশন, পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফ, দূরদর্শন, বেতার এবং ‘মিডিয়াপার্সন’। মঙ্গলবার সিইও অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু এ খবর জানান। তিনি বলেন দেশে এই প্রথম এমন সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সাংবাদিক বৈঠকে ‘মিডিয়াপার্সন’ এর বিষয়টি বিস্তারিত জানত চাওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘মিডিয়াপার্সন’ অথোরাইজ রাইড বাই ইলেকশন কমিশন ফর পোল ডে’ এই টুকুই লেখা আছে বিজ্ঞপ্তিতে। এ বিষয়ে ওই সমস্ত দপ্তরে কর্তাদের নিয়ে এদিনই সিইও আরিজ আফতাব বৈঠক করেছেন। কয়েকজন নোডাল অফিসার পাওয়া গেছেন। যাঁরা রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্মী বা মিডিয়া পার্সেনকে ‘১২ডি’ ফরম পৌঁছে দেবেন।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ৩০টি বিধানসভা আসনে ভোট গ্রহণের জন্য এদিনই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এবার সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে। ২৬ তারিখ দিল্লি থেকে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার সময়ই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা জানিয়েছিলেন এবার করোনা আবহে ভোটের সময় ১ ঘণ্টা বাড়ানো হবে। যাঁদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকবে বা যারা করোনা লক্ষণের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা ওই অতিরিক্ত ১ ঘণ্টায় ভোট দেবেন। কিন্তু তাহলে তো ভোট শেষের সময় ৬টা হয় কিন্তু সাড়ে ৬টা কেন? সঞ্জয় বসু বলেন, কোভিড বিধি তো আছে, তারসঙ্গে এ রাজ্যে ভোট পড়ার হার অত্যাধিক বেশি। এই সমস্ত বিষয়গুলি ভেবেই এবার এ রাজ্যে ভোটের সময় আধ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। প্রথম দফার ভোটগ্রহণ ২৭ মার্চ। ভোট হবে পুরুলিয়া জেলার ৯টি আসন, ঝাড়গ্রাম জেলার ৪টি আসন, বাঁকুড়ার ৪টি, পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬টি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ৭টি আসনে। এদিন থেকেই মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়া শুরু হয়ে গেছে। চলবে ৯ মার্চ পর্যন্ত।
এদিকে এদিন সিইও দপ্তরে গিয়ে অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বিজিত ধরের সঙ্গে দেখা করেন সিপিআই(এম) নেতা রবীন দেব। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে। তারপর মুখ্যমন্ত্রী নবান্নেই সাংবাদিক বৈঠক করেন। রবীন দেব কমিশনে অভিযোগ করেন ভোট ঘোষণা হবার পর কীভাবে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে রাজনৈতিক বৈঠক করছেন, রাজনৈতিক সাংবাদিক বৈঠক করছেন। পুরোটাই নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী। আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন না হয় তার উপর কমিশনকে নজর রাখতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
কমিশনে রবীন দেব অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার অবসর গ্রহণের পরও সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত আছেন। তাঁরা ভোটকে প্রভাবিত করতে পারেন। এছাড়া ৩ বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে যেমন কয়েকজন অফিসার নিজের জায়গায় রয়ে গেছেন। কমিশনকে এই বিষয়গুলিতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানান দেব। তাঁর বক্তব্য, একজন জেলাশাসককে সম্প্রতি বদলি করা হয়েছে অথচ তাঁর বাসস্থান এখনো সেই জেলাতেই রয়ে গেছে। আশঙ্কা অধস্তনদের উপর প্রভাব খাটাতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেব বলে, ২০১১ সালের পর থেকে পুলিশ ও প্রশাসনের কয়েকজন কর্তাকে কমপালসারি ওয়েটিং-এ রাখা হয়েছে। এঁদের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। এছাড়া কলকাতা সহ রাজ্যের সর্বত্র প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী সহ দুই শাসক দলের নেতা, নেত্রীদের অসংখ্য হোর্ডিং, ব্যানার লাগানো রয়েছে। অবিলম্বে দ্রুততার সঙ্গে এসব সরানোর দাবি করেছেন তিনি।
এদিকে ৮০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে এবং শারীরিকভাব অক্ষম ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাবার কাজ শুরু করে দিয়েছেন ব্লক লেভেল অফিসার (বিএলও)রা। এছাড়া যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়ে কোয়ারান্টাইনে আছেন, এই তিন ধরনের ভোটারদের মধ্যে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবার প্রাথমিক স্তরে ১২ডি ফরম বিলি করার কাজ শুরু হয়ে গেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ৮০ বছরের উপরে ৩০২০জন, শারীরিক ভাবে অক্ষম ১৫৪১জন এবং কোভিড আক্রান্ত ১০জনকে ফরম দেওয়া হয়েছে। ভোটের আগের দিন তাঁদের কাছে ব্যালট পেপার নিয়ে বিএলও’রা পৌঁছে যাবেন।