নজর কাড়ছে বিহার
-
-
- Oct 29, 2020 10:07 [IST]
- Last Update: Oct 29, 2020 03:00 [IST]
বিহারে বুধবার প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হয়েছে। ভোট হবে তিন দফায়। নির্বাচনের ফল কী হবে, তা এখনও অনিশ্চিতই। কিন্তু বেশ কয়েকটি নজর টানার ঘটনা ইতিমধ্যেই ঘটেছে।
প্রথমত, এই প্রথম করোনা আবহের মধ্যেই কোনও রাজ্যে ভোট হচ্ছে। সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়েই প্রচার হয়েছে। বিধিনিষেধও মানতে হয়েছে। ভোট দিতেও হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। মহামারী পর্বে রাজনৈতিক প্রচারের এই ঘটনা অবশ্যই নজিরবিহীন।
কিন্তু তার থেকেও বড় ঘটনা নির্বাচনের প্রচারে জীবনজীবিকার প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। এনে দিয়েছেন বিরোধীরা। আরজেডি, কংগ্রেস ও বামপন্থীদের মহাজোট রুটি-রুজির প্রশ্নকেই প্রচারের মূল বিষয় করে তুলেছে। বিশেষ করে বেকারির প্রশ্নকে। দেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্য অংশ বিহারে থাকেন। তাঁদের কাজ খোয়ানো, যন্ত্রণা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসা এবং কাজ না পেয়ে ফের দূরান্তের পথেই যাত্রা ভোটে আলোচ্য হচ্ছে। শুধু হিন্দুত্ব এবং উগ্র জাতীয়তাবাদের জিগির তুলে শাসক জোট এগতে পারছে না। বিজেপি’র চেনা ছককে অনেকটাই প্রতিহত করেছেন বিহারের বিরোধীরা। যোগী আদিত্যনাথ, রাজনাথ সিং, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, বিজেপি সভাপতি হিন্দুত্বের চেনা তাস খেলেছেন। কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে তাঁদের দু’কদম পিছুও হটতে হচ্ছে। বাধ্য হচ্ছেন কর্মসংস্থান, উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে। নীতীশ কুমারকে দাঁড়াতে হচ্ছে কাঠগড়ায়। সেইসঙ্গে মোদীকেও।
বিহারে জাতবিন্যাসে ভোট করানোর খেলাও অনেকটা ভেঙে গেছে এবার। পুরো অবসান হয়েছে, একথা বলা যাবে না। কিন্তু সেই অঙ্কই প্রধান আর নয়। শ্রমজীবীর সমস্যাকে সামনে আনতে পারলে এই ভাগাভাগিও অনেকটা রোখা যায়, বিহার সম্ভবত সেই উদাহরণও হতে চলেছে।
বিহারের ভোটে অনায়াসে জিতবে বলে বিজেপি জোটের ধারণা এখন প্রশ্নের সামনে। জেতা-হারা যাই হোক, প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে দিয়েই ভোট হচ্ছে। বরং বিরোধীদের দাবি, তারা জয়ী হবেন। বিরোধী জোটের মুখ তেজস্বী যাদব দাবি করেছেন, মহাজোট দুই তৃতীয়াংশ আসন পাবে। অধিকাংশ আসনে শাসক জোটের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দিয়ে নীতীশ কুমার ‘সুশাসনের’ এক ভাবমূর্তি তৈরি করেছিলেন। মহাজোট সেই মুখোশ টেনে খুলে দিয়েছে। বিহারের গরিব মানুষ, পরিযায়ী শ্রমিক, বেকার যুবকরা নীতীশ কুমারের ওপরে ক্রুদ্ধ হয়ে আছেন। তার ফল মিলবে ভোটে।
ইতিমধ্যেই বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী জানিয়েছেন জিতলে প্রথম মন্ত্রীসভা বৈঠকেই ১০ লক্ষ সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। ভোটে জিতলে বিধানসভার প্রথম অধিবেশনেই কেন্দ্রের কৃষি আইন নাকচ করে দেবার জন্য রাজ্যে আইন পাশ করানো হবে। এক চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন বিজেপি জোটকে।
বিহারের নির্বাচন গোটা দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের রাজনৈতিক শক্তিবিন্যাস কী আকার নেবে, তার অনেকটাই নির্ভর করবে বিহারের ভোটে।