সময়ের সাথে...

নয়াদিল্লি ও ভোপাল, ২৪মার্চ— মালেগাঁও বিস্ফোরণের অন্যতম অভিযুক্ত ‘সাধ্বী’ প্রজ্ঞাকে ভোপালে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। মধ্য প্রদেশ এবং নয়াদিল্লির বিজেপি শিবির থেকে এমন ইঙ্গিত মিলেছে। শোনা যাচ্ছে, মধ্য প্রদেশের ভোপাল লোকসভা আসনে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দ্বিগ্বিজয় সিংকে মনোনয়ন দিতে পারে কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে উগ্র হিন্দুত্ববাদী হিংসায় অভিযুক্ত প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরকেই তাঁর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামাতে চায় বিজেপি। কেন্দ্রে মোদী সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে অবশ্য সঙ্ঘ পরিবারের পরিকল্পনা মতো প্রজ্ঞা সহ প্রায় সমস্ত প্রথম সারির অভিযুক্তকে মামলা থেকে খালাস করিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদিকে, রবিবার নয়াদিল্লিতে আরও ১১টি আসনের প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রের শাসকদল। এই নিয়ে ছ’দফায় মোট ২৯৭জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল তারা। এর আগেই অবশ্য গুজরাটের গান্ধীনগর আসনে প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানিকে প্রার্থী না করার ঘটনায় দলীয় মহলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। গান্ধীনগরে ১৯৯৮সাল থেকে পরপর জয়ী আদবানিকে সরিয়ে এবার দলীয় সভাপতি অমিত শাহ প্রার্থী হবেন বলে ঘোষণা করেছে বিজেপি। এব্যাপারে শোরগোল সত্ত্বেও খোদ আদবানি এখনো মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকায় ইতিমধ্যেই নানান প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। তবে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনার খবরেই রাজনৈতিক মহলে সবচেয়ে বেশি চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, মুম্বাই থেকে প্রায় ২০০কিলোমিটার দূরে মালেগাঁওয়ের ভিকু চকে একটি মসজিদের বাইরে ২০০৮সালের ২৯সেপ্টেম্বর ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৬জনের মৃত্যু হয়েছিল। জখম হয়েছিলেন একশোরও বেশি মানুষ। তদন্তে এই বিস্ফোরণের মূল চক্রী হিসাবে উঠে আসে প্রজ্ঞা-সহ আরও কয়েকজন উগ্র হিন্দুত্ববাদীর নাম। কিন্তু ২০১৪-র মে মাসে মোদী সরকার ক্ষমতাসীন হতেই প্রশাসনের কারসাজিতে শ্লথ হয়ে যায় তদন্ত। হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসে অভিযুক্ত প্রজ্ঞা-সহ সব পান্ডাই একে একে ছাড়া পেয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার প্রথম তালিকা প্রকাশের পরে এদিন পর্যন্ত প্রথম দু’দফা নির্বাচনের সব প্রার্থীর নামই জানিয়ে দিল বিজেপি। বিহারের পাটনা কেন্দ্রের সাংসদ অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহাকে শেষপর্যন্ত সরিয়েই দিয়েছে বিজেপি। গত ক’বছরে মোদী সরকারের কট্টর সমালোচক বনে যাওয়া শত্রুঘ্নের বদলে পাটনায় এবারে প্রার্থী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে। লক্ষ্ণৌয়ে দাঁড়াচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বিজেপি’র দুই জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র এবং রাজীবপ্রতাপ রুডি প্রার্থী হচ্ছেন যথাক্রমে ওডিশার পুরী এবং বিহারের সারন কেন্দ্রে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের কেন্দ্র বদলে দেওয়া হয়েছে। গতবারের জয়ী কেন্দ্র বিহারের নওয়াদা ছেড়ে এবার তিনি বেগুসরাইয়ে প্রার্থী হবেন। দলের বিদ্রোহী নেতা যশবন্ত সিনহার পুত্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা ফের দাঁড়াচ্ছেন ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ কেন্দ্রেই। হিমাচল প্রদেশের কাঙরা কেন্দ্রের সাংসদ প্রবীণ নেতা শান্তা কুমারকে সরিয়ে প্রার্থী করা হচ্ছে কিষান কাপুরকে। মহারাষ্ট্রের বারামতী কেন্দ্রে এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারের সাংসদ কন্যা সুপ্রিয়া সুলের বিরুদ্ধে মহিলা প্রার্থী কাঞ্চন কুলকে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। হিমাচল প্রদেশের হামিরপুরেই ফের মনোনয়ন পেয়েছেন সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর। তবে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ যে আর লোকসভায় প্রার্থী হবেন না, তা শনিবারই প্রথমবার দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা জানান, বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও স্বাস্থ্যের কারণে সুষমা আর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে চাইছেন না। ফলে মধ্য প্রদেশের বিদিশা কেন্দ্রটির জন্য নতুন প্রার্থী খুঁজছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতীকে এবারে প্রার্থী না করে তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি পদে বসানো হয়েছে। বিহারে ৪০টি আসনের মধ্যে ১৭টি করে ভাগাভাগি করেছে বিজেপি এবং নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ)। বাকি ৬টি আসন পাচ্ছে এলজেপি। লক্ষণীয়ভাবে এর মধ্যে ৩টিতেই টিকিট পেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাশোয়ানের আত্মীয়রা! হাজিপুর আসনে রামবিলাসের ভাই পশুপতিকুমার পারস, জামুই আসনে রামবিলাস-পুত্র সাংসদ চিরাগ পাশোয়ান ছাড়াও রয়েছেন রামচন্দ্র পাশোয়ান (সমস্তিপুর)। রামবিলাসকে সম্ভবত রাজ্যসভার টিকিট দেওয়ার রফা হয়েছে শাসকজোটে।