কর্পোরেট লুটকে কৃষকের মুক্তি বলে চালানো হচ্ছে
-
নিজস্ব প্রতিনিধি
- Dec 05, 2020 15:08 [IST]
- Last Update: Dec 05, 2020 15:04 [IST]
গণশক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই সময়ের জরুরি প্রশ্নের উত্তর দিলেন গ্রামভারত ও কৃষির বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক পি সাইনাথ।
============
গণশক্তি: প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রের সরকার দাবি করছে নতুন তিন কৃষি আইন কৃষককে ‘মুক্তি’ দিচ্ছে। তাঁরা স্বাধীনতা পাচ্ছেন। আপনার অভিমত কী?
সাইনাথ: দেখা যাচ্ছে যাঁদের মুক্তি দিয়েছেন তাঁরা অকৃতজ্ঞ, তাঁরা মনেই করছেন না তুমি মুক্তি দিয়েছ। এক হতে পারে কৃষকরা মূর্খ, তারা কৃষি বোঝে না। তোমার প্রতিভাবান বিশেষজ্ঞরা, যাঁরা কোনোদিন কৃষিকাজ করেনি, তাঁরাই ভালো বোঝে। অথবা, আসলে কৃষকরা মোদীর থেকেও ভালো বোঝেন।
কৃষকদের মুক্তির কথা বলে মূলত তারা কৃষি উৎপাদন বাজার কমিটি (এপিএমসি)-কে, মান্ডি ব্যবস্থাকে এক ভয়ঙ্কর কিছু বলে দেখাচ্ছে। সরকার বলছে, কৃষকরা মান্ডির দাস এবং সরকার তদের পছন্দের অধিকার দিচ্ছে। কৃষকরা পছন্দ করে নিয়েছে, সরকারের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে, দিল্লির দরজায় চলে এসেছে। এখন সরকারকেই তারা পছন্দ করতে বলেছে— হয় আমাদের কথা শোনো নতুবা আমাদের সঙ্গে সংঘাতে এসো।
দ্বিতীয়ত, কৃষি উৎপাদনের বিপণনের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই এপিএমসি’র বাইরে হয়ে থাকে। যেটুকু আছে তাকে ধ্বংস করছ কেন?
তৃতীয়ত, সরকার দাবি করছে আম্বানি-আদানি কৃষকদের বেশি দাম দেবে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের থেকে বেশি দাম দেবে। তাই যদি হয়, তারা যদি ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের থেকে বেশিই দেবে, তাহলে এমএসপি গ্যারান্টি করতে তোমার অসুবিধা কোথায়? ন্যূনতম মজুরি স্থির করার অর্থ তো এই নয় যে এর থেকে বেশি মজুরি কেউ দিতে পারবে না! কর্পোরেটরা যদি বেশি দামই দেবে তাহলে কম দামটাই বিধিবদ্ধ করতে তোমার অসুবিধা কোথায়? এর অর্থ তুমি এমএসপি-ও দিতে চাইছ না। এই দামও দিতে চাইছ না।
চতুর্থত, তিনটি উদাহরণ দিচ্ছি যা থেকে বোঝা যাবে এই ধারণা কতটা হাস্যকর। ২০০৬ থেকে বিহারে এপিএমসি আইন নেই। কর্পোরেট ক্ষেত্র থেকে কোনও বিনিয়োগ আসেনি, কর্পোরেট বিপণন কাঠামো গড়ে ওঠেনি। কৃষকরা বিভিন্ন রাজ্যে নিজেরাই পণ্য বিক্রি করে। কেরালায় কোনোকালেই এপিএমসি আইন ছিল না। কর্পোরেটদের সেখানে যেতে কে বারণ করেছিল? আসেনি কেননা তারা জানে বেশি দাম তারা দেবে না। কেরালায় ১৮টি কৃষিপণ্যের ন্যূনতম মূল্য স্থির হয়। আম্বানি-আদানি কেন বিপণন চেন তৈরি করেনি? তৃতীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র। ফড়নবীশ যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, ২০১৫ থেকে এই নয়া আইনের কিছু অংশ পরীক্ষামূলকভাবে তিনি রাজ্যের কিছু অংশে প্রয়োগ করেছিলেন। এপিএমসি’র ভৌগোলিক পরিধি ঠিক করে দিয়েছিলেন কয়েক হাজার বর্গমিটারের মধ্যে। এর বাইরে এপিএমসি কাজ করতে পারবে না। পাঁচ বছর পরেও কৃষিপণ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ যাচ্ছে এপিএমসি’র মাধ্যমেই, বেসরকারি ক্ষেত্রের মাধ্যমে নয়।
এই নয়া আইনের উদ্দেশ্য কর্পোরেটের হাতে কৃষিকে তুলে দেওয়া। কিন্তু ফল তা হবে না। কর্পোরেট বিরাট বিনিয়োগ করবে, মোটেই তা নয়। ফলাফল হবে নৈরাজ্য। যাঁরা ভারতীয় বুর্জোয়ার চরিত্র বোঝেন, ভারতের কর্পোরেটদের চরিত্র বোঝেন তাঁরা বুঝবেন তারা নিজেদের টাকা বিনিয়োগ করবে না, তারা চায় জনগণের টাকা। বিমানবন্দর চালানোর এক ঘণ্টারও অভিজ্ঞতা ছাড়াই যেমন আদানিরা দেশের সব বিমানবন্দরের মালিকানা চায়। কেরালায় বিধানসভায় সর্বসম্মত প্রস্তাব, সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও আদানিকে বিমানবন্দর দিয়ে দেওয়া হলো। আদানি চায় চালু সমস্ত এপিএমসি ওনার হাতে হস্তান্তর করে দেওয়া হোক। তারা চায় রাষ্ট্রের সম্পদ বিনা পয়সায় ওদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।
নয়া আইনের আরও বিপজ্জনক দিক রয়েছে। এপিএমসি আইনের ১৯ নং ধারা এবং চুক্তি চাষের আইনের ১৩ ও ১৫ নং ধারায় বলা হয়েছে কোনও নাগরিকের (শুধু কৃষকের না) আইনি নিষ্পত্তির কোনও অধিকার থাকছে না। দেওয়ানি আদালতের পরিধির বাইরে রাখা হয়েছে। চুক্তি চাষ আইনের ১৩ নং ধারায় বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার, কোনও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী, রাজ্য সরকারি কর্মী অথবা কোনও ব্যক্তি ‘ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে’ এই আইনে কোনও কাজ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি মামলা করা যাবে না। সুরক্ষাও চাওয়া যাবে না। ‘ভালো উদ্দেশ্যের’ সংজ্ঞা কী, বলা নেই। আগামীকাল শিল্পে করবে, শিক্ষায় করবে, শ্রম আইনে করবে। নাগরিকদের বিচারবিভাগের দ্বারস্থ হবার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। শুধু কৃষকদের নয়, এর ভয়ঙ্কর প্রতিক্রিয়া পড়বে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ওপরে।
এপিএমসি-কে আমার মতো লোক, বামপন্থীরা কি স্বর্গ বলে, সাংগ্রি লা বলে মনে করি? না, মোটেই তা নয়। এপিএমসি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভ্রান্তি রয়েছে, কৃষকদের অধিকার আরও বাড়ানো দরকার। সরকারি স্কুলের উদাহরণ দেখুন। আমি বলি, সরকারি স্কুল হলো শিক্ষাক্ষেত্রের এপিএমসি। সরকারি স্কুলে অনেক ঘাটতি রয়েছে, শিক্ষক নেই, অনেক স্কুলে শিক্ষকরা আসেন কিন্তু পড়ায় না, সিলেবাস খারাপ, পরিকাঠামো দুর্বল, ব্ল্যাকবোর্ড নেই। কিন্তু আমরা কি তাদের বন্ধ করতে চাই? যদি বন্ধ করে দাও তাহলে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় ছাত্র আর কোনোদিন স্কুলেই পড়বে না। তাদের পড়াশোনার একমাত্র সুযোগ হারাবে তারা। তারা তাদের একমাত্র ভদ্র পুষ্টিকর খাবারের জায়গাও হারাবে। যেখানেই স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, সেখানেই অপুষ্টি বাড়ছে।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের মান্ডি বা এপিএমসি হলো প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা জেলা হাসপাতাল। সেখানে কী অবস্থা, আমরা সকলেই জানি। কিন্তু যদি বন্ধ করে দিই, হাজার হাজার মানুষ মারা যাবেন। রেগা কি স্বর্গ? কিন্তু আমরা সকলেই চাইছি তা আরও প্রসারিত করা হোক। এপিএমসি-ও তাই।
গণশক্তি: যে আন্দোলন আমরা দেখছি, তা কি শুধু ধনী কৃষকদের আন্দোলন? আরেকটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্নও আসছে। এই আন্দোলনে কেবল পাঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষক কেন?
সাইনাথ: ধনী বলার চাইতে আমি বলব, ‘তুলনামূলকভাবে কম খারাপ অবস্থায় থাকা’ কৃষক। কৃষকের আয় কত? শেষ তথ্য পেয়েছি ২০১৩-১৪ এনএসএস পরিসংখ্যান থেকে। তারপরে মোদী সরকার সব তথ্য দেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে। ২০১৩’র জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের তথ্য, যা ২০১৪-তে প্রকাশিত হয়েছিল, গড় কৃষক পরিবারের জাতীয় গড় আয় ছিল ৬৪২৬ টাকা। এটা গড়, কেরালা-পাঞ্জাবে বেশি হবে, ছত্তিশগড় ওডিশায় অর্ধেক হবে। এই আয় সব উৎস থেকে। গড়ে ৬০ শতাংশ কৃষি থেকে আয় হচ্ছে। একই কৃষক খেতমজুরের কাজ করছে, অন্য জায়গায় কাজ করছে। সব উৎস থেকে মিলে ওই আয়। পাঁচজনের পরিবার হলে মাথাপিছু ১৩০০ টাকা। পাঞ্জাবের ক্ষেত্রে ১০-১২হাজার টাকা হতে পারে। ‘ধনী’ কৃষকের এই আওয়াজ কেন? ধনী কৃষক হচ্ছেন বিভিন্ন সরকারের কৃষিমন্ত্রীরা।
এমএসপি’র পরিধিতে পড়ে ২৩টি কৃষিপণ্য। এর বেশিটাই যায় গম ও ধানে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয়। তার অর্থ কি পশ্চিমবঙ্গে চাল উৎপাদন হয় না, বাংলার কৃষক কি ধানের আরও ভালো দাম চান না? পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ব্যবস্থাকে কৃষকরা ভালোভাবে সংগঠিত করেছিল, অধিকাংশ রাজ্যের তুলনায়। আমরা কি বলব যে সব জায়গায় বন্ধ করে শুধু পাঞ্জাবে চালু রাখো? কেরালা এবং তামিলনাডুতে সরকারি স্কুল ভালো চলে। আমরা কি তাহলে বলব স্কুলের সমস্যা শুধু ওই দুই রাজ্যে আলোচনা করো? উন্মাদের মতো যুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
২০১৮-র নভেম্বরে দিল্লিতে ২২টি রাজ্য থেকে ২ লক্ষের বেশি কৃষক এসেছিলেন। তাঁদেরও এই দাবি ছিল। ২৬-২৭ নভেম্বর কৃষক বিক্ষোভের কর্মসূচি ছিল। সারা ভারত কৃষক সংঘর্ষ সমিতি সব রাজ্য থেকে কৃষকদের দিল্লিতে আসতে বলেনি। সংক্রমণ, লকডাউন, পরিবহণের বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা দিল্লি সংলগ্ন রাজ্যগুলি থেকেই কৃষকদের আসতে বলেছিল। আসবে কী করে? মহারাষ্ট্রে যখন কৃষকদের লং মার্চ হলো কৃষকরা এসেছিলেন নাসিক থেকে, মারাঠাওয়াড়া থেকে কৃষকরা যোগ দিয়েছিলেন। তার অর্থ কি এই যে তারা শুধুমাত্র নাসিক, মারাঠাওয়াড়ার দাবি তুলেছিলেন? নাসিক থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা দরিদ্র কৃষক। এমএসপি তাদের কাছে তত গুরুত্বপূর্ণ না হলেও তাঁরা সেই দাবি তুলেছিলেন। এবছরের ২৬-২৭ নভেম্বর মহারাষ্ট্রে ৭০ হাজার কৃষক পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ২০ হাজার আলিবাগে, ৪ হাজার নাসিকে—এইভাবে তাঁরা তালুক ভিত্তিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। মহারাষ্ট্রে সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বিকেন্দ্রীকৃত করে বিক্ষোভ হয়েছে। কর্ণাটকে হয়েছে, তামিলনাডুতে হয়েছে, কেরালায় হয়েছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক-কৃষক অংশ নিয়েছেন। সেই ধর্মঘটের অন্যতম দাবিই ছিল তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার কর। তাহলে শুধু পাঞ্জাবের কৃষকদের আন্দোলন বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে কেন?
গণশক্তি: ভারতের কৃষির সঙ্কটের মর্মবস্তু কী বলে আপনি মনে করেন?
সাইনাথ: এই তিন আইনের তুলনায় ভারতীয় কৃষির সঙ্কট আরও অনেক বড়। এই তিন আইন প্রত্যাহার করতে হবে, কোনও প্রশ্ন নেই। কৃষকরা সরকারের সঙ্গে কথা বলার মধ্যে দিয়ে তাদের পদক্ষেপ করেছে, এখন সরকারকে আলোচনা চলাকালীন তিন আইন স্থগিত রাখতে হবে, পরে প্রত্যাহারও করতে হবে।
কৃষির সঙ্কটের মর্মবস্তুকে পাঁচটি শব্দে বর্ণনা করা যায়: ভারতীয় কৃষিকে কর্পোরেট অপহরণ করেছে।
কোন প্রক্রিয়ায় এই কর্পোরেট দখলদারি করা হয়েছে? পাঁচটি শব্দ: গ্রাম ভারতের লুটেরা বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে।
এর পরিণাম কী? পাঁচটি শব্দে: ভারতীয় ইতিহাসে এটিই বৃহত্তম উচ্ছেদ।
বিপুল পরিমাণ পরিযান ঘটেছে, দেড় কোটি কৃষক কৃষি ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁদের জন্য কোনও বিকল্পের ব্যবস্থা করা হয়নি। এটিই সঙ্কটের মর্মবস্তু। এ শুধু কৃষকের সঙ্কট নয়, কৃষির সঙ্কট, সামাজিক সঙ্কট, এখন মানবতার সঙ্কট। আমাদের ৩,৩০,০০০ সহ নাগরিক আত্মহত্যা করেছেন। আমরা মেনে নিয়েছি। আমাদের নৈতিকতায় বিস্ফোরণ ঘটেনি। এ হলো নৈতিক সঙ্কট, অর্থনীতির কাঠামোগত সঙ্কটের সঙ্গে জড়িত। সেই সঙ্কট হলো ক্রমবর্ধমান বৈষম্য।
গণশক্তি: আপনার কি ধারণা কর্মসংস্থানের সঙ্কটের সঙ্গে এই বিক্ষোভের সম্পর্ক রয়েছে?
সাইনাথ: অবশ্যই। কৃষকের আয় এতই কম যে সঙ্কট হলে তারা সামলাবে কী করে? ২০১১-র জনগণনা থেকে আমরা দেখছি দেড় কোটি কৃষক কৃষি ছেড়ে দিয়েছেন। এঁরা সর্বক্ষণের কৃষক ছিলেন, যাদের সেন্সাসে বলা হয় ‘মেইন কাল্টিভেটর’। এরা কোথায় গেল? পরের কলামে গেলেই দেখা যাচ্ছে খেতমজুরের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বেড়েছে। ২০১১-তে অন্ধ্র প্রদেশ একটি রাজ্যই ছিল। সেখানে ১৩ লক্ষ কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে দিল, ৩০ লক্ষ খেতমজুর বেড়ে গেল। শুধু কৃষক নয়, সংশ্লিষ্ট পেশা— তন্তুবায়ী, কুম্ভকার, কারিগর, ছুতোর— সবারই কাজ খোয়া গেছে। তারা কৃষির সঙ্কটের ফসল। বিপুল পরিমাণ পরিযায়ী শ্রমিক শহরের দিকে যেতে বাধ্য হলো। তাদের জন্য কোনও শ্রম আইনের সুরক্ষা নেই। গৃহ সহায়িকরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন, রান্নাঘরের মেঝেতে রাতে ঘুমোচ্ছেন। বেকারি মহামারীর ফলে আরও বড় সঙ্কট হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
গণশক্তি: ঠিক এখনই প্রথমে অর্ডিন্যান্স, তারপরে আইন করল কেন্দ্র?
সাইনাথ: জরুরি প্রশ্ন। এখন এই আইন আনা হলো কেন? মোদী সরকার গত ছ’বছর সংখ্যাগরিষ্ঠ। আরও চার বছর গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার থাকার কথা। তাহলে এখন আনল কেন? এখন এনেছে এই জন্য যে তারা ভেবেছিল মহামারীর সময়ে কৃষক সংগঠিত হয়ে প্রতিবাদ দেখাতে পারবে না। নীতি আয়োগ বলছে ‘মহামারী সুযোগ এনে দিয়েছে’। ভারতের অর্থনীতির ১৯৯১-র মুহূর্ত এসেছে। নয়া উদারনীতি ও বাজারের অন্যতম প্রবক্তা সাংবাদিক শেখর গুপ্ত ‘কাট দি ক্লাটার’ অনুষ্ঠানে বলছেন দারুণ সুযোগ সামনে এসে গেছে। এই ভালো সঙ্কটকে অপচয় করলে হবে না। ওই জন্যই এখন এনেছে। মহামারীর সময়ে প্রথম পাঁচ মাসে ভারতের বিলিওনেয়ারদের মোট সম্পদ এক-তৃতীয়াংশ বেড়ে গেছে। একের পর এক কর্পোরেটমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এইরকম মহামারী ওরা তো পছন্দ করবেই। সরকার আন্দাজ করেনি কৃষকরা এই পরিমাণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবেন ।