গত শুক্রবার রাতে বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্বের ম্যাচে ইকুয়েডরের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে ব্রাজিল। ব্রাজিলের ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ম্যাচ খেলালেন আন্সেলোত্তি। প্রথম ম্যাচে আন্সেলোত্তির অধীনে ব্রাজিল দলের পারফরম্যান্স নিয়ে এখনই বলার কোনো সময় আসেনি। ভিনি , রিচারলিসনরা এদিন অনেক গোলের সুযোগ মিস করেছেন। বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। সেলেকাওদের পয়েন্ট ২২। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইকুয়েডরের পয়েন্ট ২৪। বিশ্বকাপের নবনির্মিত পরিকাঠামোতে মোট ৪৮টি দল খেলবে। যার মধ্যে আয়োজককারি তিন দেশ মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্র , ক্যানাডা ও মেক্সিকো সরাসরি খেলবে গ্ৰুপ পর্যায় থেকে। কনমেবল ( দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল কনফেডারেশন ) থেকে মোট ৬টি দল যোগ্যতাঅর্জন করবে বিশ্বকাপে। ইতিমধ্যেই টেবিলে শীর্ষস্থানে থাকা গতবারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা যোগ্যতাঅর্জন করে ফেলেছে। প্রথমবার ব্রাজিল নিজেদের ঐতিহ্য ভেঙে ম্যানেজারের দায়িত্ব দিয়েছে বিদেশী এক কোচকে। আন্সেলোত্তি আসার পর তিনি দলে ফিরিয়ে এনেছেন তার পছন্দের ফুটবলার ক্যাসেমিরোকে। রিয়াল মাদ্রিদের কোচ থাকাকালীন কাসেমিরোকেই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে ব্যবহার করতেন তিনি। এছাড়াও দলে বেশ কিছু পরিবর্তন করেছিলেন তিনি। তবে গোটা ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ তার দল। মিশন ' হেক্সা ' ( ব্রাজিলের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ ট্রফি ) -র স্বপ্নপূরণের জন্যই আন্সেলোত্তিকে দায়িত্ব দিয়েছে সর্বোচ্চ বিশ্বকাপজয়ী দেশ। রিয়াল মাদ্রিদের দুই তারকা ভিনিসিয়াস ও রড্রিগোকে স্কাউটের মাধ্যমে নিয়ে এসেছিলেন তিনিই। এছাড়াও ১৭বছরের এনরিকও ছিল তারই আবিষ্কার। এসি মিলানে থাকার সময় সাওপাওলো থেকে তুলে এনেছিলেন কাকাকে। বাকিটা ইতিহাস। মিলানের জার্সিতে অন্যতম সফল এই ব্রাজিলিয়ান মিডিও। ২০০২ -এ বিশ্বকাপ জয় করা ছাড়াও মিলানের জার্সিতে ২০০৭সালে আন্সেলোত্তির কোচিংয়েই জিতেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। অর্থাৎ ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সঙ্গে আন্সেলোত্তির যোগ রয়েছে বহুদিনের। কোচ হিসেবে সর্বোচ্চ ৫বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন এই কোচ। নির্বাচনের পর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট  সমীর জাউদ ঘোষণা করেছিলেন আন্সেলোত্তির নাম ।  ১৯২৫সালে উরুগুয়ান রামোন প্লাটেরো কোচ ছিলেন ব্রাজিল দলের। তারপর প্রায় ১০০ বছর পর বিদেশী একজনকে কোচের পদ দেওয়া হয়েছে। তবে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা যেন ব্রাজিলিয়ান ধরনে খেলতেই ভুলে গেছেন। ইউরোপের সব শীর্ষ দলগুলিতে খেলছেন বর্তমান স্কোয়াডের সব খেলোয়াড়রা। ফলে ব্রাজিলিয়ান সেই টাচেরই যেন দেখা মিলছেনা তাদের খেলায় । তাই আন্সেলোত্তির দায়িত্ব শুধু ট্রফি জেতানোর মধ্যেই আটকে নেই। ব্রাজিলের খেলায় সেই সৌন্দর্য্য , স্নিগদ্ধতা ফিরিয়ে আনাও লক্ষ্য তার । তবে বিশ্বকাপের এই বিশেষ রেকর্ডটি শুনলে খুব খুশি হবেননা বিশ্বের অগণিত ' সেলেকাও ' সমর্থকরা। ১৯৩০ থেকে শুরু হওয়া বিশ্বকাপ    
প্রতিযোগিতায় এখনও পর্যন্ত কোনো বিদেশী কোচ ট্রফি না দিতে পারেননি।  অর্থাৎ যেকটি দেশ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রত্যেবারই কোচ ছিলেন সেই দেশেরই নাগরিক। এমনকি ব্রাজিল যে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সেই পাঁচবারই কোচ ছিলেন ব্রাজিলিয়ানরাই। তবে রেকর্ড তৈরী হয় ভাঙার জন্যই। তাই এই রেকর্ড ভেঙে ব্রাজিলকে ষষ্ঠবার বিশ্বসেরার আসনে বসাবার লক্ষ্যেই তৎপর আন্সেলোত্তি।