অরিজিৎ মণ্ডল
প্যালেস্তাইন বা ইরানে ইজরায়েলের হামলার পিছনে ধর্ম কারণ নয়। আসল কারণ মুনাফা, কারণ সাম্রাজ্যবাদের নয়া উপনিবেশ নীতি। আর মোদী সরকার সেই নীতিরই পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। অথচ দেশের মানুষ জ্বালানির দাম বাড়ার বিপদের সামনে। ফলে জনতাকে নিয়ে যুদ্ধ উন্মাদনার বিরোধিতা চালাবে বামপন্থীরা। দাঁড়াবে প্যালেস্তাইনের জনতার পক্ষে।
মঙ্গলবার প্যালেস্তাইনের সংহতি মিছিলের শেষে সভায় একথা বলেছেন বামপন্থী নেতৃবৃন্দ। ধর্মতলায় লেনিন মূর্তি থেকে শুরু হয় মিছিল। হো চি মিন মূর্তি পর্যন্ত যাওয়ার কথা থাকলেও মাঝে আমেরিকান উপদূতাবাসের আগে পার্ক স্ট্রিট মোড়ে আটকে দেওয়া হয় মিছিল। তার তীব্র সমালোচনা করেন বামফ্রন্টের সভাপতি বিমান থেকে নেতৃবৃন্দ।
বিমান বসুর পাশাপাশি এদিন কর্মসূচিতে ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিআই’র রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, আরএসপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জি, সিপিআই (এম-এল)’র নেতা কার্তিক পাল সহ বামপন্থী নেতৃবৃন্দ। এদিন সারা দেশেই বামপন্থীরা এই কর্মসূচি করেছে।
বিমান বসু বলেন, হো চি মিনের মূর্তির সামনে মিছিল শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের আটকে দিয়েছে। আজ আইন অমান্য কর্মসূচি নয়। আইন অমান্য হলে ব্যারিকেড ভেঙে বেরিয়ে যেতাম। আমরা এখানেই সভা করব।
বসু বলেন, যুদ্ধ যারা করে কেন করে? অতীতে উপনিবেশ করার ছিল। এখন উপনিবেশ নেই। এখন নয়া উপনিবেশবাদ, অর্থাৎ বাজার দখল করা। পুঁজিবাদী রাষ্ট্র কাঠামো নিজেদের অর্থনীতির স্বার্থে অন্যের বাজার দখল করতে চায়। আমেরিকা সে কারণে মদত দিচ্ছে ইজরায়েলকে।
বসু বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে শান্তি চাই। এই যুদ্ধে আরও বাড়বে জিনিসপত্রের দাম। তাই কেবল এই মিছিল রলেই হবে না। পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় কর্মসূচি করতে হবে। এই ঘৃণ্য যুদ্ধবাজ নীতির বিরোধিতা করতে হবে।
দেশের সব শহরে প্রতিবাদ হচ্ছে। সেলিম বলেন, পেট্রোলিয়াম সমৃদ্ধ আরব দুনিয়ায় দালাল তৈরি করে গিয়েছে আমেরিকা। ইজরায়েল আমেরিকার দালালি করছে। সত্তর বছর ধরে আমেরিকা চেয়েছে এই ভূখণ্ডে কোনও গণতন্ত্র থাকবে না, মানবাধিকার থাকবে না। কেবল দালাল থাকবে। এই রাজনীতি বুঝতে হবে। ধর্ম না, আসল কথা সাম্রাজ্যবাদ।
সেলিম রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকারও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, তৃণমূল পারবে ইজরায়েলের বিরোধিতা করতে? পারবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করতে? আজকে পুলিশকে দেখলেন কিভাবে বাধা দিল। আমাদের কর্মসূচি ছিল ধর্মতলায় লেনিন মূর্তি থেকে হো চি মিন মূর্তি। মাঝে আমেরিকার উপদূতাবাস রয়েছে। সেজন্য আটকে দেওয়া হলো। অথচ এই পুলিশকে খিদিরপুরে আগুন লাগলে পাওয়া যায় না। মুর্শিদাবাদে দাঙ্গায় পাওয়া যায় না। কিন্তু মার্কিন প্রভুদের বাঁচানোর জন্য নবান্নের নির্দেশে নেমে পড়েছে।
Comments :0