নয়া উদারবাদী অর্থনীতি ভারতে প্রবেশের পর থেকে শুধু অর্থনৈতিক চেহারার বদল ঘটে নি তার সাথে প্রজন্ম গুলোর মননে পরিবর্তন হয়েছে। এই পাল্টে যাওয়া মননকে ছুঁতে হবে না হলে প্রগতিশীল যুব সংগঠন হিসেবে ডিওয়াইএফআইয়ের প্রবহমানতা থাকবে না।
বহরমপুরে সংগঠনের ২০তম রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করে এ কথা বলেন ডিওয়াইএফআই প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক আভাস রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, পৃথিবীর সবথেকে বেশি মুনাফা অর্জনকারী কর্পোরেট সংস্থাগুলি কোনো কারখানা উৎপাদনের সাথে যুক্ত নয়।
কমরেড মানব মুখার্জি ও তরুণ মজুমদার মঞ্চ, কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও মৃণাল সেন নগরে ডিওয়াইএফআই ২০তম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরের রবীন্দ্র সদনে। রবিবার চলছে প্রতিনিধিদের আলোচনা। সম্মেলন চলবে সোমবার পর্যন্ত।
আভাস রায়চৌধুরী বলেন, উগ্র জাতীয়তাবাদ মানুষের মধ্যে ইনজেক্ট করা হচ্ছে। এবং এই উগ্র জাতীয়তাবাদ দিয়েই বিভাজন করা হচ্ছে। কোন বিকল্প স্বর উঠে আসলেই তাকে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশদ্রোহী বলে। আসলে আরএসএস আমাদের মগজটা দখল নিতে চায়। তার বিরুদ্ধেও যুবদের লড়াই করতে হবে। লড়াই করতে হবে দুর্নীতি দুষ্কৃতিরা ও বিভাজনের বিরুদ্ধে। এখানে লড়াইয়ের হাতিয়ার একমাত্র মতাদর্শ। এ লড়াই সহজ নয়, কিন্তু অসম্ভব নয়। আমরা দেখেছি আমাদের রাজ্যে ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রামীণ খেটে খাওয়া মানুষ লড়াই করেছেন লুমপেন রাজনীতির বিরুদ্ধে। এগুলিই হচ্ছে সম্ভাবনা।
মানুষ চাইছেন বামপন্থীরা মজবুত হোক। তাই সংগঠনকে বাস্তবমুখী লড়াই ও মানুষের মনকে বুঝে সেই মতো কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় স্তরে ছোট ছোট আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। রায়চৌধুরী আরো বলেন, ডিওয়াইএফআই কোন শ্রেণি সংগঠন নয় কিন্তু প্রগতিশীল বাম যুব সংগঠন হওয়ার দরুন তাদের শ্রেণি অভিমুখ রয়েছে। শ্রেণী রাজনীতির ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে সংগঠকদের। শ্রেণি সংগঠনগুলির সাথে যৌথ আন্দোলন সংগ্রামে যেতে হবে। চেনা বৃত্তের বাইরের মানুষের কাছে পৌঁছানো গেছে এই সময়কালে। বৃত্ত আরো বৃদ্ধি করতে হবে এবং যারা কাছে পৌঁছানো গেল তাদেরকে সংগঠিত করার রুপরেখা তৈরি করতে হবে।
সম্মেলনে রাজনৈতিক সাংগঠনিক খসড়া প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী রাজ্য কমিটির সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। তিনি বলেন, প্রবল মেরুকরণ রয়েছে। তার মধ্যেও লড়াইয়ের পরিস্থিতি রয়েছে। এবং অনেক ক্ষেত্রেই লড়াই থেকে জয় আনা যাচ্ছে। ভুল এজেন্ডার বিরুদ্ধে মূল এজেন্ডাতেই লড়াই করতে হবে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক অভিমুখ ঠিক করে। আমরা দেখেছি গ্রামীণ অর্থনীতিতে তীব্র সংকটের ফলে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে। শুধু কম লেখাপড়া জানা যুবরা নন, অনেক লেখাপড়া জানা শিক্ষিত যুবরাও অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি আঠারো বছরের পর থেকেই ছাত্র অবস্থা থেকেই বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে যেতে হয়। তাই তাদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ভিন্ন ধরনের পৌঁছাতে হবে। কোথাও গিগ ওয়ার্কার কেউ পরিযায়ী শ্রমিক হতে বাধ্য হয়ে যাচ্ছে। স্থায়ী কাজ নেই।
সংগঠনের মূল বুনিয়াদি ভিত্তি হল মতাদর্শ। মতাদর্শগত চর্চায় অনুশীলন বাড়াতে হবে। নিবিড় ভাবে মতাদর্শগত চর্চা চালিয়ে যেতে হবে আমাদেরকে। আগামী নির্বাচনের আগে গোটা রাজ্যের ৪০ হাজার বুথে ডিওয়াইএফআই’র অন্তত পাঁচজন করে কর্মী তৈরি করতে। যারা যুব অংশের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারে নতুন অংশকে ছুঁতে পারে। আমাদের কর্মীদের প্রত্যেককে সচেতন সতর্ক ও সংগঠক হতে হবে। যে সংগঠক অন্যদের সংগঠিত করতে পারবে তবেই বিপ্লবী যুব সংগঠন তৈরি হবে।
DYFI STATE CONFERENCE
যুব মন বুঝে ফেরাও ভুল এজেন্ডা থেকে মূল এজেন্ডায়, রাজ্য সম্মেলনে বার্তা

×
Comments :0