SFI Kolkata Convention

বিভাজন রুখতে, শিক্ষায় গণতন্ত্রের জন্যও লড়াইয়ের অঙ্গীকার এসএফআই’র কনভেনশনে

কলকাতা

বৃহস্পতিবার যোধপুর পার্কে এসএফআই কলকাতা জেলা কনভেনশনে বলছেন দেবাঞ্জন দে। মঞ্চে নেতৃবৃন্দ।

ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যুদ্ধ উন্মাদনা তৈরি করছে বিজেপি-আরএসএস। বিভাজনের বীজ বুনছে। তাদের মনের কাছে পৌঁছাতে হবে।
বৃহস্পতিবার এসএফআই কলকাতা জেলা কনভেনশনে এই মর্মে আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে। রাজ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি, ভেঙে পড়া স্কুল শিক্ষা পরিকাঠামোর হাল ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনকে জোরদার করার আহ্বানও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার এসএফআই কলকাতা জেলার কনভেশন হয়েছে প্যালেস্তাইন সংহতি নগর (যোধপুর পার্ক) কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি ও কমরেড নেপালদেব ভট্টাচার্য মঞ্চ (শহীদ সূর্য সেন ভবন)-এ। 
এসএফআই বলেছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীতিতে ছাত্রছাত্রীরা স্কুল-কলেজ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের ক্যাম্পাসে ফেরাতে প্রয়োজনীয় সরকারি নীতির জন্য আন্দোলন জোরালো করবে সংগঠন।
এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, "নতুন অংশের ছাত্রছাত্রীদের মনকে ছুঁতে হবে। তার জন্য আন্দোলনের রূপরেখাও সময়োপযোগী করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হবে, সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রদের মধ্যেও যুদ্ধ উন্মাদনা তৈরি করছে বিজেপি-আরএসএস। সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করছে ছাত্রদের কাঁচা মনে। সেই মনে আমাদের পৌঁছে যেতে হবে।’’ 
ভেঙে পড়া স্কুল শিক্ষার পরিকাঠামো উন্নত করা, অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনকে জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে কনভেনশনে। 
দাবি উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার রক্ষা করতে হবে, আর্থিক বরাদ্দ ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। কেন্দ্রীয় বাজেটের ১০ শতাংশ, জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ করতে হবে। পাঠক্রমকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত করতে হবে। 
এসএফআই বলেছে, শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের দুর্নীতির জেরে স্বৈরাচারের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যে কারণে রাজ্যের দরিদ্র প্রান্তিক পরিবারের ছেলেমেয়েরা ক্রমশ স্কুলছুট হচ্ছে, শিক্ষাবিমুখ হচ্ছে। 
উদ্বোধনী বক্তৃতায় এসএফআই'র মুখপত্র ‘ছাত্র সংগ্রাম’ পত্রিকার সম্পাদক শৌভিক দাসবক্সি বলেন, "সময়ের সঙ্গে এবং প্রয়োজন বুঝে নতুন চিন্তা হাজির করতে হবে। একদিকে তৃণমূল, আরেকদিকে বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে।  সংগঠিত বামপন্থার বিরোধী বিভিন্ন শক্তির সঙ্গেও লড়াই করতে হয় স্কুল কলেজ কিংবা পাড়ায়।’’ 
কনভেনশনে প্রতিনিধি ও দর্শক মিলিয়ে  প্রায় ১৮০ জন ছাত্রছাত্রী অংশ নেন। এসএফআই কলকাতা জেলা সভাপতি বর্ণনা মুখার্জি বলেন, "ক্যাম্পাসের মধ্যে আমাদের পৌঁছাতে হবে। শুধু কলেজ ক্যাম্পাস নয় স্কুলেও যেতেই হবে। যেমন ক্যাম্পাসে ইউনিয়ন ইলেকশন নেই তেমনই স্কুলগুলিতে গভর্নিং বডির নির্বাচন হয় না। শিক্ষাক্ষেত্রে স্বৈরাচার চলছে। শিক্ষাক্ষেত্র থেকে দূরে চলে যাচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা।’’ 
এই কনভেনশনে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য এক বিশেষ কর্মশালা করা হয়। এই কর্মশালায় বলেন এসএফআইয়ের কলকাতা জেলার প্রাক্তন সভাপতি ও সম্পাদক অর্জুন রায় ও সমন্বয় রাহা। তাঁরা বলেছেন, আজকে যারা ছাত্র আন্দোলন করছে তাদের কারোরই ছাত্র সংসদ নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা নেই। তার জন্যই এই বিশেষ কর্মশালা। 
৯ জুলাই সাধারণ ধর্মঘট, আসন্ন সর্বভারতীয় সম্মেলন, কুসংস্কার বিরোধী প্রস্তাব, লিঙ্গ সাম্যের প্রস্তাব, প্যালেস্তাইন সংহতি, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী প্রস্তাব, পরিবেশ রক্ষার প্রস্তাব, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment