CPI(M)

ধর্মঘট এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে প্রচার চালাবে সিপিআই(এম) : বেবি

জাতীয়

জুন মাস জুড়ে গোটা দেশে ধর্মঘট এবং সাম্প্রদায়িক উষ্কানির বিরুদ্ধে প্রচার চালাবে সিপিআই(এম)। শুক্রবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন এমএ বেবি। সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘৯ জুলাই সর্বভারতীয় ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। নতুন শ্রম কোড ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার কেড়ে নেবে। শ্রমিকের মজুরির অধিকার কেড়ে নেবে। কৃষকরাও এই ধর্মঘটে শামিল হবেন। এর পাশাপাশি প্যালেস্তাইনের প্রতি সংহতি জানিয়ে দেশ জুড়ে প্রচার চলবে।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনীতির সমালোচনা করে সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘ভারতকে বলা হচ্ছে চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতি, পরিসংখ্যান দিয়ে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু দেশের আসল পরিস্থিতি কী? সরকারি তথ্য বলছে ৮০ কোটি মানুষকে ভর্তুকিতে খাদ্য সামগ্রী দিতে হয়। দেশে আর্থিক বৈষম্য তীব্র। কৃষি ব্যবস্থা আজ সঙ্কটের মুখে। সরকার এই নিয়ে কোন কথা বলছে না।’’
তীব্র সমালোচনার পর কেন্দ্রীয় সরকার জনগণনা ঘোষণা করেছে। এই প্রসঙ্গে বেবি বলেন, ‘‘অবশেষে জনগণনার সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২৭ সালে তা হবে। এর ফলে কিছু কিছু রাজ্যে আসন পুনর্বিন্যাস হতে পারে। কিছু কিছু রাজ্যে আসন কমতে পারে। আমরা দাবি করছি আসন পুনর্বিন্যাসের আগে সর্বদলীয় বৈঠক প্রয়োজন। দক্ষিণ ভারত এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যে সংসদে প্রতিনিধির সংখ্যা কমতে পারে। জনগণনা এবং জাত ভিত্তিক জনগণনার আগে সর্বদলীয় বৈঠক প্রয়োজন।’’
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট বিলে সম্মতি দেওয়ার জন্য নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়েছে রাজ্যপালদের। তা নিয়ে রাষ্ট্রপতি উপরাষ্ট্র‌পতিকে দিয়ে প্রচারে নেমেছে বিজেপি। সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘রাজ্য বিধানসভায় কোন বিল পাশ হলে রাজ্যপালের তাতে সই করা উচিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে রাজ্যপাল সেই বিল আটকে রাখছেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে বলেছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্মতি দেওয়ার, কেন্দ্রীয় সরকার আদালতের এই রায় মানতে রাজি নয়। বিরোধী পরিচালিত সরকারগুলিকে বিপাকে ফেলতে রাজ্যপালদের দিয়ে বিল আটকে রাখছে বিজেপি।’’ 
তিনি বলেন, ‘‘জরুরি অবস্থার ৫০ বছর নিয়ে সিপিআই(এম) প্রচার করবে দেশ জুড়ে। সিপিআই(এম) তুলে ধরবে সেই সময় কি ভাবে সিপিআই(এম) তার মোকাবিলা করেছিল। গণতন্ত্রে জন্য সেই সময় সিপিআই(এম) লড়াই করেছিল, এখনও তাই করছে। সেই সময়ের আরএসএসের কি ভূমিকা ছিল তাও তুলে ধরা হবে আমাদের প্রচারে। আসল কথা যারা এখন জরুরি অবস্থার বিরোধিতা করছে তারা এখন দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি করেছে।’’ 
এমএ বেবি বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পলিটব্যুরো সদস্যদের মধ্যে সাংগঠিক দায়িত্ব ভাগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক থেকে। কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীতে আছেন এমএ বেবি, বিভি রাঘভুলু, মুর্লিধরণ, রাজেন্দ্র শর্মা, কে হেমলতা, বিক্রম সিং এবং কেএন উমেশ।
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘পার্টি কংগ্রেসে আলোচনা হয়েছে কি ভাবে দেশে বামপন্থীদের স্বাধীন শক্তিবৃদ্ধি করা সম্ভব। বিভিন্ন রাজ্য সম্মেলনেও আলোচনা হয়েছে। সব রাজ্যের নিজস্ব পরিকল্পনা আছে। আমার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ঠিক করেছিল কী ভাবে রাজ্য গুলোয় পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করা হবে। এক একজন পলিটব্যুরো সদস্য দুটি তিনটি করে রাজ্যের দায়িত্বে রয়েছেন, দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।’’
পশ্চিমবঙ্গ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘বাংলা থেকে তিনজন পলিটব্যুরো সদস্য আছেন। বর্ষীয়ান অনেক কমরেড আছেন, যাঁরা বয়েসের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেই। বিমান বসু রয়েছেন, সেই রাজ্যে তিনি বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান। পার্টি সেন্টার তাদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করবে।’’ 
এদিন প্রশ্ন করা হয় কেরালায় কেন জাতভিত্তিক জনগণনা শুরু হয়নি? উত্তরে বেবি বলেন, ‘‘কেরালায় নাম্ব্রুদিপাদের সময় দেশে প্রথম কোন রাজ্য হিসাবে কেরালায় জাত ভিত্তিক জন গণনা হয়। সংরক্ষণ আইন চালু হয়। পরবর্তী সময় ফের হবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment