ssc scam

দুর্নীতিতে দোষীদের শাস্তি হবেই, জানিয়ে এলেন পার্টি নেতৃবৃন্দ

কলকাতা

 বিচারপতির বদলে দুর্নীতিগ্রস্তদের উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। চুরি, লুট, দুর্নীতিতে যুক্তদের শাস্তি হবেই। বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রেখে আপনাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এই লড়াইতে বামপন্থীরা আপনাদের পাশে ধারাবাহিকভাবে থাকবেন। চাকরিচোরদের বিরুদ্ধে, চাকরিপ্রার্থীদের হকের দাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে রাজ্যজুড়ে মানুষের সই সংগ্রহেও নামতে চলেছে বামপন্থীরা। শনিবার ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরা ও গান্ধী মূর্তির সামনে ন্যায্য প্রাপ্য চাকরির দাবিতে অবস্থানরত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করে একথা বলেছেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। এদিন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাশ ও পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য ইন্দ্রজিৎ ঘোষ চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান মঞ্চে গিয়ে দেখা করে এই আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার একটি মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে অন্য বিচারপতির এজলাসে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে  সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের ভুল ব্যাখ্যা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে তৎপর হয়েছে তৃণমূলের অনেকেই। এমনও প্রচার চলছে যে গোটা  বিচার প্রক্রিয়া থেকেই  অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তব হলো অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলাই সরানো হয়েছে। এনিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের এতদিনের লড়াই-আন্দোলনকে দুর্বল করার যে অপচেষ্টায় নেমেছে তৃণমূল ও তার দোসররা, সেই অপচেষ্টায় যেন চাকরিপ্রার্থীরা বিভ্রান্ত না হন, এদিন সেই আহ্বান নিয়েই মাতঙ্গিনী হাজরা ও গান্ধী মূর্তির সামনে অবস্থানরত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন পলাশ দাশ ও ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। 
পলাশ দাশ চাকরিপ্রার্থীদের এদিন আশ্বস্ত করে বলেছেন, এনিয়ে বিভ্রান্ত হওয়া, মুষড়ে পড়ার কিছু নেই। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে যা অর্ডার, কপি ছিল সেগুলো কি বাতিল হয়েছে? হয়নি। এক ঘর থেকে আরেক ঘরে মামালা সরেছে মাত্র। মামলার নথিপত্র যা যা আছে, তার ওপরই তো বিচার চলবে। বিচারে দোষীদের শাস্তি যেমন হবে, একই সাথে আপনাদের হকের চাকরির যে লড়াই সে লড়াইতেও চাকরিপ্রার্থীদের জয় হবে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন পলাশ দাশ। তিনি চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে যেমন সম্মান জানাতে হবে, পাশাপাশি এর ভিতরে তৃণমূল ও বিজেপি’র গোপন বোঝাপড়ার বিষয় থাকলে তাও প্রকাশ্যে আসবেই। সত্যি কখনও চাপা থাকে না। সত্যর কাছে মিথ্যার পরাজয় হবেই। 
উল্লেখ্য, পরীক্ষায় সফল হয়ে, এমনকি ইন্টারভিউতেও সফল হয়ে যোগ্য প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি, এসএসসি, গ্রপসি ও গ্রুপ ডি চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা মাসের পর মাস খোলা আকাশের নিচে হকের পাওনার দাবি জানিয়ে বসে ‌আছেন। তাঁদের হকের চাকরি তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরা বিক্রি করে টাকা কামিয়েছে। এই অভিযোগ তুলে তাঁদের আন্দোলন চলছে। অনেকের চাকরির বয়সও এই সময়কালে পেরিয়ে গেছে। জীবিকার প্রশ্নে চরমভাবে প্রতারিত চাকরিপ্রার্থীরাও নাছোড় বান্দা জেদ নিয়ে টানা লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের হকের দাবির এই লড়াই-আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ধারাবাহিকভাবে তাদের পাশে থাকছেন বামপন্থী নেতা, কর্মীরা। বামপন্থীদের এই ধারাবহিক পাশে থাকার ঘটনায় লড়াই আন্দোলনে বাড়তি বল ভরসাও পাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন বঞ্চিত যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। 
এদিন চাকরিপ্রার্থীদের এই জেদি লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে পলাশ দাশ বলেছেন, ‌আজ দিকে দিকে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যেভাবে শোরগোল শুরু হয়েছে এর নেপথ্যে রয়েছে আপনাদের এই জেদি লড়াই। সেই লড়াইয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে মামালার শুনানি চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বর্তমানে যাঁর কাছেই এই মামলার দায়িত্ব যাক না কেন, তাতে আশঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তিনিও নিশ্চয় আইন অনুযায়ী সবটা করবেন। 
চাকরিচোরদের বিরুদ্ধে, চাকরিপ্রার্থীদের হকের দাবি নিয়ে রাজ্যজুড়ে বামপন্থীরা আরও বড় আন্দোলনে নামতে চলেছেন বলেও এদিন চাকরিপ্রার্থীদের জানিয়েছেন পলাশ দাশ। চাকরিপ্রার্থীদের দাবির সমর্থনে জনমত গঠনের লক্ষ্যে রাজ্যজুড়ে কয়েক কোটি মানুষের সই সংগ্রহ অভিযানেও নামতে চলেছেন বামপন্থীরা। এই আন্দোলনে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষজনকে শামিল হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এদিন বিচারপতি বদলের নির্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে চাকরিপ্রার্থীদের। তাঁরা অভিজিৎ গাঙ্গুলির ছবি হাতে নিয়ে স্লোগান তুলেছেন, আমরা এই বিচার প্রক্রিয়ায় আপনাকেই চাই।

Comments :0

Login to leave a comment