রাজ্যে কাজ নেই। মুর্শিদাবাদ থেকে বেঙ্গালুরু কাজে গিয়েছিলেন গ্রামের যুবকরা। গ্রামে ফেরেছে মরদেহ। সব হারিয়ে কাজই চাইলেন পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা। একসঙ্গেই বেঙ্গালুরুতে কাজ করছিলেন মুর্শিদাবাদের বহরমপুর ব্লকের নগরাজল গ্রামের মিনারুল সেখ (৩৫), জিয়াবুর সেখ (৩৫), তাজিবুল সেখ (৩০), নুর জামাল সেখ (২২), হাসান মল্লিক (৪২),সফিজুল সেখ (৩৫)। তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন হরিহরপাড়ার খিদিরপুরের জাহেদ আলি (৩৫)। বহুতল তৈরীতে কাজ করছিলেন নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে। বেঙ্গালুরুর বিডাদির কাছে এলিগেন্স লেআউটে একটি ঘরে থাকছিলেন সকলেই। সেই ঘরেই সোমবার গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় পুড়ে যান সকলেই। বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছিল।
মঙ্গলবার সকালেই বহরমপুরের নগরাজলে ৬ পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি যান ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইগ্রান্ট ওয়ার্কাস ইউনিয়ন(সিআইটিইউ) এবং সিপিআই(এম) নেতারা। ছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইগ্রান্ট ওয়ার্কাস ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক আসাদুল্লহ গায়েন, রাজ্য সভাপতি এসএম সাদি, সিআইটিইউ নেতা মহম্মদ নিজামুদ্দিন,জেলা সভাপতি রফিকুল ইসলাম। ছিলেন সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা।
ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইগ্রান্ট ওয়ার্কাস ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক আসাদুল্লহ গায়েন জানিয়েছেন, "দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই সিআইটিইউ রাজ্য নেতৃত্ব বেঙ্গালুরুতে যোগাযোগ করেন। সেখানকার সিআইটিইউ, পরিযায়ী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা এই ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। বেঙ্গালুরুতে শ্রমিক পরিবারের পাশে থেকেছেন। কোম্পানি ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিতে অনড় সিআইটিইউ। এই ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পরিবারগুলিকে আইনি সাহায্য দেওয়া হবে। বেঙ্গালুরু যাবেন সিআইটিইউ নেতারা।"
এদিন গ্রামে কাজের অভাব নিয়েও সরব হয়েছেন নেতারা। সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেছেন, "রাজ্যে কাজের অভাব বলেই অন্য রাজ্যে যেতে হচ্ছে শ্রমিকদের। ঠিকাদারদের কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই। যে কোম্পানির অধীনে শ্রমিকরা কাজ করছেন সেই কোম্পানি শ্রমিকদের কিছু হয়ে গেলে দায়িত্ব নিচ্ছে না। রাজ্য আর কেন্দ্র সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ভাবতে নারাজ। রাস্তায় থেকেই এই ইস্যুতে আন্দোলন হবে।" সিআইটিইউ এবং সিপিআই(এম) নেতাদের কাছে নিজেদের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা।
Comments :0