মীর আফরোজ জামান: ঢাকা
রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং নির্বাচনের প্রার্থীদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এবং গানম্যান নিয়োগের সুযোগ দিতে নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর সোমবার নীতিমালার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বলা হয়েছে দুই ধরনের ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এবং গানম্যান নিয়োগের আবেদন করতে পারবেন।
এক. সরকার স্বীকৃত বা অনুমোদিত ‘রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ দুই. সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল এবং গৃহীত হয়ে থাকলে। শর্তে বলা হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে ‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের যাচাইকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকি’ থাকতে হবে। শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা এবং অস্ত্র সংরক্ষণের নিরাপদ ব্যবস্থা থাকতে হবে। সধারণ সময়ে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার যে নীতি আছে, তার শর্তগুলো এই বিশেষ ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
তবে পিস্তল, রিভলবার, রাইফেলের লাইসেন্স পেতে কমপক্ষে ৫ লক্ষ টাকার আয়কর দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতার রয়েছে, এই বিশেষ ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না।
এই লাইসেন্সের আওতায় কেবল আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে সীমিত ক্যালিবারের অস্ত্র রাখা যাবে। একাধিক অস্ত্রের লাইসেন্স অনুমোদিত হবে না। স্বয়ংক্রিয় বা সামরিক অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া যাবে না।
এই নীতির আওতায় অনুমোদিত লাইসেন্সের মেয়াদ থাকবে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর ১৫ দিন। এরপর এই ধরনের লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে।
তবে অন্যান্য শর্ত পূরণ হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই সাময়িক লাইসেন্সকে সাধারণ লাইসেন্সে রূপান্তর করতে পারবে।
লাইসেন্সের মেয়াদ পেরিয়ে গেলে বা লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পরও কোনো লাইসেন্সধারী এর বিপরীতে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র রাখলে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বলা হয়েছে গানম্যান রাখার অনুমতি পেতে হলেও কিছু শর্ত মানতে হবে।
কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা নির্বাচনের কোনো প্রার্থী লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য হলে এবং তিনি আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে অসমর্থ হলে বা অনিচ্ছুক হলে বৈধ লাইসেন্সসহ আগ্নেয়াস্ত্র আছে, তা পরিচালনায় সক্ষম এবং কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর রিটেইনার হতে ইচ্ছুক এমন কোনো ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ রিটেইনার নিয়োগ করতে পারবেন। সেজন্য লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
রিটেইনার বা গানম্যানকে ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। অপরাধমুক্ত থাকার রেকর্ড ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স থাকতে হবে। সরকারি হাসপাতাল থেকে পাওয়া ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ থাকতে হবে তার । এক্ষেত্রে সশস্ত্রবাহিনী বা বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন।
একজন রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা নির্বাচনের প্রার্থী সর্বোচ্চ একজন রিটেইনার নিয়োগ করতে পারবেন। লাইসেন্সের মেয়াদ শেষে রিটেইনারের মেয়াদও সমাপ্ত হবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে শঙৈ ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
নির্বাচন সামনে রেখে শান্তিপূর্ণ সমাবেশও ‘সহিংসতায় রূপ নিতে পারে’ এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করেছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
এদিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে সারা বাংলাদেশের জন্য নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সংসদীয় নির্বাচন এবং গণভোটের ঘোষণা করছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন সামনে রেখে ঘনঘন এবং তীব্র রাজনৈতিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশও বিরোধপূর্ণ হতে এবং সহিংসতায় রূপ নিতে পারে এমনটাই আশঙ্কা করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে নাগরিকদেরকে পরিপার্শ্ব নিয়ে সতর্কতা, স্থানীয় গণমাধ্যমে নজর দেওয়া এবং ভিড় ও বিক্ষোভের এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস।
Comments :0