সেঞ্চুরিয়ানের মাটিতে ভারতের স্বপ্নভঙ্গ। বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৯৮ রানে হেরে যান ঝুলন গোস্বামী, মিতালি রাজরা। স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় ভেঙে পড়েছিলেন রুমেলি ধররা। ২০১৭, ২৩ জুলাই। লর্ডসে তীরে এসে তরী ডোবে ভারতের। মাত্র ন’রানে হেরে বিশ্বকাপের স্বাদ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন মিতালি, হরমনপ্রীতরা। পরপর দু’বার খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছিল ভারতীয় দলকে।
আট বছর পর ফের ফাইনাল ভারত। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। সেমিফাইনালে মহাশক্তিধর অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে আসমুদ্রহিমাচলের প্রত্যাশার বাড়িয়ে দিয়েছেন জেমাইমা রড্রিগেজ, রিচা ঘোষ, স্মৃতি মান্ধানারা। ভারতীয় শিবিরে স্লোগান, ‘এবার নয়তো নেভার।’ মহারণের ২৪ ঘণ্টা আগে ফোনে ধরা হয়েছিল ২০০৫ ফাইনালে খেলা ভারতীয় পেসার রুমেলি ধরকে। শ্যামনগরের মেয়ে রুমেলি, ভারতের জার্সিতে তিন ফরম্যাটে দাপিয়ে খেলেছেন। দু’টি বিশ্বকাপ খেলে তাঁর ঝুলিতে ১৩ উইকেট। ১৩৪ রান। তিনি বিশ্বাস করেন, এবার বিশ্বকাপ ভারতের হাতেই উঠবে।
গণশক্তির প্রতিবেদককে রুমেলি বললেন, ‘আসলে আশা একটা থাকেই আমাদের। যেভাবে হারের হ্যাটট্রিকের পর দলটা প্রত্যাবর্তন করেছে, এই কামব্যাকটাই আমাদের প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তার উপর শেষ ম্যাচে যে ভাবে খেলেছে, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে, এটা খুবই ইতিবাচক। এই কারণেই আমি আশাবাদী।’
রিচারা দেশকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারলে মহিলাদের ক্রিকেট বিপ্লব আসবে? বর্তমানে বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলাদের হেড কোচ রুমেলির কথায়, ‘অনেক আগে থেকেই মহিলা ক্রিকেটে আমূল পরিবর্তন এসেছে, আমার মনে হয়। বিশ্বকাপ যদি জিততে পারে, রাতারাতি অনেক কিছু বদলে যাবে। আরও পরিবর্তন আসবে আমি নিশ্চিত। কিন্তু আজ যদি গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ক্রিকেটারদের চেনে সবাই। শুধু কলকাতা নয়, ছোট ছোট জেলা থেকে মহিলা ক্রিকেটাররা উঠে আসছে। এই বিপ্লবটা এসেছে। বিশ্বকাপ জয়ের পর আরও আসবে।’
২০০৫ সালে আপনি ছিলেন ভারতীয় দলের সদস্য। বেলিন্ডা ক্লার্কের প্রবল পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যেতে হয়েছিল আপনাদের। এবার হরমনপ্রীত কাউরের নেতৃত্বে ভারত জিতলে, সেই জয় কী আপনারদেরও? ‘এই জয় সবার। এটা পুরো মহিলা ক্রিকেটের জয়। এটা শুধু মহিলা ক্রিকেটারদেরই নয়, একজন মহিলা হিসেবে আমাদের সবার জয়।’
হ্যারি, স্মৃতিদের উদ্দেশ্য কী পরামর্শ থাকবে আপনার? রুমেলির সংযোজন, ‘ওরা খুব ভালো খেলছে। ইতিবাচক মানসিকতায় খেলছে। এটাই করা উচিত। ফাইনালের কথা ভেবে বাড়তি চাপ নেওয়া উচিত নয়। ঠান্ডায় মাথায় নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলুক রিচা, জেমাইমারা। রবিবার যারা স্নায়ুর চাপ সামলাতে পারে, তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে। আমি আশা করছি, স্নায়ু চাপ সামলে ভারতই বাজিমাত করবে।’ আরও যোগ করলেন, ‘এক্স ফ্যাক্টরে সবাই আছে। ফাইনালে কে ভালো করবে না করবে, ওভাবে বলা মুশকিল। কারণ প্রতিটা ম্যাচেই কেউ না কেউ দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কালও যেন দু’-চারজন দাঁড়িয়ে যায়। দুটো দলই ভালো। তাই ফাইনালে উঠেছে। একজন ভারতীয় হিসাবে আমি চাইবো ভারত জিতুক। যে দল কাল শেষ অবধি শান্ত হয়ে খেলবে, তারাই বিশ্বকাপ জিতবে। যেভাবে সেমিফাইনালটা খেলেছে ভারত, সেইভাবে খেলতে পারলে, আমরাই চ্যাম্পিয়ন হবো।’
Comments :0