অনিল কুন্ডু
কৃষক, খেতমজুর, পরিযায়ী শ্রমিকের ঐক্য গড়ে তুলেই গ্রামে রাজনৈতিক ভারসাম্যর পরিবর্তন ঘটাতে হবে। রবিবার পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গায় একথা বলেন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষ। তেভাগা আন্দোলনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, "পাথরপ্রতিমাতেও তেভাগা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল। তেভাগার লড়াইয়ে কোনও সাম্প্রদায়িক হানাহানি ছিল না। সেই সময় শ্লোগান ছিল – "বেনামি জমি দখল কর। দখলে রেখে চাষ কর।" আজকের পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। বর্তমানে স্লোগান "জমি রক্ষা কর। বর্গা রক্ষা কর।" সোনারপুর, ভাঙড়, পূর্ব কলকাতায় জমি কেলেঙ্কারি চলছে। জলাজমি ভরাট হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে যৌথ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সারা ভারত কৃষক সভার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলনের শেষ দিনে রবিবার অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন তুষার ঘোষ। প্রতিনিধি, সংগঠকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "সুন্দরবন বাঁচাও পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন, কংক্রিটের নদী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কৃষককে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি কৃষকের জীবন জীবিকা নিয়ে কৃষক সভার নিজস্ব আন্দোলনের সাথেই যৌথ আন্দোলন করতে হবে। গ্রামে গ্রামে ঐক্যকে দৃঢ় করার শপথ গ্রহণ করতে হবে।"
পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গায় সারা ভারত কৃষক সভার দু’দিন ব্যাপী জেলা সম্মেলনে সাংগঠনিক রাজনৈতিক খসড়া প্রতিবেদনের উপর দু’দিন ধরে ৩০ জন প্রতিনিধি আলোচনা করেন। জেলার ২৭ টি ব্লক থেকে ১২ জন দর্শকসহ মোট ২৮২ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। মহিলা প্রতিনিধি ছিলেন ২৩ জন। এদিন সম্মেলনে পর্যবেক্ষণমূলক বক্তব্য রাখেন কৃষক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক তথা কৃষক নেতা সঞ্জয় পুততুণ্ড। পাথরপ্রতিমায় তেভাগা লড়াইয়ের অন্যতম সেনানী কৃষক আন্দোলনের প্রবাদ প্রতিম নেতা প্রভাত মন্ডলকে এদিন সম্মেলন মঞ্চে সংবর্ধিত করা হয়। সম্মেলনে প্রতিনিধিদের আলোচনার শেষে জবাবী ভাষণ দেন বিদায়ী জেলা সম্পাদক অলোক ভট্টাচার্য। সম্মেলন থেকে ৭৫ জনের নতুন জেলা কাউন্সিল ও ২৫ জনের জেলা সম্পাদকমন্ডলী গঠন করা হয়েছে। রাজ্য সম্মেলনের ২৪ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বসম্মতিক্রমে নতুন জেলা কমিটির সভাপতি পদে সুফল পাল ও সম্পাদক পদে অলোক ভট্টাচার্য নির্বাচিত হয়েছেন।
মন্তব্যসমূহ :0