Mohunbagan Election

মোহনবাগানের লাগাম কার হাতে থাকবে, ময়দানে ঘুরছে একটাই প্রশ্ন

খেলা

আগামী মাসের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় সপ্তাহেই সম্ভবত হতে চলেছে মোহনবাগান ক্লাবের ভোট। ভোটের তারিখ না জানা গেলেও দুই পক্ষই (সৃঞ্জয় বসু বনাম দেবাশীষ দত্ত) জোরকদমে শুরু করে দিয়েছেন ভোটের প্রস্তুতি ও প্রচার। খসড়া  অনুযায়ী প্রায় ৬,৮১৮ জন সদস্য ভোট দেবেন। সেই ভোটারদের মন জয়ের উদ্দেশেই দেবাশীষ দত্ত এবং সৃঞ্জয় বসু এই দুই পক্ষই গোটা বাংলা জুড়ে প্রচারে নেমেছেন। ইতিমধ্যেই কিছুদিন আগে মোহনবাগানের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলে টুটু বসু। তবে এই নির্বাচনে তিনি তার পুত্র সৃঞ্জয়ের সঙ্গেই রয়েছেন। 
বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর সাথে তৃণমূলের প্রথমসারির একাধিক নেতার যোগ রয়েছে। অনেকে কার্যনিরবাহী কমিটির সদস্যও। ফুটবল মহলের অনেকেই মনে করেন বর্তমান শাসক দল ময়দানের প্রায় সব ক্লাবেই নিজেদের দখলে রাখার চেষ্টা করছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভাই একাধিক ক্লাবের সাথে যুক্ত। তবে এই বিষয় দেবাশীষ দত্ত বলেছেন, ‘রাজনীতি করা তো অন্যায় নয়। তাই ওরাও মোহনবাগানের সাফল্যের জোয়ারে গা ভাসিয়েছেন।’ 
এর পাল্টা সৃঞ্জয় বসু শিবিরের যুক্তি এর আগেও বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মোহনবাগানের সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। এই নিয়ে বিতর্ক ঠিক হবে না। অর্থাৎ ক্লাবের নির্বাচনে রাজনীতির প্রবেশকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন দুই পক্ষই। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে আগামী ৪জুন তারিখে হাওড়ায় প্রচারে নামতে চলেছেন টুটু বসু। হাওড়ায় মোহনবাগান সদস্যের সংখ্যা বেশি। প্রথমে উত্তর কলকাতা। দুই পক্ষের তরফে প্রচারে দেখা জাচ্ছে দুটি স্লোগান শাসক গোষ্ঠীর স্লোগান 'আমরাই মোহনবাগান' অন্য দিকে বিরোধী শিবিরের কথায় 'তোমাকেই চাই', কাকে চাই? টুটু বসু এবং সৃঞ্জয় বসুকে।
মূলত এই দুই ব্যানারে ছয়লাপ করা হচ্ছে গোটা কলকাতা তথা রাজ্যতেই। এছাড়াও প্রাক্তন মোহনবাগানের দুই তারকা ফুটবলার শিল্টন পাল এবং শিশির ঘোষকেও দেখা গেছে দুই পক্ষের হয়ে নির্বাচনী সভায়। শোনা যাচ্ছে এই ভোট হতে পারে প্রায় ৫ দফায়। প্রায় ৬,৮১৮ জন সদ্যসের মধ্যে রয়েছেন টেনিস মেম্বার, লাইফ মেম্বার এবং জেনারেল মেম্বাররা। তাই সকলের কথা মাথায় রেখেই ভোটের দিনক্ষণ ভাগ করে দেওয়া হতে পারে। এই ব্যাপারে জাস্টিস অসীম রায় জানিয়েছেন, ‘সন্ধ্যায় ভোট করে দিতে পারি। সবাই অফিস শেষ করে সন্ধ্যায় ভোট দিতে পারবেন।’ তবে তার কথা মানতে নারাজ সৃঞ্জয় বসু। তিনি চাইছেন যে ভোট হোক এক দফাতেই। 
দুই পক্ষের তরফ থেকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু কেউ বুক বাজিয়ে বলতে পারছে না ক্লাবে কোন রাজনৈতিক প্রভাব তারা পড়তে দেবে না। গতবার নির্বাচনে সরাসরি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দেখা গিয়েছিল।
ভোটের আগেই সৃঞ্জয় বসুর পক্ষ থেকে যে ইস্তেহার প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে মোহনবাগানের একটি ক্যাম্পাস তৈরির কথা। বর্তমান ক্লাব তাঁবু সেনাদের নিয়ন্ত্রণাধীন হওয়ায় বহু ক্ষেত্রেই সমস্যার মুখে পড়তে হয় ক্লাবকে। সেনার কথায় সড়াতে হয়েছে ‘অমর একাদশের’ মূর্তিও। এছাড়াও ক্লাব প্রাঙ্গনটি ছোট হওয়ায় সেখানে কোন কিছু স্থাপন করাতেও সমস্যা হয়। সেই বিষয়ে সৃঞ্জয় বলেছেন যে, তারা স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা করছেন। সেখানে একটি ইন্ডোর গেমসের ব্যবস্থা করে সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই সেটাকে আরও বাড়িয়ে নেওয়া। প্রবীণ সদস্যের আজীবন সদস্য পদ মকুবের কোথাও বলেছেন সৃঞ্জয়রা। 
দেবাশীষ দত্তের কথায়, গত তিন বছরে ক্লাবের যা উন্নতি হয়েছে তাতেই ক্লাবের নাম শিরোনামে এসেছে। তবে ক্লাবের এই সাফল্যের পিছনে দুই পক্ষেরই অবদান অনস্বীকার্য। তাই সেক্ষত্রে সদস্যরা কোন পক্ষকে ভোট দিয়ে জেতাবেন সে বিষয়টি অনেকটাই নির্ভর করবে ক্লাবের অগ্রগতির পিছনে কোন ক্লাবকর্তাদের কতটা ভূমিকা রয়েছে। তবে এরই মধ্যে ঘটেছে এক আশ্চর্য ঘটনা। টুটু বোস দেবাশীষ দত্তের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছন যে, দেবাশীষের কৃতিত্বকে ছোট করে দেখার কিছুই নেই। দীর্ঘ সময়ে দেবাশীষ ক্লাবের দায়িত্ব সুন্দর ভাবেই পালন করেছে। আর ভোটের আগেই ঘটনা পরম্পরায় জমে উঠেছে চিত্রনাট্য। তবে ফলাফল যাই হোক মোহনবাগান যে কোন ভাবে রাজনীতি মুক্ত হবে না তা বলা যেতেই পারে।

Comments :0

Login to leave a comment