Dengue

রাজপুর- সোনারপুর, পরপর ডেঙ্গুতে মৃত্যু একই পরিবারে দুই সদস্যের

রাজ্য জেলা

বিদায় নিয়েছে বর্ষা শীতের শুরুর আগেই ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াল হয়ে উঠলো, যা এই মুহূর্তে বিশেষজ্ঞদের যথেষ্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যু। গত ৬ অক্টোবর রেনিয়া ক্ষুদিরাম সরণীর বাসিন্দা বিপ্লব সরদার(৪৫)’র মৃত্যু হয় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। শনিবার ওই পরিবারের সদস্য বন্দনা সরদার(৪৩)’র মৃত্যু হয় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। ডেঙ্গু সংক্রমণের কারণে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। আতঙ্কে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবব্রত মণ্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন স্থানীয়রাই। তাদের অভিযোগ পৌরসভার গাফিলতির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এলাকায়। নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার করা হয় না। কাঁচা ড্রেন পরিস্কারের ব্যাবস্থা করা হয় না পৌরসভার তরফে। প্রচুর মশায় ছেয়ে গেছে এলাকা।  বাড়িতে থাকা যায় না মশার দাপটে। পৌরসভার লোকজন এলাকায় কোনও কাজ করে না। নেই ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতার বার্তাও দেওয়া হয় না পৌরসভার তরফে। যদিও স্থানীয়দের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর দাবি করছেন, পৌরসভার ড্রেনে কোথাও জল জমে নেই। ঘিঞ্জি এলাকায় মাটির বেড় দেওয়া সেপটিক ট্যাঙ্কের জল উপচে পড়ার কারণেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে কাউন্সিলরের দাবি মানতে নারাজ স্থানীয়রা। তাদের দাবি, নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না হওয়া ও পৌরসভার গাফিলতির কারণে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ডেঙ্গু মশার দাপট বাড়ছে পৌর পরিষেবার খামতির কারণেই। ডেঙ্গুর হানাদারি সামলাতে জমা জল সরানোর কোনও উদ্যোগ দেখায়নি পৌরসভা। 
মৃত বন্দনা সরদারের স্বামী সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দিন ২০ আগে আমার দাদার মৃত্যু হয়। বেশ কিছুদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন বন্দনা। ডেঙ্গু রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরে এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। শনিবার হাসপাতালেই মৃত্যু হয়। আমি ও আমার ছোট মেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলাম। মেয়ে এখন সুস্থ রয়েছে।’’
রাজ্য সরকারের দেওয়া কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে পাঠানো পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবছর ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত রাজ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ১২ হাজার ৩৪ জন। ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজার। ৩ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন সাড় ৯ হাজারের বেশি মানুষ।
ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্তে উদ্বেগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের, অথচ ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রশাসনের উদ্যোগ তেমন চোখে পড়ছে না। বর্ষা শেষে শীত শুরু হতে না হতেই একের পর এক আসছে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার খবর, মিলল মৃত্যুর সংবাদও। দিন কুড়ি আগেই রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিপ্লব সরদারের মৃত্যু সংবাদ মিলেছে। রবিবার মিলল ওই পরিবারের সদস্য বন্দনা সরদারের মৃত্যু সংবাদ।

Comments :0

Login to leave a comment