পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে বিকাশ ভবন থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলে দিলেন এসএসসি স্বচ্ছতার সাথে মেধাকে গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে। দীর্ঘ ন’বছর পর দুই দফায় রাজ্য এসএসসি পরীক্ষা হলো, যা বিরল। ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারের সময় প্রতিবছর নিয়ম করে এই পরীক্ষা নেওয়া হতো। তার সাথে হতো নিয়োগ। কিন্তু তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির জন্য বাতিল হয়েছে গোটা ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল। জেলে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে প্রাক্তন এসএসসি আধিকারিক। আদালতের চাপে এবার বাধ্য হয়ে পরীক্ষা নিয়েছে রাজ্য।
এদিন ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘দুবছর ধরে চলা বিভিন্ন ঘটনার পর এই পরীক্ষা নেওয়া খুবই কঠিন ছিল। এসএসসি স্বচছতার সাথে মেধাকে গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে।’’
তবে শিক্ষামন্ত্রী যখন বলেছেন এসএসসি সফল পরীক্ষা নিতে তখন বিভিন্ন পরীক্ষার্থীদের মুখে শোনা গিয়েছে অন্য কথা। তাদের কথায়, স্বচ্ছতার সাথে নিয়ো হবে কি না সেই তাদের মনে সংশয় রয়েছে।
তিনি বলেন, গত রবিবার নবম দশমের নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেন ৩ লক্ষ ১৯ বেশি। পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৯১ শতাংশ। আজ একাদশ এবং দ্বাদশের নিয়োগের জন্য ২,৪৬,৫৪৩ জন আবেদন করেছিলেন, তার মধ্যে ৩১২০ জন বিশেষ ভাবে সক্ষম। ৯৩ শতাংশ পরীক্ষা দিয়েছে।’’
শিক্ষামন্ত্রীর কথায় দুই দিন মিলিয়ে ৫লক্ষ ৬৬ হাজার আবেদনকারি পরীক্ষা দিয়েছে। বাইরের রাজ্য থেকে গত রবিবার ৩১ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্রাত্য। রবিবার ১৩,৫১৭ জন বাইরের রাজ্য থেকে পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন।
এবার এসএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন এনেছে কমিশন। ওএমআর ভিত্তিক পরীক্ষার প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে আবেদনকারিদের। এই লিখিত পরীক্ষার পর ওয়েবসাইটে মডেল উত্তরপত্র দিয়ে দেওয়া হবে বলে এদিন জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তারপর পাঁচদিন সময় দেওয়া হবে পরীক্ষার্থীদের আপত্তি জানানোর জন্য। এরপর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে ইন্টারভিউয়ের।
রবিবার যেই পরীক্ষা হলো তাতে চাকরিহারা যোগ্য পরীক্ষার্থীরা যেমন বসছেন তেমন পরীক্ষায় বসেছেন নতুন চাকরি প্রার্থীরা। দুই দলের কাছেই একটাই প্রশ্ন তা হচ্ছে নিয়োগ কি সঠিক ভাবে হবে। ফের কোন দুর্নীতি সামনে আসবে না তো? বাতিল হবে না তো পরীক্ষা?
উল্লেখ্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি ১৮০৬ জন অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করেছে কিন্তু এই তালিকা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।
তালিকায় প্রথমে ছিল ১৮০৪জনের নাম। শুধু রোল নম্বর ও নাম রয়েছে তালিকায়। কোনও জেলা, কোন স্কুলে তাঁরা এতদিন অবৈধভাবে শিক্ষকতা করলেন তার কোনও উল্লেখ নেই। এমনকি রাতে একটার পরে সেই তালিকা আবার বেড়ে যায়। যুক্ত হয় আরও দুটি নাম ও রোল নম্বর। এই তালিকা সামনে আসার পরেই নানান মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, সংখ্যা এত কম কেন? এর আগে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক শুনানিতে যে সংখ্যার কথা জানা ছিল তার অর্ধেকেরও কম না রয়েছে কমিশনের এই তালিকা। দাগিদের এই তালিকাতেও অস্বচ্ছ্তা রয়েছে, অসম্পূর্ণ তালিকা-অভিযোগ তোলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ কমিশনের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন— ‘সিবিআই’র তালিকায় তো আরও বেশি নাম ছিল। এখানে এত কম কেন? সব দাগিদের নাম কী তালিকায় রয়েছে?’
Bratya Basu
শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন পরীক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মেধাকে, কিন্তু প্রশ্ন থাকছে পরীক্ষার্থীদের মনে

×
মন্তব্যসমূহ :0