SC on SIR

প্রক্রিয়া বেআইনি হলে বিহারে, দেশেও বাতিল হবে এসআইআর, জানালো সুপ্রিম কোর্ট

জাতীয়

বেআইনি প্রক্রিয়া দেখা গেলে বাতিল হবে এসআইআর। বিহারে ভোটার তালিকায় এসআইআর সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের প্রভাব জাতীয় স্তরে এই প্রক্রিয়ার ওপরও পড়বে।
সোমবার এসআইআর সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এই পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে দুই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং সূর্য কান্তের বেঞ্চ। বিহারে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর’র চূড়ান্ত শুনানি হবে ৭ অক্টোবর। 
দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, ‘বিচ্ছিন্ন প্রস্তাব বা মতামতের ভিত্তিতে’’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। গৃহীত সিদ্ধান্ত সার্বিক ভাবেই প্রয়োগ করা হবে। 
বিচারপতিরা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। ফলে ধরে নেওয়া হয় যে দেশের আইন এবং সংবিধানকে প্রয়োগ করবে এই প্রতিষ্ঠান। পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সারা দেশে এসআইআর প্রক্রিয়াকে এখনই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। কিন্তু প্রক্রিয়ার ওপর কঠোরভাবে নজর রাখা হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলিকে আলোচনার বাইরে রেখে প্রথমে বিহারে আচমকা এসআইআর শুরু করে কমিশন। গোড়া থেকেই বিরোধীরা আশঙ্কা জানাচ্ছিলেন গরমিলের। সংবাদমাধ্যমেও তা দেখা যায়। খসড়া তালিকা প্রকাশ হতেই দেখা যায় ৬৫ লক্ষের নাম বাদ গিয়েছে। বহু জায়গায় বুথ স্তরের আধিকারিকরা কারও সঙ্গে কথা না বলে ফর্ম ভরে জমা দিয়েছে বলে অভিযোগ। ‘সুপারিশ’ এবং ‘সুপারিশ নেই’, ফর্মে এমন মতামত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারীরা তা পেশ করে জানতে চান কোন আইনে এমন কথা বলা হয়েছে। কমিশন আধারকে ভোটার তালিকায় নাম তোলার যোগ্য বলে মানেনি। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দেয় যে আধারকেও নথি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। 
সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানিয়েছে বিহারে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ৩০ সেপ্টেম্বর কমিশন প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু তালিকা প্রকাশ রায় ঘোষণায় প্রভাব ফেলবে না। আইনজ্ঞদের মতে, বিচারপতিরা বুঝিয়েছেন যে ৩০ সেপ্টেম্বরের পরও প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে রায় হতে পারে। বিচারপতিরা বলেছেন সারা দেশে এসআইআর করার বিপক্ষে দায়ের আবেদনে ৭ অক্টোবরও সওয়াল করা যেতে পারে।
এসআইআর’র বিরোধিতা করে দায়ের আবেদনের পক্ষে সওয়ালে আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণন বলেন, ‘‘এই প্রক্রিয়া সাংবিধানিক নির্দেশ অগ্রাহ্য করার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে অন্য রাজ্যে একইভাবে এই প্রক্রিয়া চলতে দেওয়া অনুচিত।’’
অন্যদিকে কমিশনের পক্ষে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে শুনানি হওয়া উচিত নয়। শুনানির তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বরের পর হওয়া উচিত।’’
পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সিইও’র দপ্তর থেকে এসআইআর চালুর তৎপরতা চলছে। দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, আধারকে নথি হিসেবে জমা দেওয়া গলেও বিহারের মতোই গোড়ায় চালু ১১টি নথির কোনও একটি বাধ্যতামূলক করতে চাইছে কমিশন। সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায় অমান্য হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 
বিভিন্ন অংশের পক্ষে দায়ের আবেদনে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার এসআইআর’র বিরোধিতা করেন এদিনও। তিনি বলেছেন, ‘‘বেআইনি প্রক্রিয়ার কারণে কোনও একজনেরও ভোটাধিকার খারিজ হতে পারে না।’’

মন্তব্যসমূহ :0

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন