SIR

এসআইআর আতঙ্ক কাটিয়ে ভরসার শক্তি গড়ে তুলতে হবে

উত্তর সম্পাদকীয়​

সুজন চক্রবর্তী

এসআইআর আতঙ্কে চিঁড়েচ্যাপ্টা রাজ্যের মানুষ। সন্দেহজনক ডি ভোটার, ডিটেনশন ক্যাম্প, এনআরসি তালিকা— এসবের নামে গত কয়েক বছর ধরে আসামে বিজেপি’র শাসক বাহিনী যে দাপাদাপি চালিয়ে যাচ্ছে তাতে মানুষের আতঙ্ক স্বাভাবিক। মুসলিম বিতাড়নের নাম করে এনআরসি ২০১৯ সালে আসামে যে তালিকা তৈরি করল, তাতে শেষমেশ ১৯ লক্ষ লোকের নাম বাদ। তার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ বাঙালি হিন্দু এবং অবশ্যই গরিব মানুষ। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে গরিব মানুষের জীবন-জীবিকা-অস্তিত্ব-পরিচিতির উপরেই আক্রমণ। কিন্তু অবস্থা এমনই জটিল যে ২০১৯ থেকে ৬ বছর পার হয়ে গেলেও সরকার এখনও আসামের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করতে পারল না। শুধু ভয় এবং আতঙ্কে থানা-পুলিশ-আদালতের দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এই বুঝি ডিটেনশন ক্যাম্প, বুঝি বা অ-নাগরিক কিংবা দেশের সীমানার বাইরে ঠেলে দিয়ে দেশহীন মানুষে পরিণত হতে হয়! ভয়ঙ্কর সে সব পরিণতি অকল্পনীয়।
এ রাজ্যের সর্বনাশা ব্যবস্থা এমনই যে, অনেক ক্ষেত্রেই দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী বহু প্রান্তিক মানুষ নানান হেনস্তার শিকার। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, প্রতিবেশীদের চেনা জানা– এসব কোনও কিছুই নাকি মানুষের ভোটাধিকারের পরিচয় বহন করে না। নিষ্ঠুর আতঙ্কের শিকার হতে হচ্ছে গরিব, পরিযায়ী শ্রমিক, আদিবাসী, দলিত, বাস্তুহারা, মতুয়া, সংখ্যালঘু এই সমস্ত প্রান্তিক মানুষদের। এই প্রেক্ষাপটে পশ্চিমবাংলায় এসআইআর বহু সাধারণ মানুষকে অস্থিরতা-অস্বস্তি-অনিশ্চয়তা এবং আতঙ্কের পরিবেশে ঠেলে দিয়েছে।
এরই পাশাপাশি মানুষ খেয়াল করছেন কিভাবে বিহরে এসআইআর’র নামে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম, ভোটার তালিকায় বাদ দেওয়া হয়েছে। বিজেপি নেতারা একটানা বলে গেলেন— রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি মুসলমানদের তাড়াবার জন্যই নাকি বিহারে এসআইআর। প্রধানমন্ত্রী একটার পর একটা সভায় সভায় ঘুসপেটিয়া-অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে গেলেন। কিন্তু বাতিল তালিকায় তাদের কতজনকে পাওয়া গেল? তাহলে কারা বাদ গেলেন? সংখ্যাগরিষ্ঠ মহিলা, সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিযায়ী শ্রমিক— যাদের বাড়িতে গিয়ে নাকি খুঁজে পাওয়া যায়নি। গরিব প্রান্তিক মানুষ, যাঁদের কাছে কাগজ কম, তাঁরাই শিকার হলেন বিহারের তালিকায়। মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, হরিয়ানায় ভোটার তালিকায় নানান রকমের যোগ-বিয়োগের অনৈতিক খেলায় শাসক বিজেপি-কে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কি ভয়ঙ্কর অপচেষ্টা হয়েছে, তা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
এই প্রেক্ষিতেই পশ্চিমবাংলায় এসআইআর। হেনস্তা এবং আতঙ্কের পরিবেশ তাই অস্বাভাবিক নয়। এই ভয় প্রাথমিকভাবে তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন নিজেই। সমানতালে বিএলও-দের চাপ সৃষ্টি করেছে বিজেপি এবং তৃণমূল। ওদিকে নির্বাচন কমিশনও চূড়ান্তভাবে অপ্রস্তুত। বিএলও-দের অফিস কাছারির কাজ ফেলে ভোটার তালিকার কাজে আতঙ্কের মধ্যে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে। সময়ে বাঁধা কাজ, তার উপর নিত্য নতুন নির্দেশ আর ফরমান জারি হচ্ছে। তার উপর অসম্ভব চাপের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে কমিশনের কোনও দায় নেই যেন।
নির্ভুল ভোটার তালিকা চায় মানুষ। এটাই স্বাভাবিক। মৃত-ভূতুড়ে নামে ভর্তি ভোটার তালিকা। তা বাদ দিতে হবে। যোগ্যদের নাম রক্ষা করতে হবে। নতুন ভোটারদের নাম সংযোজন করতে হবে। এসবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বারে বারে দাবি করা সত্ত্বেও গত কয়েক বছর ধরে তালিকা পরিষ্কার করা হয়নি। ভূতুড়ে ভোটারের সুবিধা পেতে চেয়েছে রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। সেইমত করেই বাতিল যোগ্য ভূতুড়ে অথবা মৃত মানুষের নাম বছর পর বছর রক্ষা করে চলেছে নির্বাচন কমিশন।
মানুষের দাবি নির্ভুল ভোটার তালিকা। তার জন্য এসআইআর লাগবে কেন? বাপ ঠাকুরদা’র নাম খুঁজতে হবে কেন? ২০০২ এর ভোটার তালিকা ভিত্তি হবে কেন? মশা মারতে কামান দাগাতে হবে কেন? ২০১৯, ২০২১ বা ২০২৪-এর সর্বশেষ নির্বাচনের ভোটার তালিকাকে ভিত্তি করে নির্ভুল প্রচেষ্টা নয় কেন? ব্যাঙ্ক, প্যান, গ্যাস সব লিঙ্কের জন্য আধার কার্ড। কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও এক্ষেত্রে আধার কার্ডকে মান্যতা নয় কেন? ভোটার তালিকা নির্ভুল করার জন্য তো কামান দাগার দরকার হয় না।

এসআইআর’র নতুন নিয়ম যেন মনে হচ্ছে, ভোটারদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা। আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তায় হয়রান হচ্ছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ। নাগরিকত্বের তালিকা অথবা সরকারের কোনও হিডেন অ্যা জেন্ডাকে কার্যকরী করা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়— এটা স্পষ্ট থাকা দরকার। ওগুলো সরকারের কাজ, নির্বাচন কমিশনের নয়। এধরনের কোনও কাজ ঘাড়ে নিয়ে কমিশন বিএলও-দের বা ভোটারদের বিপর্যস্ত করতে পারে না।
বস্তুতপক্ষে, রাজ্যে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে তালিকায় ভোটার সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বরাবরই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সঙ্গে ভোটার বৃদ্ধি তুলনীয় এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ থেকেছে। খুব বেশি হলে ২-৩ শতাংশের ফারাক। তৃণমূল আমলে এই ফারাকটা ক্রমশই বেড়েছে। ২০১৪ সালে এই ফারাক প্রায় ৮০ লক্ষ, যা শতাংশের বিচারে ১৩ শতাংশ। 
এরপর কেন্দ্রে বিজেপি’র সরকার। কেন্দ্রে বিজেপি রাজ্যে তৃণমূল— যেন ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার’। জনসংখ্যার সাথে ভোটার বৃদ্ধির ফারাকটাও দ্বিগুণ হয়ে গেল। ২০২৪ সালে সংখ্যার বিচারে এই ফারাক বেড়ে হলো প্রায় দেড় কোটি। শতাংশের বিচারে ২০ শতাংশের বেশি। এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা ফারাক কেন, তা নিয়ে যে যতই গবেষণা করুক, এর দায় তৃণমূল এবং বিজেপি অস্বীকার করতে পারে না।
নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরিতে স্বাভাবিকভাবেই এদের আগ্রহ থাকার কথা না। ভোটার তালিকাকে কলুষিত করতেই এদের আগ্রহ। তৃণমূল মৃত-ভূতুড়ে নাম রক্ষা করতে আগ্রহী। আবার বিজেপি যোগ্য মানুষের নাম বাদ দিতেই আগ্রহী। মানুষের দাবি স্পষ্ট। মৃত-ভূতুড়ে নাম বাদ দিতে হবে। যোগ্য ভোটারের নাম বাদ দেওয়া যাবে না। নতুন ভোটারের নাম সংযোজন করতে হবে।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে রাজ্যের ভোটার তালিকায় বুথ পিছু গড়পড়তা মৃত-ভূতুড়ে কিংবা ডবল এন্ট্রি মানুষের সংখ্যা কমবেশি সাত-আট-দশ শতাংশ। এমনকি তাঁর চাইতেও বেশি হতে পারে। কিন্তু সন্দেহ নেই যে এর বাইরেও কিছু ভোটার আছে যাঁরা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। দেশভাগের শিকার। প্রয়োজনবোধে তারা এদেশে ফিরে আসতে পারেন এবং তাঁদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব ভারত রাষ্ট্রের— এই স্বীকারোক্তি গান্ধী-নেহরু সহ তৎকালীন দেশনেতাদের সবারই। এটা নিয়েও সন্দেহ নেই যে সহায় সম্বল সম্পন্ন একটা বড় অংশের মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে স্বাধীনতার পর এ দেশে চলে আসলেও, সহায়-সম্বলহীন, দারিদ্র পীড়িত, পিছিয়ে থাকা অংশের মানুষ, মতুয়া সমাজের একটা বড় অংশ সাম্প্রতিক সময়ে এ দেশে চলে এসেছেন। দেশের আইনের তাঁর স্বীকৃতিও আছে। এই মানুষগুলিকেই এসআইআর’র নাম করে বিপর্যস্ত করা হচ্ছে।
বাস্তবত, ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন এই সমস্ত মানুষের জন্য সবচাইতে বিপজ্জনক এবং সর্বনাশা। তখন কেন্দ্রে এনডিএ সরকার, প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। তারই মন্ত্রীসভার সদস্য মমতা ব্যানার্জি। বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দেওয়া হলো এদের উদ্বাস্তু এবং গরিব মানুষদের, যাদের কাগজের শক্তি স্বভাবতই দুর্বল। ২০১৯ সালে জবরদস্তি জারি করা হলো সিএএ আইন। কিন্তু আসামেই হোক বা পশ্চিমবঙ্গেই হোক— এই মানুষেরা কি নাগরিকত্ব পেলেন? বরং এক্ষেত্রে নাগরিকত্বের দরখাস্ত আরও বিপর্যয় তৈরি করতে পারে। গরিব, উদ্বাস্তু, মতুয়া, আদিবাসী মানুষ ক্রমশই তা বুঝতে পারছেন। রাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী মানুষের নিঃশর্ত নাগরিকত্বই যে একমাত্র সমাধান— মানুষ তা ক্রমশই বুঝতে পারছেন।
সম্প্রতি, ২০২৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার বিধি প্রণয়ন করে এদেশে এদের থাকার অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। এমনকি ২০২৪-এর ৩১ ডিসেম্বরের আগে যারা এদেশে এসেছেন, তাদের একটা অংশকে এই স্বীকৃতি। তাহলে ২০০২-এর ভোটার তালিকাকে ভিত্তি করে প্রান্তিক-উদ্বাস্তু-খালপাড়ে থাকা-মতুয়া মানুষদের ভয় দেখানোর জন্য এসআইআর’র এই ব্যবস্থাপনা কেন— স্বাভাবিকভাবেই সে প্রশ্ন আসবে। এই মানুষদের একটা বড় অংশই ২০২৪, ২০২১ এবং ২০১৯-এর নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। এদের ভোটেই তৃণমূল এবং বিজেপি’র এমএলএ, এমপি-রা জিতে সরকার গড়েছেন। এই ভোটাররা যদি বাতিলযোগ্য হয়, তবে এদের দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যোগ্য থাকেন কি করে? তাঁরাও তো বাতিলযোগ্য হতে বাধ্য। এই গরিব মানুষগুলোকে দাবার বোড়ে করে বিজেপি-তৃণমূলের রাজনীতির পাশা খেলা মেনে নেওয়া যায় না।
২০০২ সালের ভোটার তালিকা যদি ২০২৬-এর ভোটাধিকারের ভিত্তি হয়, তা কখনো সঙ্গত হতে পারে না। ২০০২-এর আগে যারা এদেশে চলে এসেছেন তারা শুদ্ধ, আর পরে হলেই অশুদ্ধ— এটা কোনও বিবেচনা? ২০০২-এর আগে এদেশে যারা এসেছেন তারা নাগরিক, আর পরে আসলে তারা নাগরিক নয়— এটা কোন আইনের অংশ? এর মধ্যে বরং শাসক বিজেপি’র শ্রেণিদৃষ্টিভঙ্গিরই পরিচয় পাওয়া যায়। পিছিয়ে থাকা দারিদ্র পীড়িত মতুয়া অংশের মানুষই — সাধারণভাবে পরে এসেছেন। অতএব তারা ব্রাত্য। বিজেপি বা আরএসএস’র কাছে ঘোষিত শত্রু মুসলমান সমাজ হলেও অঘোষিত শত্রু শূদ্র, দলিত, পিছিয়ে থাকা অংশের মানুষ। নির্বাচন কমিশন এই রাজনীতির কলুষতার অংশীদার হয়ে দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের যে বিপদ ডেকে আনছে— তা চলতে পারে না।
ভোটার তালিকায় এসআইআর’র সুযোগে বাংলাদেশি মুসলমান অথবা রোহিঙ্গা বিতাড়নের আওয়াজ তুলে বিজেপি আসলে মনুবাদের নির্দেশই পালন করতে চায়। মুসলমান বা হিন্দু নয়, বিপন্ন আসলে গরিব মানুষ। পিছিয়ে পড়া, দলিত, মতুয়া, উদ্বাস্তু, আদিবাসী, খালপাড়ে থাকা অসংখ্য মানুষ। ২০০২-এর তালিকা অথবা বংশলতিকা, রক্তের সম্পর্ক— এসবকে ভিত্তি করে ভোটার তালিকার নামে নির্বাচন কমিশন কি আসলে আরএসএস-বিজেপি’র হিডেন অ্যা জেন্ডাকেই পূরণ করতে চায়? তা মেনে নেওয়া যায় না।
আপাতত এনিউমারেশন ফর্ম পূরণ। খসড়া তালিকা প্রকাশ হলে ডিসেম্বর জুড়ে আবারও ভালো করে দেখে নেওয়া দরকার মৃত, ভূতুড়ে নাম বাদ গেল কি না। নচেৎ ৭ নং ফর্মে সংবর্জনের দরখাস্ত করতে হবে। স্থায়ীভাবে বসবাসকারী কোনও মানুষ, সাম্প্রতিক সময়েও ভোট দিয়েছেন, যাকে খুশি তাকেই দিয়েছেন— এমন কোন কোন নাম বাদ গেল? ৬ নং ফর্মে তাদের সংযোজনের দরখাস্ত করতে হবে অথবা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশোধনের দরখাস্ত। ডিসেম্বর মাস জুড়েই সজাগ থাকতে হবে। তারপর হিয়ারিং। কোনও যোগ্য সহ নাগরিক যেন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এই বঞ্চনার জ্বালা কি— আসামের ডি ভোটাররা তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।
ভোটের তালিকায় কেবল একটি যথার্থ নামের অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নই নয়। ভোটাধিকার। গণতন্ত্র। মানবিক-নাগরিক অধিকার। সহ নাগরিকদের সাথে একসাথে অধিকারবোধ। মানুষের নিজের অস্তিত্ব এবং পূর্ণতার একটি প্রতিচ্ছবি। ভালোবাসা এবং পারস্পরিক সম্পর্ক। সেই মনোভাবে বুথের কর্মী যখন পাড়ার ছেলে হয়ে ওঠেন তখনই তা জনমানসে ভরসার শক্তি গড়ে তুলতে পারে।
এখন সময় তারই অনুশীলনের।

Comments :0

Login to leave a comment