এক বছর আগে ঘর ছেড়ে রওনা হয়েছিলেন আমেরিকার পথে। বৈধ কাগজপত্র ছিল না। দালাল চক্র ঘুরপথে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। হরিয়ানার আঠেরো বছরের সদ্য যুবা যুবরাজ পৌঁছাতেই পারলেন না গন্তব্যে। তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে হরিয়ানার কৈথলে পরিবারের কাছে।
কৈথলের মোহনা গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান যুবরাজ। রোজগারের আশায় আমেরিকা যেতে চেয়েছিলেন। দালালচক্রকে মোটা টাকা দিয়েছিল পরিবার। তাদের থেকেই জেনেছেন গুয়াতেমালায় মৃত্যু হয়েছে যুবরাজের। মৃত্যুর নথি পেতেও গুনতে হয়েছে নগদ ৩ লক্ষ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দল বিজেপি সমানে ‘নতুন ভারত’-র প্রচার করে চলেছে। আর নিয়মিত মিলছে অবৈধ পথে কাগজপত্র ছাড়াই আমেরিকায় ঢুকতে মরিয়া যুবদের মৃত্যুর খবর। বছরখানেক আগে আমেরিকা জানিয়েছিল যে মোদীর মেয়াদে লাফিয়ে বেড়েছে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে শুল্ক ও অভিবাসন দপ্তরের হাতে ধরা পড়া ভারতীয়ের সংখ্যা। স্থানীয় দালাল চক্রও রমরমিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে মোদী-অমিত শাহের শাসনে।
যুবরাজের মামা গুরপেজ সিং জানিয়েছেন, হরিয়ানায় স্থানীয় দালালরাই মোটা টাকা নিয়ে ‘সব বন্দোবস্ত’ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রথম কিস্তির টাকা নিয়ে যুবরাজকে রওনা করানোর পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে পেলে পরিবার। কয়েকমাস বাদে তারাই ভিডিও পাঠিয়ে বলে যে গুয়াতেমালায় আরেক যুবকের সঙ্গে যুবরাজকেও বন্দি করেছে একদল দুষ্কৃতী। টাকা চাইছে তারা। স্থানীয় দালালদের ফের দিতে হয় মোটা টাকা। এর কিছু পরে আসে মৃত্যুর খবর। মৃত্যুর প্রমাণ এবং ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য দিতে হয় ফের ৩ লক্ষ টাকা।
আমেরিকায় চোরাপথে ঢোকার এই রাস্তা বিশ্বের বহু দেশে পরিচিত ‘ডঙ্কি রুট’ নামে। আমেরিকার প্রতিবেশী মেক্সিকো বা লাতিন আমেরিকার কোনও দেশে নামিয়ে জঙ্গল-পাহাড়ের বিপদসঙ্কুল পথে নিয়ে যায় ‘ডঙ্কার’-রা। কিন্তু বহুজনই শেষ পর্যন্ত নিরাপদে আমেরিকার মাটিতে পৌঁছাতে পারেন না। যুবরাজও তাঁদের একজন।
গুরপেজ জানিয়েছেন পরিবার সব সমেত ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। পুলিশকেও জানানো হয়েছিল। স্থানীয় দুই দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কিছু পরে আসে যুবরাজের মৃত্যুর খবর।
'Dunki' Route Death
‘ডাঙ্কি রুটে’ যেতে চেয়েছিলেন আমেরিকা, হরিয়ানায় ঘরে পৌঁছালো মৃত্যুসংবাদ
কৈথলে যুবরাজের গ্রামে পুলিশ।
×
Comments :0