মণ্ডা মিঠাই — নতুনপাতা
কবি সুকান্তের মহাপ্রয়াণ
তপন কুমার বৈরাগ্য
সুকান্তের কবিতায় ছিলো মানবতা, বিপ্লবের গান। তাইতো সুকান্তের মৃত্যু আমাদের ভাবাই।কবি কীটসকে আমরা হারাই যক্ষারোগে।সুকান্তকেও হারাই যক্ষা রোগে। কবি কীটস মারা যান পঁচিশ বছর বয়েসে।আর সুকান্ত মারা যান একুশ বছর বয়েসে।পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া গ্রামে।পৈতৃকবাড়িটি এখন ওখানকার জাতীয় গ্রন্থাগার হয়েছে।এটা সুকান্তভট্টাচার্যের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন বলা যেতে পারে।১৯২৬খ্রিস্টাব্দে ১৫ই আগস্ট কলকাতায় মাতামহের ৪৩,মহিম হালদার স্ট্রিটের বাড়িতে
তাঁর জন্ম হয়।২০২৫এর ১৫ই আগস্ট থেকে তাঁর জন্মশতবার্ষিকী শুরু হচ্ছে।পিতা ছিলেন নিবারণ ভট্টাচার্য এবং মাতা ছিলেন সুনীতি দেবী।তাঁর জেঠতুতো বোন ছিলেন রাণী ভট্টাচার্য। সুকান্ত নামটি রাণী ভট্টাচার্যের দেওয়া।রাণী সুকান্ত ভট্টাচার্যকে
খুব ভালোবাসতেন।শৈশবে মাকে হারানো এবং আটবছর বয়েসে রাণীদিকে হারানোর ফলে তিনি মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েন।পশ্চিমববঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের তিনি ছিলেন কাকা।১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের প্রথমের দিকে তাঁর
যক্ষারোগ ধরা পড়ে। তখন যক্ষারোগের কোনো উন্নত মানের চিকিৎসা ছিল না।প্রথম দিকে বাড়িতে থাকলেও পরবর্তী ক্ষেত্রে রোগের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ১১৯লাউডট স্ট্রিটের রেড এন্ড কিওর হোমে তাঁকে ভর্তি করা হয়। ১৯৪৭খ্রিস্টাব্দের ১৩মে মাত্র ২১বছর বয়েসে তিনি এখানে মারা যান।
সুকান্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার আগে যে শেষ কবিতাটি লিখে গেছেন তাঁর নাম 'সিঁড়ি'। ভারতের স্বাধীনতা লাভের তিনমাস আগে তাঁর মহাপ্রয়াণ ঘটে। জনজীবনের গান তিনি কবিতায় গেয়েছেন।তাঁর কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে নিঃস্ব,শোষিত,অসহায় মানুষদের
জীবন সংগ্রামের ইতিহাস।অভাব এবং দারিদ্র্যের মধ্যে তাঁর দিন অতিবাহিত হলেও,তাঁর মন ছিল কবি কল্পনার ঐশ্বর্যে সমৃদ্ধ।জীবিত অবস্থায় সুকান্তের কোনো কবিতার বই প্রকাশ হয়নি।মৃত্যুর এক বছর পর তাঁর 'ছাড়পত্র','ঘুমনেই', 'মিঠেকড়া'
'অভিযান' কাব্যগ্রন্থগুলো প্রকাশিত হয়।এইসব কবিতাগ্রন্থ পড়ে পাঠকসমাজ জানতে পারলেন তিনি এক পরিবর্তিত পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেছিলেন।
Comments :0