Bangladesh

ঢাকার মিরপুরে রাসায়নিকের গুদামে অগ্নিকাণ্ডে মৃত বেড়ে ১৬

আন্তর্জাতিক

মীর আফরোজ জামান: ঢাকা

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মিরপুরের রূপনগর এলাকায় একটি পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। 
মঙ্গলবার বিকেলে এই খবর নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া আধিকারিক তালহা বিন জসিম।
প্রাথমিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানাতে না পারলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, " মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।"
স্থানীয় হাসপাতালের সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন," আগুন লাগার ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৩ জন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন।
এদিন স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ রূপনগরের শিয়ালবাড়ি এলাকার কসমিক ফার্মা নামের একটি কেমিকেল গোডাউন এবং পাশের পোশাক কারখানায় আগুন লাগার খবর পায় দমকল বিভাগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় দমকলের ১২টি ইঞ্জিন। আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে দেয়। কিন্তু বিকাল সোয়া ৪টা পর্যন্ত তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি বলে খবর পাওয়া গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, ফায়ার কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে আগুন দেখেছেন। কেমিকেল গোডাউনে নাকি গার্মেন্টস থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, “এদিন বিকেল পর্যন্ত নয় জনের দেহ উদ্ধার হয়। সময় বাড়তে সেই সংখ্যাটি ১৬ জনের দাঁড়ায়। এখনও পর্যন্ত ঘনাস্থল থেকে ১৬ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আমাদের কাছ এখনও চলছে। কাজ শেষ হলে গোটা বিষয়টি জানতে পারবো।” পোশাক কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে দেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নিহতরা মহিলা না পুরুষ ’বোঝা যাচ্ছে না’ জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা স্তূপ আকার হয়ে ছিল।” দমকলের এই আধিকারিক বলেন, পোশাক কারখানায় আগুন নেই, তবে ধোঁয়া রয়েছে, আর রাসায়নিকের গুদামে এখনও আগুন জ্বলছে। এটা কিন্তু আসলে রিস্কি। ওখানে আমরা কাউকে যেতে দিচ্ছি না, এমনকি দমকল বাহিনীকেও ওখানে যেতে দিচ্ছি না।” আগুন নিয়ন্ত্রণে ড্রোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকেও কমপক্ষে ৩০০ গজ দূরত্ব বজায়ে রাখতে অনুরোধ করেন তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
কারখানার কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যতটুকু জেনেছি, এটা আলম কেমিকেল ফ্যাক্টরি, সবাই বলে। কিন্তু এখন মালিকের কোনো মোবাইল ফোন অথবা মালিকের কোনো কর্মচারী ম্যানেজার কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না।
“পুলিশ এবং আর্মি সবাই চেষ্টা করছে, কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। 
রাসায়নিকের গুদামের অনুমোদন ছিল কি-না জানতে চাইলে আধিকারিক বলেন, “অনুমোদনের বিষয়টি আমরা এখনও জানতে পারিনি। তবে যতটুকু শুনেছি এটার অনুমোদান নেই। যাচাই করে তদন্তের পর বলতে পারব।”

অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। 
তিনি বলেন, “এই দুর্ঘটনায় নিরীহ মানুষের মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক। আমরা এই শোকের সময়ে তাদের পরিবারের পাশে আছি।”
প্রধান উপদেষ্টা অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেন।

Comments :0

Login to leave a comment