Panskura Super Speciality Hospital

হাসপাতালের মধ্যেই স্বাস্থ্য কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার তৃণমূল কর্মী

রাজ্য জেলা

হাসপাতালের মধ্যেই ধর্ষণ স্বাস্থ্যকর্মীকে। রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল মহিলাদের জন্য একেবারেই নিরাপদ নয় তা আবারও পরিস্কার। পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক চুক্তিভিত্তিক মহিলা স্বাস্থ্য কর্মীকে দিনের পর দিন শারীরিক হেনস্তা করে বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থার ফেসেলিটি ম্যানেজার জাহির আব্বাস খান। এলাকায় তৃণমূলের কর্মী বলে পরিচিত। ঠিক কি অভিযোগ? নির্যাতিতা মহিলার অভিযোগ ‘‘হাসপাতালের মধ্যে তাঁকে দিনের পর দিন শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। রবিবার রাতে ডিউটিরত অবস্থায় ছিলাম। আমাকে স্টোর রুমে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করার পর ধর্ষণ করেছে। যেহেতু চুক্তিভিত্তিক কাজ করি তাই ম্যানেজারের ডাকে গিয়েছিলাম। কিন্তু ধর্ষিতা হব ভাবিনি।’’ 
হাসপাতালের কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে আরও ২জন চুক্তিভিত্তিক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে ধর্ষণ করেছে অভিযুক্ত জাহির আব্বাস খান। ওই বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থার ফেসিলিটি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পাঁশকুড়া থানার পুলিশ কোলাঘাট থেকে অভিযুক্ত জাহির আব্বাস খানকে গ্রেপ্তার করেছে। 
রিল্যায়েবল সার্ভিস লিমিটেড নামের বেসরকারি সংস্থাটি পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কর্মী যোগান দেয়। এই সংস্থার ফেসিলিটি ম্যানেজার জাহির আব্বাস খান। বাড়ি পাঁশকুড়ার পিতপুরে। এলাকায় তৃণমূলের কর্মী বলেই পরিচিত। এমনকি শাসকদলের মদতে এই হাসপাতালে নানান দুর্নীতির সাথেও যুক্ত বলে অভিযোগ। তৃণমূলের কর্মী বলে হাসপাতালের কর্মীরা রীতিমত মুখ খুলতে পারেনা। শাসক দলের মদতেই দিনের পর দিন অভিযুক্তের এত দৌরাত্ম্য। জানা গেছে নির্যাতিতা মহিলাও ওই বেসরকারি সংস্থা দ্বারা নিয়োজিত। এই হাসপাতালের ওয়ার্ডে গার্ড হিসাবে কর্মরত। তাঁর আরও অভিযোগ ‘‘আগেও একাধিকবার শারীরিক নির্যাতন করেছে এই ব্যক্তি। হাসপাতালের আরও মহিলা কর্মীদেরও ধর্ষণ করা হয়েছে আগে। প্রতিবাদ করার সাহস ছিলনা। ভয় হুমকি দিত অভিযুক্ত।’’
আগে এমন ঘটনার কথা জানিয়ে হাসপাতালের সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। তবে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সোমবার হাসপাতাল সুপারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে ডিওয়াইএফআই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় ডিওয়াইএফআই’র কর্মীরা। ইব্রাহিম আলি বলেন ‘‘স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মহিলাদের কোনও নিরাপত্তা নেই। আরজিকর হাসপাতালের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের শাস্তি না হওয়ায় বেপরোয়া হয়েছে দুষ্কৃতীরা। শাসকদলের মদতে এমন জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। পাঁশকুড়ার হাসপাতালের ঘটনা লজ্জার। শাসক দলের কর্মী হওয়ার এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’’
এলাকার মানুষের অভিযোগ, তৃণমূলের আশীর্বাদ ধন্য হওয়ায় ওই ব্যক্তির হাসপাতালে ব্যাপক প্রভাব রয়েছ। অস্থায়ী কর্মীরা চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পেতেন না। সোমবার পাঁশকুড়া থানায় ওই মহিলা কর্মীরা লিখিত অভিযোগ করেন।
যদিও ঘটনার দায় তৃণমূল দায় ঝেড়ে ফেলতে বলছে, অভিযুক্তর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই। পাঁশকুড়া পুলিশ সূত্রে খবর, কোলাঘাট থেকে অভিযুক্ত জাহির আব্বাস খানকে গ্রেপ্তার করে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।

মন্তব্যসমূহ :0

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন