বৃহস্পতিবারের ঘটনায় আন্দোলনকারি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলো বিধাননগর পুলিশ। বিধাননগর উত্তর থানায় দায়ের করা হয়েছে মামলা। সূত্রের খবর ১৭ জন আন্দোলনকারিকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। তাদের বলা হয়েছে ২১ মে থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে কেউ যদি হাজিরা এড়িয়ে যায় তবে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। জানা যাচ্ছে আন্দোলনকারিদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ভাঙচুর, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধাদান করা সহ একাদিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার চাকরিহারাদের বিকাশ ভবন অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারিরা। তাদের দাবি চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে, নতুন করে তারা ফের তাদের যোগ্যতার প্রমান দেবেন না। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওই দিন রাতে। আন্দোলনকারিদের ওপর লাঠি চালায় পুলিশ। অনেকে গুরুত্বর আহত হয়েছেন। রক্তাক্ত হয়েছেন।
শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘গত দশদিন ধরে চাকরিহারারা বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কাল হঠাৎ করে দুই থেকে আড়াই হাজার জন সেখানে জড়ো হয়ে গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। পুলিশকে সড়িয়ে তারা ভিতরে যায়। অনেকে বলছেন পুলিশ দর্শকের মতো ছিল, আসলে পুলিশ সংবেদনশীল ছিল। ইচ্ছা করলে তখনই তাদের সড়িয়ে দেওয়া যেতো কিন্তু তা করা হয়নি।’’
পুলিশের যুক্তি সাত ঘন্টা ধরে তারা চাকরিহারাদের বুঝিয়েছেন অবস্থান তুলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু চাকরিহারারা তাদের কথা শোনেনি। সুপ্রতিম সরকারের কথায়, ‘‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু সাত ঘন্টা ধরে সরকারি কর্মীদের বিনা অপরাধে আটকে রাখা কোন গণতান্ত্রিক আন্দোলন হতে পারে না। আন্দোলনের নাম করে কেউ কাউকে আটকে রাখতে পারে না।’’
সুপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন ১৯ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন সেদিনের ঘটনায়। বৃহস্পতিবার সকালে যখন চাকরিহারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তখন পুলিশে সামনেই তাদের ওপর চড়াও হন তৃণমূলে নেতা সব্যসাচী দত্ত এবং তার অনুগামীরা। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘‘অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উনি কাজের জন্য বিকাশ ভবনে এসেছিলেন। তাকে প্রথম বেআইনি ভাবে আটকান আন্দোলনকারিরা। ওনাকে হেনস্তা করা হয়।’’ বিভিন্ন ফুটেজে ছবিতে দেখা যখন দেখা যাচ্ছে সব্যসাচীর অনুগামীরা মারছেন আন্দোলনকারিদের, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ওপর চড়াও হচ্ছে তখণ পুলিশ বলছে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবে। আবার এই পুলিশ বলছে তাদের কাছে বিভিন্ন ফুটেজ আছে সেই ফুটেজ দেখে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার অপরাধে আন্দোলনকারিদের বিরুদ্ধে স্বতপ্রনোদিত মামলা করা হয়েছে। কার্যত তৃণমূল নেতা এবং তার বাহিনীকে আড়াল করছে পুলিশ।
জাভেদ শামিম বলেন, ‘‘পুলিশের পক্ষ থেকে স্বতপ্রনোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। যারা কাল আটকে ছিলেন তারা সবাই সরকারি কর্মী। তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়া তাদের অধিকার। অনেক মহিলা কর্মী আটকে ছিলেন। যাদের চাকরি গিয়েছে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল পুলিশ। চাকরিহারাদের কষ্ট আমরা বুঝি। কিন্তু মনে রাখতে হবে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা অপরাধ।’’ সুপ্রতিম সরকারের মতো তিনিও বলেন, ‘‘পুলিশের উদ্দেশ্য ছিল আটকে থাকা কর্মীদের নিরাপদে বাইরে নিয়ে আসা।’’
SSC PROTEST
১৭ জন চাকরিহারাকে নোটিশ, বুধবার হাজিরার নির্দেশ

×
Comments :0