চাকরিহারাদের দাবি তাদের এই আন্দোনলের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করেন সব্যসাচী দত্ত। তাদের কথায় ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশ করতে হবে করবে।
আন্দোলনকারিদের দাবি তারা যোগ্য। তারা নতুন করে পরীক্ষায় বসতে রাজি নয়। গত ৩ এপ্রিল ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করেছে সুপ্রিম করলো। ২০১৬’র স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের প্যানেলই বাতিল হয়েছে।
১৭ এপ্রিল, আরও এক বৃহস্পতিবার, সু্প্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয় ‘টেইন্টেড’ এবং ‘আনটেইন্টেড’ চিহ্নিত করতে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যারা এসএসসি তালিকায় ‘টেইন্টেড’ নন তাঁরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকতার কাজে বহাল থাকতে পারবেন। কিন্তু ২০১৬ সালের এসএসসি তালিকায় ‘গ্রুপ সি’ এবং ‘গ্রুপ ডি’ কর্মীরা এর মধ্যে পড়ছেন না। কারণ স্কুলগুলিতে পড়াশোনা চালু রাখার স্বার্থ জানিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে স্পষ্ট করে বলেছে, এই সব পদে নতুন করে নিয়োগ করতেই হবে। যাঁরা ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করবেন তাঁরা কোনও বাড়তি সুবিধা পাবেন না। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে মে’র মধ্যে। শীর্ষ আদালতে হলফনামা দাখিল করে তা জানাতেও হবে।
ফলে, ৩ এপ্রিল চাকরি বাতিলের রায়ে কোনও বদল হয়নি। কেউ মোটেই চাকরি ফিরে পেলেন না। যোগ্যরা কাজ হারালেন এসএসসি, পর্ষদ এবং রাজ্য সরকারের জন্য। এই তিন পক্ষই কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে চাকরি জালিয়াতিকে আড়াল করে গিয়েছে। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ আরও বলেছে, আগামী ৩১ মে’র মধ্যে এসএসসি-কে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশে এই সঙ্গেই বলেছে, এসএসসি-কে ৩১ মে’র মধ্যে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই তারিখের আগেই হলফনামার মাধ্যমে আদালতকে তা জানতে হবে।
উল্লেখ্য, টেইন্টেড এবং আনটেইন্টেড যে ভাগ তা সিবিআইয়ের জমা দেওয়া নথি থেকে পাওয়া গিয়েছে। সিবিআই তদন্তে দেখা গিয়েছে একাধিক ব্যক্তি যারা ওএমআর-এ শূন্য পেলেও নাম আছে ২০১৬ সালের এসএসসি তালিকায়। আবার এমন অনেক নামও আছে যেখানে প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নিয়োগ হয়েছে। প্যানেলের বাইরে থেকে চাকরি অস্বচ্ছ বা টেইন্টেড বলেছে সুপ্রিম কোর্টই।
প্রশ্ন একটাই, এসএসসি বা সরকার যদি আদালতের কাছে যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা জমা দিত তাহলে কি আজ এই সঙ্কট তৈরি হতো?
কেন এসএসসি বার বার বলা সত্ত্বেও তালিকা জমা করলো না। চাকরি চলে যাওয়ার পর লক্ষাধিক মানুষ যখন সঙ্কটের মুখে তখন সরকার এবং শিক্ষামন্ত্রী বলছে ২১ এপ্রিলের মধ্যে যোগ্য এবং অযোগ্য তালিকা তৈরি করা সম্ভব।
গত ৩ এপ্রিল প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, কলকাতা হাইকোর্ট যে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল, সেখানে কোনও হস্তক্ষেপ করা যায় না। শুধুমাত্র সেই নির্দেশের কিছু পরিমার্জন করা যায়। তাই সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, যে সমস্ত শিক্ষক অন্য কোনও সরকারি দপ্তর অথবা সরকার পোষিত দপ্তরের চাকরি ছেড়ে শিক্ষক পদে চাকরি নিয়েছিলেন, তাঁরা পুরানো দপ্তরে ফিরে যেতে পারবেন। সেখানে তাঁরা কোনও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন না। নতুনভাবে যে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে, সেখানে এই প্রার্থীরা সবাই পরীক্ষায় বসতে পারবেন, তাঁদের বয়স বাধা হবে না। তবে অযোগ্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়ঃসীমায় কোনও ছাড় থাকবে না। তাঁদের বেতন ফেরত দিতে হবে। বিশেষভাবে সক্ষম প্রার্থীরাও বয়ঃসীমায় ছাড় পাবেন। তাঁদের বেতন ফেরত দিতে হবে না।
Comments :0