Kashmir Martyrs' Day

ব্রিটিশের গুলিতে নিহতদের স্মরণে বাধা, কাশ্মীরে গৃহবন্দি বিজেপি বিরোধী নেতারা

জাতীয়

বাসভবনের ফটকে ঝোলানো তালা। ইউসুফ তারিগামি নিজেই সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন এই ছবি।

কাশ্মীরের শহীদ দিবসে যোগ দিতে দেওয়া হবে না বিরোধী নেতাদের। কেন্দ্রের প্রতিনিধি উপ রাজ্যপালের নির্দেশে তালা ঝোলানো হলো বিরোধী নেতাদের বাসভবনে। গৃহবন্দি করা হয়েছে বিধায়ক এবং সিপিআই(এম) নেতা ইউসুফ তারিগামিকেও। 
তারিগামি জানিয়েছেন যে তাঁর বাসভবনের বাইরের গেট শিকলে বেঁধে তালা দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে।
পরাধীনতার পর্বে জম্মু ও কাশ্মীরের ডোগরা রাজের শাসনে গুলি চালনায় নিহত হয়েছিলেন ২২ জন। ১৯৩১’র ১৩ জুলাইয়ের সেই ঘটনার প্রভাব গভীর। ভারতের সঙ্গে সংযুক্তির পরও এই দিনটিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিপুল অংশের মানুষ এই দিনটি ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও শ্রদ্ধা জানায়। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর এই দিন পালন বন্ধ করা হয়েছে। বিজেপি এর আগেও এই দিনটি পালনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরকে ভেঙে দু’টুকরো করার পাশাপাশি কেড়ে নেওয়া হয়েছে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদাও। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নির্বাচিত সরকারের হাতে নেই পুলিশ ও সুরক্ষা বাহিনী। সেই দায়িত্ব কেন্দ্রের তরফে সামলান উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্‌হা। তিনিই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
বিরোধী নেতাদের বন্দি করার তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। 
ওমর বলেছেন, ‘‘এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের কাছে ১৩ জুলাইয়ের এই হত্যাকাণ্ড জালিয়ানওয়ালাবাগের মতোই যন্ত্রণার। ব্রিটিশ শাসনের জোরে তখন রাজ্যশাসন চালানো হতো। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়েই শহীদ হয়েছিলেন ১৩ জুলাই নিহতেরা। কেবল ধর্মে তাঁরা মুসলিম বলে দিনটিকে পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ 
তারিগামি বলেছেন, ‘‘১৩ জুলাই শহীদদের শ্রদ্ধা যাতে জানাতে না পারি তার জন্য আমার বাসভবনের দরজায় তালা ঝোলানো হলো। এই দিনটি সম্মিলিত বিচারে আমাদের যন্ত্রণার দিন। আমাদের উন্নত ভবিষ্যত এবং গণতন্ত্রের দাবিতে সেদিন এই সংগ্রামীরা প্রাণ দিয়েছিলেন।’’ 
কাশ্মীরের নেতাদের গৃহবন্দি করা হলেও প্রশাসনিক স্তর থেকে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। এর আগে সংসদে ৩৭০ ধারা বাতিলের সময়েও এমন কাণ্ডই করেছিল বিজেপি সরকার। 
ওমর বলেছেন, ‘‘বিরোধী নেতাদের ঘরে তালাই কেবল ঝোলানো হয়নি। বাড়ির সামনে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রীনগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথে পাহাড়া বসানো হয়েছে। যাতে ব্রিটিশের গুলিতে নিহতদের কবরে শ্রদ্ধা পর্যন্ত জানানো না যায়। কোন শৃঙ্খলা, কোন আইন ভাঙার আশঙ্কায় এমন পদক্ষেপ বোঝা অসম্ভব।’’

Comments :0

Login to leave a comment