Job Scam

চাকরি হয়নি, টাকা ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ রায়গঞ্জে

রাজ্য জেলা

বিশ্বনাথ সিংহ- রায়গঞ্জ

টাকা নিয়ে চাকরি না দেওয়ায় রায়গঞ্জের তৃণমূলের নেতার স্ত্রী ও তাঁর পরিবার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখালেন চাকরিপ্রার্থীরা। বুধবার টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের সুদর্শনপুর এলাকার-২ নম্বর ওয়ার্ডে পাওয়ার হাউসের সামনে বিক্ষোভ দেখান আদিবাসী মানুষ।  
চাকরি দেওয়ার নাম করে বেকার যুবক-যুবতী ও তাঁদের অভিভাবকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রবল। বিক্ষোভকারীরা বলেছেন তাঁদের থেকে টাকা তুলে পাঠানো হতো রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তৃণমূল নেতা পার্থ চ্যাটার্জির কাছে। 
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এখন জেলবন্দি পার্থ চ্যাটার্জির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক ছিল রায়গঞ্জের তৃণমূল নেতা প্রয়াত পল্লব ঝায়ের। গ্রাম থেকে শহরে বিশাল প্রভাব ছিল তাঁর। তৃণমূলের রায়গঞ্জ ব্লকের বর্ষীয়ান গ্রামে বাড়ি ছিল এই তৃণমূল নেতার। চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তাঁর স্ত্রী লক্ষী ঝা, সেই টাকায় সম্পত্তি আরও বেড়েছে। রয়েছে বিশাল প্রাসাদ। 
বুধবার টাকা ফেরানোর দাবিতে রাজপ্রাসাদের গেটের সামনে চলল বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, চাকরি হয়নি কিন্তু কয়েক কোটি টাকা হাতে হাতে নিয়েছেন প্রয়াত তৃণমূল নেতা ও তাঁর স্ত্রী। 
এদিন আদিবাসী বহু যুবক তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা জানিয়েছেন যে চাকরি না হলে টাকা ফেরত পাবেন ভেবেছিলেন। পার্থ চ্যাটার্জি নিয়োগ দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার হতেই উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসককে বিষয়টি জানান। তারপর কেটে গেছে অনেক দিন। তবুও টাকা ফেরত হয়নি। অধৈর্য হয়ে এদিন বিক্ষোভে শামিল হলেন চাকরিপ্রার্থী আদিবাসী মানুষেরা।
রায়গঞ্জের সুদর্শনপুর এলাকার ২ নাম্বার ওয়ার্ডে পাওয়ার হাউসের পাশে বিশাল বাড়ির সামনে প্রয়াত তৃণমূল নেতা পল্লব ঝা তাঁর ভাই বিপ্লব ঝাঁয়ের বাড়িতে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ঘটনার খবর পেয়েই বিক্ষোভের মাঝে রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী এসে যাতে কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য আদিবাসী মানুষদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবুও তারা জানান যে যতক্ষণ পর্যন্ত টাকা দেওয়ার আশ্বাস না দেয় ততক্ষণ তারা এখান থেকে যাবেন না। আবার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হয়। যাতে অভিযুক্তদের সঙ্গে বসিয়ে একটি সমাধান সূত্র বের করার।
আদিবাসী সমাজের নেতা সনাতন মুর্মু বলেন, ‘‘শুরু হয়েছিলো ২০১২ সাল থেকে।  এই টাকা দিয়ে আসছেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত। তৃণমূল এজেন্টের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার বাইরে থেকেও বিভিন্ন জেলা আদিবাসী মানুষেরা টাকা দিয়েছিল। পুলিশ প্রশাসন কতদিন প্রতারকদের রক্ষায় থাকবে জানা নেই। কয়েককোটি টাকা ফেরত না পেলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেবে আদিবাসী সমাজ। গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি তে চাকরির আশায় কয়েক কোটি টাকা নিয়েছিলো পল্লব ঝা, স্ত্রী লক্ষী ঝা, ভাই বিপ্লব ঝা। চাকরি তো হয়নি। ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে এবার টাকা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ভুক্তোভোগী মানুষগুলি।

Comments :0

Login to leave a comment