Share market Shah Congress

মোদীর দাবিতে ভরসা নেই শেয়ারবাজারেরও, পালটা কংগ্রেসের

জাতীয়

শেয়ার বাজার টালামাটাল। এই সত্য আর আড়াল করার অবস্থায় নেই। অমিত শাহ বলছেন ৪ জুনের আগে শেয়ার কিনতে। রবিবার এমন মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রনেশ বলেছেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই শেয়ার বাজারে ওঠাপড়া চলছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ভয় দেখাচ্ছেন। পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয় চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। মনে করিয়ে দিতে চাই যে কংগ্রেসের নেতা মনমোহন সিংয়ের প্রধানমন্ত্রিত্বে দেশে সর্বাঙ্গীন বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও বজায় ছিল।’’
রমেশের মন্তব্য, ‘‘৪ জুন ফলাফল বেরনোর পর সরকার গড়বে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ। স্থিতিশীল, অনুমানযোগ্য অর্থনীতিই তৈরি করবে। নীতির অভিমুখে সর্বাঙ্গীন সমৃদ্ধি দেবে।’’ 
শেয়ার বাজার টালমাটাল কেন? তা’হলে কী ‘চারশো পার আসন’ স্লোগানের পরও ব্যবসায়িক মহল, আন্তর্জাতিক লগ্নিকারীরা নিশ্চিত হতে পারছেন না? তাই কী সরে যাচ্ছে বিনিয়োগ? আসলে বিজেপি নিজেই কী নিশ্চিত নয় সরকারে ফেরার বিষয়ে?
এমন একগুচ্ছ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে গত কয়েকসপ্তাহ ধরে। ভোটের দফা যত এগচ্ছে ততই শেয়ার বাজারে অস্থিরতা নজরে এসেছে। তা নিয়েই একটি সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়েছিল অমিত শাহকে। তিনি বলেন, ‘‘শেয়ার বাজারের ওঠাপড়ার সঙ্গে নির্বাচনকে জড়ানো ঠিক নয়। তবু কারও অনিশ্চয়তা থাকলে বলব ৪ জুনের আগেই শেয়ার কিনতে। ফল বেরনোর পর শেয়ারের দাম বাড়বে।’’ 
শাহের বক্তব্যকে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ টানার কৌশল মনে করছে বিভিন্ন অংশ। বাস্তবে তা হলে অস্থিরতাও খানিক কমবে বলে মত এই অংশের। রবিবার প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীও মন্তব্য করেছেন শেয়ার বাজার সম্পর্কে। লগ্নিকারী বা ব্যবসায়ী মহলও যে তাঁর সরকার গড়ার দাবিতে যথেষ্ট আস্থাশীল নন, স্পষ্ট হয়েছে। মোদী তাই ফের দাবি করেছেন, ‘‘ঐতিহাসিক জয় হবে এনডিএ’র।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শেয়ার বাজারও ৪ জুনের পর নতুন রেকর্ড করবে।’’ আস্থা ফেরানোর চেষ্টায় মোদী ‘আগামী হাজার বছরের দৃষ্টিভঙ্গি’ বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। 
চারশো পার তো দূর, মোদী ফিরবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে ভোটপরব গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে। রামমন্দির, মুসলিম, মাংসভক্ষণ, মঙ্গলসূত্রের যাবতীয় উপাদান ভাষণে রেখেও কোনও জিগির তৈরি হচ্ছে না উগ্র হিন্দুত্ববাদের পক্ষে। ভোটের হার বস্তুত গতবারের তুলনায় কমতে দেখা গিয়েছে, বিশেষ করে, প্রথম তিন দফায়। যার অর্থ, নতুন ভোটে মোদীর নতুন হাওয়া তৈরির কৌশল কাজ করছে না। 
উলটোদিকে ‘ইন্ডিয়া’-র প্রচারে ভিড় ভেঙে পড়তে দেখা যাচ্ছে। উত্তর প্রদেশের ফুলপুরে এদিন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের সভায় পদপিষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়। সভা না করে চলে যেতে হয় তাঁদের। 
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘‘মনে রাখুন মনমোহন সিংয়ের প্রধানমন্ত্রিত্বের দশ বছরে আর্থিক বৃদ্ধির গড় হার মোদীর তুলনায় বেশি থেকেছে। বেসরকারি বিনিয়োগের হারও বেশি ছিল। তা ছাড়া কারখানা উৎপাদন ক্ষেত্রের ভাগ মোট জাতীয় উৎপাদনের অংশে গত দশ বছরের তুলনায় বেশি ছিল।’’
রমেশ বলেছেন, ‘‘নোট বাতিল, জিএসটি এবং লক ডাউন অর্থনীতিকে ধ্বস্ত করেছে মোদীর সময়ে। ভারতে অনিশ্চয়তা এবং ভয়ের পরিবেশও বিনিয়োগ সরিয়ে দিয়েছে। বিনিয়োগ চলে গিয়েছে দুবাই, লন্ডন বা সিঙ্গাপুরে। ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ সরকার গড়ে অবিশ্বাস এবং ভয় কাটানোতেই সবচেয়ে প্রথমে গুরুত্ব দেবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment