PROBANDHA — MUKTADHARA | PALLOV MUKHAPADHAYA | MUKTADHARA — 8 MAY 2024

প্রবন্ধ — মুক্তধারা | পল্লব মুখোপাধ্যায় — মুক্তধারা | ২৫ শে বৈশাখ | ৮ মে ২০২৪

সাহিত্যের পাতা

PROBANDHA  MUKTADHARA  PALLOV MUKHAPADHAYA  MUKTADHARA  8 MAY 2024

প্রবন্ধ

মুক্তধারা
পল্লব মুখোপাধ্যায়

২৫ শে বৈশাখ

মুক্তধারা

নানাবিধ সংকীর্ণতা, অশুভবোধ ও আত্মক্ষয় থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন এক
মহান দার্শনিক। তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ। এদেশের মানুষের মধ্যে মানবিক
ধ্যানধারণা উজ্জীবনের জন্য এবং বিচিত্র সংস্কৃতির দেশ ভারতের ঐক্যের স্বরূপ
উপলব্ধি করার জন্য তিনি আমৃত্যু সচেষ্ট ছিলেন। এদেশ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের
ভাবনা ও প্রত্যয় আজ আরও বেশি বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে দেখা দিয়েছে। সার্বিক সংকট
ও আত্মকলহের তমসা থেকে তিনিই পারেন দেশের আপামর জনসাধারণকে সত্য-স্বরূপ
উপলব্ধি করাতে। উদার ভারতীয় সংস্কৃতি, অনন্য ভারতীয় সমন্বয়-ভাবনা, পরমত
সহিষ্ণুতার আবহমানকালের ঐতিহ্য,"মিলি সবে ভারতসন্তানের" দার্শনিকবোধ এবং
প্রতিকূলতার মধ্যেও সংহতি ভাবনার স্বরূপ উপলব্ধি করতে রবীন্দ্রনাথ আমাদের
পরম আশ্রয় হয়ে রয়েছেন।

মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর চিরদিন গুরুত্ব দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। জীবনের
শেষ দিন পর্যন্ত প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবেসেছেন। তাঁর কাছে মানবধর্মই শ্রেষ্ঠ
ধৰ্ম। পৃথিবীতে এর থেকে বড় ধৰ্ম সৃষ্টি হয়নি। সভ্যতা, শান্তি, প্রগতিকে অটুট
রাখতে এর বিকল্প নেই | এই অস্থির সময়ে চারদিকের হিংসা, দ্বেষ, হানাহানি-র মাঝে
মানুষের একমাত্র আশ্রয় মানবধর্ম - মানবিকতা। অশান্তির হাজারও বেসুরের মধ্যে
প্রতিনিয়তই একটি সুর ধ্বনিত হচ্ছে। সেটি শান্তির সুর। নানাবিধ অশান্তির মাঝে এই
অক্ষত শান্তির কথা বারংবার শুনিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ আজ
আমাদের অবিচলিত পথপ্রদর্শক।

যাবতীয় তুচ্ছতা, ভেদাভেদ, সংকীর্ণতা ও সম্প্রদায়গত বিভেদের উর্ধে যিনি অনির্বাণ
প্রদীপ জ্বালানোর সাধনায় আজীবন ব্রতী ছিলেন তিনি রবীন্দ্রনাথ।

বাংলার সংস্কৃতিতে তাঁর "উজ্জ্বল উপস্থিতি"-কে স্মরণ করেই "গণশক্তি" পত্রিকার
"সাহিত্যপত্র"-র নামকরণ হয়েছে "মুক্তধারা"। ‘অচলায়তন’-কে ভেঙে "চরৈবেতি" মন্ত্রে
এগোনোই লক্ষ্য "মুক্তধারা"-র। রবীন্দ্র-অনুধ্যান ও জীবনদর্শন বিশ্লেষণের নিবিড়
পাঠে মগ্ন"মুক্তধারা"। এ এক সুস্থ অন্বেষণ। চতুর্দিকের অমানবিক হানাহানি ও
কুৎসিত কলুষতার মুখোমুখি এক সংকটময় অবস্থায় অতিবাহিত হচ্ছে এদেশের
জনজীবন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের উজ্জ্বল মননের উত্তরাধিকার স্বীকার করে
প্রদীপখানি জ্বালানোর মহান ব্রতে পথ চলার প্রথম দিন থেকেই রত "মুক্তধারা" যাতে
সামাজিক তমসাকে অপসারিত করা সম্ভব হয়। জয় হোক অন্তহীন মানবতার।

Comments :0

Login to leave a comment