দীপশুভ্র সান্যাল: জলপাইগুড়ি
ডুয়ার্সের জঙ্গল, দার্জিলিং কালিংপঙ এ গ্রীষ্মের ছুটিতে পর্যটক উপচে পরলেও সেতু বন্ধ থাকায়, পর্যটকশূন্য গজলডোবায় ব্যবসায় ধস! কি করবেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা? ভেবেই মাথায় হাত পড়েছে তাদের। তিস্তা ব্যারেজের সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কার্যত ভেঙে পড়েছে গজলডোবার পর্যটন ও ব্যবসা।
গতকয়েকদিন স্কুলে গরমের কারণে পর্যটক ঠাসা ডুয়ার্সের জঙ্গল থেকে শুরু করে দার্জিলিং, কালি়ংপঙ এর পাহাড়। অথচ ছুটিতে যেখানে গজলডোবায় পর্যটকে উপচে পড়ার কথা, সেখানে চারিদিকে শুনশান নিস্তব্ধতার ছবি উঠে এসেছে। কিন্তু কেন এই বদল? জানা গিয়েছে, গত ২৭ এপ্রিল থেকে সংস্কারের জন্য তিস্তা ব্যারেজের সেতু দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। শুধু ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই। ফলে ডুয়ার্স কিংবা পাহাড় থেকে আসা পর্যটকরা গজলডোবা এড়িয়ে সেবক হয়ে সরাসরি চলে যাচ্ছেন শিলিগুড়ি। স্থানীয় দোকানদার নির্মল মণ্ডল জানান, ‘‘লাটাগুড়ি, ওদলাবাড়ি বা মাদারিহাট থেকেও স্থানীয় মানুষ ও এসমস্ত যায়গায় ঘুরতে আসা পর্যটকরা আসতেন গজলডোবায়। এখন কেউই আর আসছেন না।’’
অন্যদিকে, মনোরঞ্জনের জন্য ব্যাটারিচালিত গাড়ি, সাইকেল রাইড, নৌকাবিহার পরিষেবাও এখন পুরোপুরি স্তব্ধ। পাখি বিতান অভয়ারণ্যের ৭২টি নৌকা পড়ে রয়েছে। নৌকা চালকদের মুখে একরাশ হতাশা। সমিতির প্রতিনিধি নিমাই মণ্ডল আক্ষেপের সঙ্গে জানালেন, “ ছুটির মরসুমে মাত্র সাতজন পর্যটক এসেছেন হয়তো বেলাকোবা হয়ে গজলডোবা পৌঁছনোর দীর্ঘ পথ বেহাল, শর্টকাট রাস্তাও এখন পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করছে।’’
এজেন্সি চালক অশোক দাস জানালেন, ‘‘গাড়ি, সাইকেল সব তৈরি ছিল, কিন্তু পর্যটকের দেখা নেই। ব্যবসা বন্ধ হওয়ার মুখে।’’ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘সেতু সংস্কারের কাজ হতে ১৪০ দিন সময় লাগবে প্রশাসন ঘোষণা করেছে! এতদিন যদি এমনই চলে, তাহলে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবার চালানোই দায় হবে।” পর্যটনের প্রাণস্বরূপ গজলডোবা আজ নিঃশব্দ। পর্যটকদের জন্য ওই এলাকায় এক বাজার বসে যেখানে স্থানীয়রা সবজি, তিস্তার বোরলি মাছ সহ নদীর অন্যান্য মাছ নিয়ে বসেন বিক্রীবাট্টা না হওয়ায় সেই বাজার প্রায় বন্ধের মুখে। একটি সেতু যেন গোটা অঞ্চলের জীবিকার বুকে ছুরি চালিয়ে দিয়েছে! পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে গাজলডোবা সেই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে দিন গুনছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে স্থানীয় মানুষজন।
Gajoldoba
পর্যটকশূন্য গজলডোবা, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

×
Comments :0