death by wall collapses

দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত মা ও দুই মেয়ে, আর্থিক সাহায্য পরিবারকে

জেলা

মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন মা ও তাঁর দুই কিশোরী কন্যা। দুর্ঘটনাটি ঘটে মন্দিরবাজার থানার আঁচনা অঞ্চলের রামনাথপুরের কর্মকার পাড়ায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা হলেন মা বৃহস্পতি কর্মকার (৪৫) ও তাঁর ২ কন্যা শীলা কর্মকার (১৫) ও প্রিয়া কর্মকার (১০)। মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে। 
মর্মান্তিক এই মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। শুক্রবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা। পুলিশের লাঠিচার্জ করলে জখম হয়েছেন খোকন কর্মকার নামে এক ব্যক্তি। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার মৃতদের বাড়িতে আসেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গাঙ্গুলি। ছিলেন সিপিআই(এম) মন্দিরবাজার এরিয়া কমিটির সম্পাদক মিহির সরদার সহ নেতৃবৃন্দ। মৃতদের পারলৌকিক ক্রিয়ার জন্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর তরফ থেকে মৃতার পুত্র কিরণ কর্মকারের হাতে তিনি ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। কান্তি গাঙ্গুলি অসহায় এই পরিবারকে রাজ্য সরকারের আর্থিক সহায়তা করার দাবি জানান।      
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে আচমকা মাটির ঘরের দেওয়াল ভেঙে পড়ে। রাত প্রায় ১ টা। ঘর ভেঙে পড়ার শব্দ পেয়ে তাঁরা বেড়িয়ে আসেন। ৩ জনকে উদ্ধার করে মন্দিরবাজার ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। 
গ্রামবাসীদের কথায়, বছর ছয়েক আগে স্বামীর মৃত্যুর পর হতদরিদ্র বৃহস্পতি কর্মকার পরিচারিকার কাজ করে ১ পুত্র ও ২ কন্যাকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন। মাটির দেওয়ালের উপর বাঁশ ও ত্রিপলের ছাউনির ঘরে বাস করতেন। অভিযোগ, বারবার আবেদন করা সত্বেও আবাস যোজনায় তালিকা ভূক্ত করা হয়নি এই পরিবারকে। পরবর্তী সময়ে বাংলা আবাস যোজনায় তালিকা ভূক্ত হওয়ায় প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে ইটের ঘর তৈরি হচ্ছিল। দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও গত ৩০ আগস্ট ব্যাঙ্কে এসেছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মাটির দেওয়াল নরম হয়েছিল। ঘরের দেওয়ালের উপর থাকা বাঁশ জীর্ণ অবস্থায়। গত ১২ বছর ধরে ওই ঘরেই তাঁরা বাস করতো। দুর্ঘটনার সময় এই পরিবারের একমাত্র পুত্র কিরণ কর্মকার (২০) ঘরে না থাকায় সে প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। স্থানীয় একটি মিস্টির দোকানে সে কাজ করে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হতদরিদ্র অসহায় এই পরিবারটি আবাস যোজনার ঘর আগে পেলে এইভাবে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে ৩ জনকে প্রাণ দিতে হতো না। 
এদিন সকালে পুলিশ আসলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশ বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। 
শুক্রবার মন্দিরবাজারে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত পরিবারের বাড়িতে কান্তি গাঙ্গুলি।

মন্তব্যসমূহ :0

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন