Iran Israel

ইরান ইজরায়েল সংঘাতে মার্কিন হস্তক্ষেপ বিপদজনক, বলছে রাশিয়া

আন্তর্জাতিক

ইরান ইজরায়েল সংঘাত এবং তাতে মার্কিন মদত নিয়ে মুখ খুললো রাশিয়া। গতকাল রাশিয়া বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র মারিয়া জ্যাকরোভা সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘‘ইরান ইজরায়েল সংঘাতে মার্কিন সেনার হস্তক্ষেপ বা সমর্থন অত্যন্ত বিপদজনক। এর ফলে ভয়ঙ্কর কোন ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’’
উল্লেখ্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই এই সংঘাত বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে আসা হয়েছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এবং ইরানের রাষ্ট্রপতির সাথে এই বিষয় কথাও বলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এই মধ্যস্থতা ভেস্তে দিয়েছেন। পুতিন যে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এই সংঘাতের ইতি টানতে চেয়েছিলেন তাও স্বীকার করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি।
সাত দিনের বেশি সময় ধরে মধ্য প্রাচ্যের দুই দেশের মধ্যে শুরু হয়েছে সংঘাত। ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা গতকাল ইজরায়েলের তেল আভিভ সহ একাধিক জায়গায় ড্রোন এবং মিসাইল হামলা করেছে। ইজরায়েল সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ইরান ইজরায়েলের ওপর ৪৫০টি মিসাইল এবং ১০০০ এর বেশির ড্রোন হামলা করেছে। তবে এর বেশির ভাগ হামলা প্রতিহত করা গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ইজরায়েলের পক্ষ থেকে। উল্লেখ্য ইরানের নতুন একটি মিসাইল যাকে বিঞ্জানের পরিভাষায় বলা হচ্ছে ‘স্প্লিট মিসাইল’ তা চিন্তা বাড়িয়েছে ইজরায়েলের। ইরানের ক্লাস্টার বোমা যার মধ্যে থাকে অজস্র ছোট ছোট বোমা, উৎক্ষেপণের পর শূন্যেই খুলে যায় ক্লাস্টার বোমার অস্ত্র-মুখ। এই বোমা ইজরায়েলের একাধিক শহরে আঘাত এনেছে। 
সামরিক সংঘাতের প্রথম থেকেই ইরানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদতেই তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল।
আমেরিকার দাবি আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালাচ্ছে ইরান। ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাক চায় না ট্রাম্প প্রশাসন। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে এই বিশুদ্ধতার পরিমাণ আরও কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে ইরানকে। এই নিয়ে আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে বৈঠকের কথা হলেও তা বার বার ভেস্তে গিয়েছে। ৬০ দিনের সময় সীমা বেধে দিয়েছিল মার্কি যুক্তরাষ্ট্র সেই সময়ও পার করে গিয়েছে।
ইরানের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রপতি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ‘‘মার্কিন অস্ত্র, গোয়েন্দা তথ্য এবং রাজনৈতিক মদত ছাড়া এই আক্রমণ ঘটতে পারত না। এই বেআইনি কাজের জন্য আমেরিকাও দায়ী থাকবে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইরান ইজ়রায়েলে আক্রমণ করেনি। ইরান কোনও যুদ্ধ শুরু করেনি। অস্তিত্বসঙ্কটের যে গল্প ওরা শোনাচ্ছে, তা মিথ্যা।’’ ইরানের কথায় তারা ইজরায়েলের ওপর হামলা চালিয়েছে আত্মরক্ষার জন্য।
চলতি পর্বে ইজরায়েলের হামলায় তিনটি উদ্দেশ্য সামনে এসেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। 
এই অংশের মত অনুযায়ী একটি উদ্দেশ্য হলো, পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করিয়ে আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি সই করতে ইরানকে বাধ্য করা। দুই, পশ্চিম এশিয়ায় মুলুক দখলে বাধা দেওয়ার মতো কেউ আর না থাকে নিশ্চিত করা। ২০২৩’র অক্টোবরের পর হামাস এবং হিজবোল্লার একাধিক শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে ইজরায়েল। তিন, ইরানে জমানা বদল বা আমেরিকার ‘রেজিম চেঞ্জ’ নীতি কায়েম করা।

Comments :0

Login to leave a comment