PBSU Kolkata

কলকাতার ৪০০ বস্তিতে কমিটি গড়েছে বস্তি উন্নয়ন সমিতি

কলকাতা

পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি ১২তম কলকাতা জেলা সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তৃতা দিচ্ছেন অশোক ভট্টাচার্য

অরিজিৎ মণ্ডল

বিভাজন আছে। হুমকি আছে। বিপথে চালানোর সব সরঞ্জাম আছে। সংগ্রামও আছে। কলকাতায় ৪০০ বস্তিতে কমিটি গড়েছে পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি। 
কলকাতা জেলার ১২ তম সম্মেলনে প্রতিনিধি আলোচনায় উঠে এলো এই কথাই।
শনিবার সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির রাজ্য সভাপতি অশোক ভট্টাচার্য। প্রথমে পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদান হয়। তারপরে সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী জেলা কমিটির সম্পাদক শিবেন্দু ঘোষ। এদিন অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কলকাতাকে কেন্দ্র করে বস্তি সৃষ্টি হওয়ার কারণ ছিল নগরায়ন। কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় ছোট-মাঝারি বা বৃহৎ শিল্প গড়ে উঠেছিল। দেশের রাজধানী এককালে ছিল কলকাতায় তাই শ্রমজীবী মানুষ কলকাতাতে কাজের খোঁজে আসতেন। বর্তমানে তারা আসেন না। কারণ অর্থনৈতিক যে পরিকাঠামো ছিল তা নষ্ট হয়ে গেছে।’’ 
তিনি বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট সরকার এই বস্তিবাসীদের জন্য প্রজাস্বত্ত্ব আইন করেছিল। যার ফলে কর্মস্থলের আশেপাশেই তারা বসবাস করতে পারে। বর্তমানে বস্তি গুলি প্রোমোটারদের হাতে চলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় বস্তির চরিত্র পরিবর্তন হচ্ছে।’’
ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘ বর্তমানে সরকার এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে যেখানেই বস্তিবাসী মানুষের অর্থনৈতিক কাঠামো তাদের ভেঙে পড়ে। এর বিরুদ্ধেই আমাদের আন্দোলন তৈরি করতে হবে। কলকাতায় বস্তির সংখ্যা বেশি থাকার জন্য এখানে আমাদের সংগঠনের ব্যপ্তিও বেশি। ফলে আমাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ধরে বস্তির ভিতর গিয়ে বস্তি ভিত্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।’’ 
খসড়া প্রতিবেদন পেশের সময় বিদায়ী জেলা সম্পাদক শিবেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘স্থায়ী বাসস্থানের দাবিতে আমাদের সংগঠনের গড়ে ওঠা। বস্তি অঞ্চলে যে মানুষ থাকেন, উৎপাদনের ভিত্তিতে, কাজের ভিত্তিতে, তাঁদের কাজের অধিকার আজকে বিপন্ন।’’
তিনি বলেন, ‘‘যে নতুন অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে এসেছে যে পরিস্থিতি আমরা মোকাবিলা করেছি তা উল্লেখযোগ্য। ব্রিগেড সমাবেশের আগে শেষ ছয় মাস বিভিন্ন এলাকায় যেভাবে সভা হয়েছে প্রচার হয়েছে তার এক নিবিড় যোগাযোগ তৈরি হয়েছে মানুষের সঙ্গে।’’
খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের প্রতিদিনের আন্দোলনের বার্তা তা পৌঁছে গিয়েছে বস্তিগুলিতে। একদিকে যেমন সাংগঠনিকভাবে আমরা শক্তিশালী হয়েছি, ঠিক অন্যদিকে নতুন নেতৃত্ব উঠে এসেছে। এই সম্মেলন করার সময় গোটা কলকাতা জুড়ে প্রায় ৪০০টি বস্তি কমিটি তৈরি হয়েছে। প্রতিটি বস্তি কমিটিতে বসে সম্মেলন হয়েছে।  শিবেন্দু ঘোষ জানিয়েছেন যে রুটি-রুজির প্রশ্নে, স্থায়ী বাসস্থানের প্রশ্নে, পৌর পরিষেবার উন্নতির জন্য, নিকাশি সমস্যা, স্মার্ট মিটার নিয়ে সংগঠিত আন্দোলন তৈরি করেছি।  
সংগঠনের দাবি, রেশন ব্যবস্থা বন্ধ করা যাবে না। বস্তিতে ২০০ ইউনিট বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দিতে হবে। পেট্রোল ডিজেল রান্নার গ্যাস দাম কমাতে হবে। কলকাতা পৌরসভা বস্তি খাতে বাজেট বাড়াতে হবে। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের সামাজিক নিরাপত্তা দিতে হবে। সামাজিক প্রকল্পের ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment