জানা অজানা — নতুনপাতা - বর্ষ ৩
যে পাখিদের বিয়ে হয়
তপন কুমার বৈরাগ্য
সুন্দর জীবন্ত প্রাণী সুন্দরকে ভালোবাসে। পৃথিবীতে এই শ্রেণির পুরুষ পাখিরা নারী পাখিদের আকৃষ্ট করার জন্য পৃথিবীর মধ্যে সুন্দর বাসা তৈরী করে। পাখিগুলোকে অপূর্ব সুন্দর দেখতে।
আমাদের দেশের পায়রা পাখিদের মতন এরা আকৃতিতে হয়। নিউ পাপিয়া গিনিতে এই ধরনের পাখি দেখা । ওজন প্রায় ৫০০গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। লম্বায় আট থেকে দশ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। এদের বলা হয় বাওয়ার বার্ড বলে। এই পাখিরা সোনালি,হলুদ এবং কালো দাগ
যুক্ত হয়। শান্ত স্বভাবের এই পাখিগুলো প্রীতি ও ভালোবাসার প্রতীক। প্রত্যেক পুরুষ পাখিরা বাবলা বা ইউক্যালিপটাস গাছে বাসা বাঁধে।বহু মেহনত করে এরা বাসা তৈরি করে।একটা বাসা তৈরি করতে প্রায় ছ'মাস সময় লাগে।কারণ এরা বিভিন্ন
রঙিন জিনিস খুঁজতে শহরে চলে যায়।পঞ্চাশ কিমি দূরের শহর থেকেও পুরুষ পাখি একা এই জিনিসগুলো সংগ্রহ করে আনে।বহু পরিশ্রম করে বাওয়ার বার্ড একা এই ধরনের অপূর্ব সুন্দর বাসা তৈরী করে । এতো সুন্দর বাসা পৃথিবীতে আর একটাও দেখা যায় না।তাদের উদ্দেশ্য নারী পাখীকে বিয়ে করা।জগতের যতো সুন্দর জিনিস আছে সেই দিয়ে
পুরুষ পাখী বাসা তৈরির পর বাসায় অপেক্ষা করে থাকে নারী পাখী আসার জন্য।এই রকম সকল পুরুষ পাখীরাই আলাদা আলাদা ভাবে বাসা তৈরী করে।এরপর নারী পাখিরা যার যেখানে ইচ্ছে হয় সেই পুরুষ পাখীর কাছে আসে। তারপর তাদের বিয়ে হয়।বাসায় পুরুষ এবং নারী পাখি গোলাকার ভাবে কয়েকবার ঘোরে।যেন মানুষের মতন তারা সাতপাকে বাঁধা পড়ে।
বিয়ের পর কেউ কাউকে ছেড়ে যায় না ।পুরুষ পাখি নারী পাখীর সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেয়।এমনকি নারী পাখির জন্য সে খাদ্য সংগ্রহ করে পর্যন্ত নিয়ে আসে। বিয়ের একমাস পর স্ত্রী পাখি ডিম পারে।দিন পনের পর ফুটফুটে সুন্দর একটা বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে। সন্তানের সব দায়িত্ব মা বাবার মা তার সন্তানকে কোনো সময় চোখের আড়ালে রাখে না।
এমন সন্তান প্রীতি খুব কম পাখির মধ্যেই দেখা যায়।পুরুষ পাখী আর নারী পাখী কেউ কখনো কাউকে ছেড়ে যায় না। বিয়ের আগেই পুরুষ পাখী একবার মাত্র বাসা তৈরী করে। সারাজীবন সেই বাসার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকে নারী পাখীর।
Comments :0