প্রতীম দে
মিথ্যা খবর ছড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ‘অপারেশন সিন্দুর’-র সময়েও ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়েছে। অথচ সংবিধানের পক্ষে, দেশের পক্ষে কথা বললে সেই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
‘সংবিধান বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’ কনভেনশনে একথা বলেছেন ‘দ্যা ওয়ার’-র সংবাদ পোর্টালের সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরাদরাজন।
এদিন কনভেনশনে আহয়ায়কদের তরফে কল্লোল মজুমদার ও প্রসেনজিত বসু বলেন, দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও সংবিধান আক্রান্ত। কারণ গণতন্ত্রকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে এ রাজ্যে। সে কারণে সংবিধান রক্ষার পক্ষে একজোটে বড় লড়াইয়ে নামতে হবে।
বরদারাজন বলেন, সংসদ বা আদালত সংবিধানকে রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে না। এই অবস্থায় সার্বভৌম জনতাই সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব নিতে পারে। এই দাবি উঠবে সরকারকে সংবিধান মেনে চলতে হবে। যখন তা হবে না, তখন জনতার অধিকার রয়েছে সরকারের থেকে জবাবদিহি চাওয়ার।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা আক্রমণের মুখে। সরকার এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে জনতার মধ্যে অনিশ্চয়তা তীব্র। আপনি কোনও বক্তব্য জানালে তা নিয়ে এফআইআর দায়ের হয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম, বা হরিয়ানার কোনও অধ্যাপক মত জানালে হেনস্তার মুখে পড়তে হবে। যেমন মেহমুদাবাদ সংবিধানকে রক্ষার কথা বলেছিলেন। সরকার অপারেশন সিন্দুরের পরদিনই অবস্থান স্পষ্ট করেছিল। আলি খান মেহমুদাবাদ সে কথাই বলেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, যাঁরা যুদ্ধ যুদ্ধ বলছে তাঁরা সরকারের অবস্থান জানেন না। তার জন্য তাঁকে জেলে যেতে হলো!
সুপ্রিম কোর্টে মামলা গেল। যে কেউ বুঝতে পারে তিনি কী বলছেন। অথচ সুপ্রিম কোর্ট তা বোঝার জন্য কমিটি পড়ল! তাঁর জামিন হলেও এটিই পরিস্থিতি।
অধ্যাপক, সাংবাদিক, ছাত্রছাত্রী- কেউ কোনও প্রতিবাদের কথা জানালে তাঁকে জেল যেতে হতে পারে। হাথরসে সিদ্দিকি কাপ্পানের ঘটনা আমরা দেখেছি।
সভাপতিমণ্ডলীর পক্ষ থেকে কল্লোল মজুমদার বলেন, কনভেনশন যাতে না হয় তার জন্য রাজ্য সরকার চেষ্টা চালিয়েছে। ১০ দিন আগেও আবেদন জানিয়ে মহাজ্যতি সদন দেওয়া হয়নি। কনভেনশন যা প্রস্তাব তা গোটা দেশে সংবিধানের ওপর আক্রমণের কথা তুলে ধরা হয়েছে। আঘাত আনা হচ্ছে সংবিধানের মৌলিক অধিকারের ওপর। এই শক্তির বিরুদ্ধে ব্যাপক ঐক্য দরকার।
কনভেনশনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন প্রসেনজিৎ বসু। তিনি বলেন, সংবিধানের মূল ভিত্তি- গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পর একের পর এক আঘাত নেমে আসছে। তিনি বলেন, এ রাজ্যের সরকারও সংবিধান মেনে চলে না। এ রাজ্যে গণতন্ত্রকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রয়োজনীয় প্রেক্ষাগৃহ দেওয়া হয়নি।
Comments :0