মুক্তধারা : অন্যকথা
পথের দাবী
কৃশানু ভট্টাচার্য
এই শ্রাবণেই বৃষ্টি ঝরে ,
মুছে নে তোর চোখের জল,
দ্বিপ্রহরে, মধ্যরাতে
আগুন জ্বলার গল্প বল।
আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে ,
মেঘ জমেছে দিগন্তে ,
এই সময়েই এগিয়ে চলো
শঙ্খ বাজে সীমান্তে।
ধরেই নিন না সে দিন আপাত নিরাপদ আশ্রয়ে যে মেয়েটি চলে গেল সে আমার আপনার অপরিচিত। কোনো দিন কখনো তার সঙ্গে আপনার দেখা হত না। কথা তো দূরের কথা। কিংবা ধরে নিন সে আপনার খুব পরিচিত। রোজ তাকে একটু একটু করে বাড়তে দেখেছেন। আপনি আপনার আপনজনকে তাকে দেখিয়ে বলেছেন - ঐ দ্যাখ। দেখবেন ওর চলে যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে ওর চেনা অচেনা সবাই এক কথাই ভাবছেন। নারী নির্যাতন এ দেশে , ও দেশে কোনো নতুন কথা নয়। গত কয়েক দশক ও রাজ্যে এ জাতীয় কিছু নিয়ে আন্দোলন হলে কেউ এ রাজ্যের উদাহরণ তুলেছেন। এ রাজ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠলে উঠেছে ও রাজ্যের কথা। আড়ালে আবডালে প্রতিবাদ করার অধিকার ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে অপরাধ ও অপরাধীকে রহ্মাকবচ দেওয়া হয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রতিবাদ। কামদুনি, গেদে , গাইঘাটা, পার্ক স্ট্রিট- তালিকা দীর্ঘ।
তবে এ বার কিন্তু এই পদ্ধতি কাজে লাগছে না। কারন এবার রাজপথে সেই মা , সেই বোন, সেই মেয়ে যে কোনোদিন কোনো জমায়েতে আসে নি। সেও আজ নানা পরিচিতি সত্তায় প্রতিবাদে। প্রত্যাঘাতের কৌশল বদলাচ্ছে শাসক। রাস্তা দখল , যান চলাচলে বিঘ্নকে ব্যবহার করে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরির এই রণকৌশল আজ ধীরে ধীরে সাফল্যর মুখ দেখছে। প্রতিবাদকে বড় ভয়!
যদি ধরেও নিই এ লড়াই একসময় হেরে যাবে রাষ্ট্র শক্তির রণকৌশলের সামনে তাতেও কোনো কিছু যায় আসে না। কারণ আজ হাজারো মানুষ জেনে গেলেন রাস্তা দখল করার রণকৌশল।আগামী দিনে জীবন এবং জীবিকার দাবি আদায়ে ওরা আবার রাস্তায় নামবে। ওরা যেনে নিয়েছে পথের দাবী পথেই আদায় করতে হবে। বাংলার গ্রাম নগর প্রান্তর আজ চিনে নিয়েছে দাবি আদায়ের পথ। তথ্য লোপাট, আইনী অনুশাসন সহ বিবিধ কৌশলে আপাত জয়লাভের আনন্দে মসগুল শাসক অজান্তেই এক অস্তিত্বের সংকট আবাহন করলেন। সংশয়, দ্বিধার বাধা অতিক্রম করে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াতে শিখে গেছে। জনতার আদালতে সাজা ঘোষণাও হয়ে গেছে। এবার অপেক্ষা বিস্ফোরণের। আগামী কাল থেকে শুরু হোক সে প্রতীক্ষা।
Comments :0