AIDWA State Conference

প্রান্তিক অংশকে লড়াইয়ে যুক্ত করার আহ্বান মহিলা রাজ্য সম্মেলনে

রাজ্য কলকাতা

সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্মেলনে জবাবী ভাষণে কনীনিকা ঘোষ।

পূজা বোস ও অরিজিৎ মণ্ডল

দেশে বিজেপি এবং রাজ্যে তৃণমুলের আক্রমণের মুখে পড়ছেন সাধারণ এবং প্রান্তিক মহিলারা। তার বিরুদ্ধে দেশে এবং রাজ্যে লড়াই জারি রাখবে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি। এই ঘোষণা করা হয়েছে সংগঠনের রাজ্য সম্মেলনে।  
মঙ্গলবারই শেষ হয়েছে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য ৩০ তম সম্মেলন। প্রতিনিধিদের আলোচনার শেষে জবাবী ভাষণ দেন সংগঠনের বিদায়ী রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘নতুন যাঁরা সংগঠনে আসছেন তাঁদের আগলে রাখতে হবে। বিভিন্ন জেলার ৩৬ জন প্রতিনিধি আলোচনা করেছেন। তাঁদের জেলার অভিজ্ঞতা আলোচনা করেছেন। প্যালেস্তাইনের সংহতিতে, তিলোত্তমার বিচারের দাবি মতো একাধিক বিষয়ে আমরা আন্দোলন করেছি। সংগঠনকে মজবুত করতে লড়াই করেছে আমরা। এই লড়াই জারি রাখতে হবে।’’
সম্মেলনে বারবারই এসেছে ক্ষুদ্রঋণের জালে মহিলাদের জড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গে। মহিলা সমিতিও তা নিয়ে সক্রিয় থেকেছে। কনীনিকা ঘোষ সেই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘বহুবার ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান বা মাইক্রোফিনান্সের বিপদ নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছি। কিন্তু আরো বেশি করে এই বিপদের কথাকে মেয়েদের মধ্যে নিয়ে যেতে হবে।’’
তিনি বলেছেন, ‘‘সব অংশের মহিলাদের নিয়ে লড়াই সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। তিলোত্তমা আন্দোলনের থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। নিবিড়ভাবে প্রতিটি জেলা এই আন্দোলনে যেভাবে যুক্ত হয়েছিলেন ভবিষ্যতেও এই আন্দোলনকে চলমান রাখতে হবে। বিজেপি-আরএসএস মনুবাদী আক্রমণের পথে পুরুষতান্ত্রিকতাকেই কায়েম করছে। তৃণমূল তাকে মদত দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধেই আমরা লড়াই করেছি। একদম গ্রামীণ-প্রান্তিক অংশের মধ্যে এই লড়াইকে পৌঁছে দিতে পারলে আন্দোলন পূর্ণতা পাবে।’’
সন্মেলনে উচ্চতর কমিটির তরফে পর্যবেক্ষণ রাখেন সারা ভারত মহিলা মহিলা সমিতির সভাপতি পিকে শ্রীমতি। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে মহিলা সমিতির প্রতিকূলতার মধ্যও তাঁদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।’’ পাশাপাশি, নারী নির্যাতন, মহিলাদের কর্মসংস্থান ও মনরেগা বন্ধ থাকার বিপদ নিয়ে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান তিনি। 
সম্মেলনে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবাদের বিরুদ্ধে, প্যালেস্টাইন ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের পক্ষে, মর্যাদাপূর্ণ জীবনের লক্ষে লড়াইয়ের পক্ষে, মনরেগা চালু করার স্বপক্ষে, দুর্নীতি ও লুটের বিরুদ্ধে দলিত আদিবাসী মহিলাদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনের মতো একাধিক প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়। 
এসএফআই সম্পাদক দেবাঞ্জন দে সম্মেলনের সাফল্য কামনা করেন।
সন্মেলনে ক্রেডেনশিয়াল কমিটি রিপোর্ট পেশ করে। মোট প্রতিনিধি ৩১১ জন, দর্শক ৪৭ জন সম্মেলনে অংশ নেন। ‘আমরা করবো জয়‘ গানের মধ্যে দিয়ে সম্মেলন শেষ হয়। সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য ৩০তম সম্মেলন শুরু হয়েছে কলকাতার রথীন্দ্র মঞ্চে। ‘হাথরস থেকে বিলকিস আর তিলোত্তমা থেকে তামান্না, কসম তোদের এই মাটিতে অপরাধীদের ছাড়ব না‘ স্লোগানকে সামনে রেখে প্যালেস্টাইন সংহতি নগর শিবানী ভৌমিক লক্ষীমণি ব্যানার্জি মঞ্চ ও তিলোত্তমা কক্ষে রাজ্য সম্মেলনের জন্য মিলিত হন মহিলারা। 

Comments :0

Login to leave a comment