Christmas in Assam

আসামে বড়দিন উদযাপনে বাধা ভাঙচুর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের

জাতীয়

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বড়দিন উদযাপন অব্যাহত থাকলেও, ভারতের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সংগঠন এই উৎসবকে নষ্ট করতে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি গির্জায় হামলা, হোটেলে অনুষ্ঠান বাতিল বিতর্কের মধ্যেই আসামের একটি স্কুলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ জোর করে বড়দিন উদযাপনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যেখানেই বড়দিনের সঙ্গে সম্পর্কিত জিনিসপত্র দেখছে, সেখানেই আক্রমণ করছে। আসামের নলবাড়ি জেলায়, বজরং দলের কর্মীরা একটি স্কুলে ভাঙচুর চালায় বল অভিযোগ। ওই স্কুলে বড়দিন উদযাপনের প্রস্তুতি চলছিল। অভিযোগ বজরং দলের সদস্যরা জোর করে স্কুল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ‘‘জয় শ্রী রাম’’ স্লোগান দিতে শুরু করে। বড়দিনের সাজসজ্জা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে সবকিছু ধ্বংস করে দেয়। এই ঘটনার একটি ভিডিওও প্রকাশ পেয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। যদিও সেই ভিডিও গণশক্তি ডিজিটাল যাচাই করেনি। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে যে বজরং দলের সদস্যরা প্রথমে বড়দিন উদযাপনের সাথে সম্পর্কিত জিনিসপত্র ভাঙচুর করে, তারপর সেগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভিডিওতে বজরং দলের সদস্যদের ‘‘জয় শ্রী রাম’’ এবং ‘‘জয় হিন্দু রাষ্ট্র’’ স্লোগান দিতে শোনা গেছে।
অভিযোগ তারা নলবাড়ি শহরেও ভাঙচুর চালিয়েছে। সংবাদ সংস্থার কাছে নলবাড়ি জেলার এসএসপি বিবেকানন্দ দাস জানিয়েছেন,‘‘ সেন্ট মেরি'স ইংলিশ স্কুলের আধিকারিকরা ভাঙচুরের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্কুল ছাড়াও, নলবাড়ি শহরের বাজারেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। আধিকারিকার বলেন, "স্কুল ভাঙচুরের পর, বজরং দলের কর্মীরা নলবাড়ি শহরের বাজারে গিয়ে একটি দোকানে সান্তা ক্লজের টুপি এবং মুখোশের মতো জিনিসপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়।’’
বিবেকানন্দ দাস জানিয়েছেন যে পুলিশ দুটি ঘটনার জন্য মামলা দায়ের করতে চলেছে। তাঁর অনুমান দুটি ঘটনায় নয়জন জড়িত।
সেন্ট মেরি'স স্কুলটি বোঙ্গাইগাঁও ডায়োসিসের আওতাধীন। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলে প্রায় হাজারের বেশি পড়ুয়া রয়েছে। বোঙ্গাইগাঁও ডায়োসিসের ফাদার জেমস ভাদাকেয়িল জানিয়েছেন যে শীতকালীন ছুটির কারণে ঘটনার সময় স্কুলটি ফাঁকা ছিল। তিনি বলেন, বুধাবার ২৪ ডিসেম্বর বিকালে কিছু লোক অধ্যক্ষকে খুঁজতে এসেছিল। কিন্তু তিনি সেখানে ছিলেন না। এরপর তারা ঘটনাস্থল ঘুরে ট্যাবলো সহ ক্রিসমাসের সাজসজ্জা ভাঙচুর করতে শুরু করে। তারা একটি বড় ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে, জিনিসপত্র ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়।  আসামের নলবাড়ি শহরে এর আগেও একই রকম ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক স্থানে বড়দিনের সাজসজ্জায় আগুন লাগানো হয়েছে। স্থানীয় সংবাদপত্রের মতে, ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ(ভিএইচপি) এবং বজরং দলের সদস্যরা বড়দিন উদযাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। তারা জেলার পানিগাঁও গ্রামের সেন্ট মেরি স্কুলে প্রবেশ করে, বড়দিনের সাজসজ্জা ভাঙচুর করে এবং যীশু খ্রিস্টের মূর্তি ভেঙে ফেলে। বিক্ষোভকারীরা "জয় শ্রী রাম" এবং "জয় হিন্দু রাষ্ট্র" স্লোগান দিয়ে বড়দিন উদযাপনের প্রচারণামূলক একটি ব্যানার এবং পোস্টার পুড়িয়ে দেয় বলে জানা গেছে। তারা স্কুল কর্তৃপক্ষকে স্কুল প্রাঙ্গণে এই উৎসব উদযাপনের বিরুদ্ধে সতর্ক করে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলের সদস্যরা মানুষকে ক্রিসমাস উদযাপনের বিরুদ্ধে সতর্কও করেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জেলা সম্পাদক ভাস্কর ডেকা সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা খ্রিস্টান উৎসব চাই না।’’ তিনি আরও বলেন, তারা ভারতীয় উৎসবের সাথে সম্পর্কিত কোনও জিনিসপত্র বিক্রির বিরুদ্ধে নন, তবে অ-ভারতীয় বংশোদ্ভূত উৎসবের সাথে সম্পর্কিত কোনও ব্যবসাকে তারা অনুমোদন করেন না।

Comments :0

Login to leave a comment