রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে তারা বলেন, ‘‘রাজ্য হিসাবে আপনারা কি করছেন? কেন শুধুমাত্র কোটায় ছাত্ররা আত্মহত্যা করছেন?’’ রাজ্যের পক্ষ থেকে আইনজীবী জানান যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ তদন্তকারি একটি টিম গঠন করা হয়েছে এই বিষয়।
খড়গপুর আইআইটিতে একজন ছাত্র আত্মহত্যা সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল শীর্ষ আদালতে। এছাড়া কোটায় ছাত্রীর আত্মহত্যা সংক্রান্ত মামলার শুনানিও ছিল।
গত ৪ মে খড়গপুর আইআইটিতে এক পড়ুয়া আত্মহত্যা করেন। কিন্তু এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয় ঘটনার চারদিন পর। শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তোলে কেন চারদিন পর এফআইআর দায়ের করা হলো। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতের কাছে জানানো হয়েছে যে, এই বিষয় তাদের তদন্ত চলছে।
কোটায় ছাত্র মৃত্যু নিয়ে এর আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আদালত। একাধিক পরামর্শও দেওয়া হয় আদালতের পক্ষ থেকে।
কোটার বেসরকারি কোচিং সেন্টার গুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে বিধানসভায় বিল পেশ করেছে রাজস্থান সরকার। কোটায় পড়ুয়াদের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একাধিক বার প্রশ্ন উঠেছে। ‘নিট‘ সহ বিভিন্ন সর্বভারতীয় পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ওই সব কোচিং সেন্টারে পড়ুয়ারা ভর্তি হন। বিপুল টাকার বিনিময় তাদের সেখানে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা।
বিলে বলা হয়েছে, সরকার ১২ সদস্যের কমিটি গড়বে। বিভিন্ন কোচিং সেন্টার পরিচালনার ওপর নজরদারি করবে এই কমিটি। রাজ্যস্তরের পাশাপাশি জেলাস্তরেও এমন কমিটি গঠন করা হবে। কোচিংয়ের বিভিন্ন দিকের দেখাশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের ওপর থেকে মানসিক চাপ কিভাবে কমানো যায় সেই দিকও খতিয়ে দেখবে কমিটি।
বিলে বলা হয়েছে, ক্লাসের সময় কমানো হবে। কোনও পড়ুয়া যদি মাঝপথে কোচিং ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ১৪-১৫ বছরের পড়ুয়াকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে অভিভাবকরা এই কোটার কোচিং-য়ে ভর্তি করছেন। সেক্ষেত্রে বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে বিভিন্ন স্তর থেকে। প্রস্তাব ছিল, ১৬ বছরের নিচে কাউকে এই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোচিং সেন্টারে ভর্তি নিষিদ্ধ হোক। কিন্তু বিলে এমন কোনও সংস্থান নেই।
জাতীয় স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং বা ডাক্তারির প্রবেশিকায় যোগ্য হওয়ার জন্য রাজস্থানের কোটা বিখ্যাত ‘কোচিং সেন্টার’-র জন্য। প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে ঝোঁক বিচার করার দাবিও তোলা হয়েছে বিভিন্ন স্তর থেকে। বহু ছাত্রের বিভিন্ন যোগ্যতা থাকলেও তথাকথিত নিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে অভিভাবকরা অনেককেই জোর করে এই প্রশিক্ষণে ভর্তি করেন। বিভিন্ন কোচিং সেন্টারও, টাকা আয়ের জন্য, প্রবেশিকা পরীক্ষা না নিয়েই ভর্তি করে। অনেকক্ষেত্রে চাপের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে আত্মঘাতী হচ্ছে একের পর এক কিশোর-কিশোরী। কিন্তু এই চক্র চলছেই। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ আর মুনাফার চাপে নিয়ম করে শেষ হচ্ছে তাজা প্রাণ।
Comments :0