Post editorial

অপরাধীরা জেলের বাইরে, আক্রান্ত নিরপরাধীরা

উত্তর সম্পাদকীয়​

শ্রুতিনাথ প্রহরাজ


রাজ্যে এখন সব মিলিয়ে ‘হ য ব র ল’ প্রশাসনিক ব্যবস্থা চলছে। অর্থাৎ ওই ‘সাত দুগুনে চৌদ্দর নামে চার হাতে রইলো পেন্সিল’-এর অবস্থা। মুখ্যমন্ত্রী যদি বলেন ‘খাড়াই ছাব্বিশ ইঞ্চি, হাতা ছাব্বিশ ইঞ্চি, আস্তিন ছাব্বিশ ইঞ্চি, ছাতি ছাব্বিশ ইঞ্চি, গলা ছাব্বিশ ইঞ্চি’—মুখ্যসচিব, ডিজি সহ সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তি, নেতা মন্ত্রী থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত প্রত্যেককেই ঐ ‘ছাব্বিশ’-এ গলা মেলাতে হবে। ফিতের বাকি দাগগুলো মুছে গেছে কিনা তা খুঁজতে গেলেই বিপদ, সে আপনি যেই হোন। আর বিরোধী দল হলে তো কথাই নেই, আক্রমণের ঝাঁজ আরও তীব্র হবে। সুকুমার রায়ের আপাতনিরীহ ঐ সাহিত্যের মজা বাস্তবে এখন আমাদের রাজ্যের সামগ্রিক পরিমণ্ডলে আদৌ নিরীহ মজাদার কোনও বিষয় না বরং অনেকটাই হিংস্র সর্বনাশা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বস্তুত এরাজ্যে এখন প্রকৃত অপরাধীরাই বুক বাজিয়ে সর্বত্র বলে বেড়ায়, ‘আইন আইনের পথে চলবে, আমি আইন মেনে কাজ করব’। আদালতে একের পর এক মামলায় পর্যুদস্ত হওয়ার পর ইদানীং আরেকটা কথা যোগ হয়েছে, ‘আমি আদালতের নির্দেশ মেনে চলবো’। সবাই ভাবে তাহলে তো আর কথাই নেই। আইন যদি আইনের পথে চলে আর অপরাধীই যদি বলে আমি আইন মানবো তাহলে তো সব সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে বাধ্য। অনেকটা সেই পথ ধরে অপরাধের কারণে ভুক্তভোগী মানুষগুলো নিস্তার পেতে মাঝে মাঝে অপরাধীর বা এই অপরাধ জগতের উপরেই আস্থা ভরসা পোষণ করেন। তার বিষময় বা মর্মান্তিক পরিণতি কি হতে পারে আমরা এখন আকছার তা দেখতে পাচ্ছি।

আর জি করের অভয়া অকালে হারিয়ে গেছে এই অপরাধচক্রের আক্রমণে। সব জেনে শুনেও তার চেনাজানা মানুষগুলোর উপর ভরসা করেই দিনের পর দিন নাইট ডিউটিতে গেছে। ওরা যে কতটা হিংস্র হায়না হতে পারে সেই ধারণা ছিল না বোধহয়। তাই মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হলো মেধাবী মেয়েটা। আজও তার ন্যায়বিচার অধরা।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের একটা অংশ ঠিক একইভাবে এখনও ভরসা রাখে এই অপরাধের মাথাদের উপর। সেই ভাবনা থেকেই কসবায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের দপ্তরে দৌড়ে গেছিল ওরা। প্রত্যুত্তরে জুটেছে লাথি সহ পুলিশের বর্বর আক্রমণ। মাঝে কিছুদিন নাওয়া খাওয়া ছেড়ে সল্টলেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দপ্তরের সামনে হত্যে দিয়ে বসেছিল ওরা, যদি ন্যায় বিচার জোটে এই প্রত্যাশায়। সেখানেও শারীরিক সহ নানাবিধ আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে ওদের। এসব সত্ত্বেও কদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে নেতাজী ইন্ডোরে গিয়েছিল ওরা। অপরাধ ঢাকতে কিভাবে সাজানো হয়েছিল সেই আসর সবাই দেখেছি আমরা। সর্বশেষে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা পৌঁছে গেছে বিকাশ ভবনের সামনে, মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসবাণী পেতে। একবারও মনে হয়নি, এইসব অপরাধীদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণেই আদালতের রায়ে ওরা আজ ‘অযোগ্য’, ‘দাগি’ বা ‘অপরাধী’ হিসাবে চিহ্নিত। এদের অপরাধের কারণেই ওদের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরে তছনছ হয়ে গেছে। পরিণতি যা হবার তাই। গতবারের থেকেও ভয়ঙ্কর আক্রমণ নেমে এসেছে রাজ্যের শিক্ষিত মেধাবী এবং যোগ্য এইসব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর। শুধু শিক্ষক-শিক্ষিকারা আক্রান্ত হচ্ছেন ভাবলে ভুল হবে, বস্তুত আক্রান্ত হচ্ছে এ রাজ্যের সরকারি ব্যয়ে পরিচালিত সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা।

এ কথা এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই যে আসল অপরাধীরা তাদের অপরাধ স্বীকার করার অবস্থায় আদৌ নেই বরং আরও কোনও কৌশলে এই অপরাধকে এবং এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আড়াল করা যায় তার চেষ্টা চলছে প্রতিনিয়ত। আর সেই কারণেই নিরীহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওপর আক্রমণ নেমে আসছে বারবার। আক্রমণের তীব্রতা বাড়ছে কারণ গোটা সরকারি ব্যবস্থা এই দুর্নীতি বা অপরাধের প্রধান চালিকা শক্তি। সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া সর্বশেষ রায়ে ছত্রে ছত্রে তার উল্লেখ আছে। এত শুধু স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে। সরকারের অন্যান্য দপ্তরে নিয়োগ দুর্নীতি, রেশনের চাল চুরি, আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা চুরি, কয়লা চুরি, বালি চুরি— সর্বত্র এই এক অবস্থা। এইসব অপরাধীদের সৌজন্যে এ রাজ্যে এখন দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা নিয়েছে। তাই মাথা থেকে শুরু করে লেজ পর্যন্ত এই সব অপরাধীদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে জেলে ঢোকাতে না পারলে নিরীহ বা অসহায়দের উপর আক্রমণ বাড়তেই থাকবে। এই চরম সত্যের উপলব্ধি হওয়া এখন সবচাইতে জরুরি।

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে যারা মেধাতালিকা ডিঙিয়ে, ও এম আর শিট বিকৃত করে, সাদা খাতা জমা দিয়ে, প্যানেলের বাইরে থেকে এবং প্যানেল উত্তীর্ণ হওয়ার পর নিয়োগ পেয়েছে, তারা সবাই ‘টেইন্টেড’ অর্থাৎ দাগি বা অযোগ্য। এ নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই। বারবার এই অযোগ্যদের তালিকা জানতে চেয়েও পায়নি আদালত। উলটে অযোগ্যদের নিয়োগের পেছনে থাকা পাহাড়-প্রমাণ দুর্নীতি আড়াল করতে যোগ্য মেধাবীদের নিয়োগ সংক্রান্ত ওএমআর শিট সহ যাবতীয় নথি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভুগতে হয়েছে প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের। প্রশ্ন হলো কারা এই অযোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দিল এবং কিসের বিনিময়ে ওরা এই সুযোগ পেয়েছে? যে বা যারা কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে এই অপরাধের চিত্রনাট্য তৈরি করেছে তারাই তো আসল অপরাধী। তারা দুর্নীতির মাধ্যমে সুযোগ না দিলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের এইসব অযোগ্য প্রার্থীরাতো চাকরি পাওয়ার সুযোগই পেত না। ওই সব দুর্নীতিবাজদের ধরা হবে কবে? আদালতের নির্দেশে শুধু দাগি শিক্ষকদের শাস্তির কথা বলা হয়েছে,যার সুযোগ নিচ্ছে এইসব অপরাধীরা। সাংবাদিকদের সামনে বারবার নিজে সাধু সাজার চেষ্টা করছেন।  

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে ২৫৭৫২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়েছে তার সমগ্র দাযয় তো তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী সেই দায় এড়ান কি করে? মুখ্যমন্ত্রী কেন তার সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের করা সেই অপরাধ একবারও স্বীকার করছেন না? কিসের ভিত্তিতে জানা নেই তবে স্কুল সার্ভিস কমিশন তো ইতিমধ্যেই কারা যোগ্য অর্থাৎ যথাযথভাবে নিযুক্ত হয়েছেন তাদের তালিকা ডি আই অফিসে পাঠিয়েছে। তার মানে একই সাথে দুর্নীতির মাধ্যমে নিযুক্ত কারা সে কথাও স্বীকার করা হয়েছে। তাহলে সরকারের প্রধান অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী সেই অপরাধ স্বীকার করছেন না কেন? দায় এড়িয়ে কেন বারবার অন্যদের কাঁধে বন্দুক রাখার চেষ্টা করছেন? কোন যুক্তিতে আদালতের রায়ে খারিজ হওয়া গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের জন্য যথাক্রমে ২৫ হাজার ২০ হাজার টাকার সরকারি মাসোহারার বন্দোবস্ত করা হয়েছে? যথারীতি এ নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা হয়েছে এবং আজ না হোক কাল আইন মেনে সরকারের এই সিদ্ধান্ত খারিজ হতে বাধ্য।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে মুখ্যমন্ত্রী মাঝেমধ্যে বাম আমলের নিয়োগের প্রসঙ্গ তোলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে স্কুল সার্ভিস কমিশন-এর মাধ্যমে ১১ দফায় মোট ১৩৪৮৮৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার নিযুক্তি হয়েছে। এর বাইরে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও নিযুক্তি হয়েছে একাধিকবার। এর সমস্ত নথি সুরক্ষিত ছিল সরকারি দপ্তরে। এইসব নিয়োগ নিয়ে কি তখন আদালতে মামলা হয়নি? হ্যাঁ, বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল কিন্তু তার কোনটাই ধোপে টেকেনি কারণ দুর্নীতির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এখানেই তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে বাম আমলের গুণগত পার্থক্য। শিক্ষিত মেধাবীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাম আমলে ফাটকাবাজি হয়নি বরং তারা যাতে এ রাজ্যেই তাদের মেধার ভিত্তিতে মর্যাদার সঙ্গে নিযুক্তির সুযোগ পায় তার চেষ্টা করা হয়েছে।

কেন বারবার সরকারি শিক্ষা দপ্তরের এই দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে? কারণ এ রাজ্যে সরকারি ব্যবস্থায় পরিচালিত সাধারণের শিক্ষা এখন ভয়ঙ্ককর বিপর্যয়ের সম্মুখীন। কলকাতা হাইকোর্টে এখনও প্রাথমিকের ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের মামলাটি বিচারাধীন। ২০১৪ সালে যখন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য সেট পরীক্ষা হয়, বারবার বলা সত্ত্বেও উত্তীর্ণ প্রার্থীদের শংসাপত্র দেওয় হয়নি। আজ ১১ বছর বাদে আদালতকে বলতে হয়েছে চার সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত উত্তীর্ণ প্রার্থীকে শংসাপত্র দিতে হবে। কেন দেওয়া হয়নি তখন? দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্যই কখনো মেধা তালিকা আড়াল করা হয়েছে আবার কখনো শংসাপত্র দেয়া হয়নি উত্তীর্ণ প্রার্থীদের। কয়েকশো কোটি টাকার নিয়োগ দুর্নীতি ঘটেছে প্রাথমিকের শিক্ষক নিযুক্তির ক্ষেত্রেও। এখন আদালতে সরকারি আইনজীবী বলছেন, এই নিয়োগের পিছনে যে আর্থিক লেনদেন ঘটেছে তার তো কোনও প্রমাণ নেই। প্রমাণ যদি কিছু না থাকে তাহলে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে সপরিবারে জেল খাটতে হলো কেন? উনি তো মানহানির মামলা করেছেন বলে শুনিনি। গোটা বিষয়টা আদালতের বিচারাধীন তাই আগ বাড়িয়ে কোনও মন্তব্য করা সমীচীন নয়। তবে প্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক— সর্বস্তরেই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে বিস্তর দুর্নীতি হয়েছে একথা হলো করে বলা যেতে পারে। আর সেই কারণেই, মানিকবাবু এখন জামিনে মুক্ত হলেও প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি সহ স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ও শিক্ষা দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকরা এখন জেলের অন্তরালে দিন কাটাচ্ছেন। এখন এরাজ্যে সরকারের নেতা মন্ত্রী সহ আমলাদের দুর্নীতির অপরাধে জেল খাটা প্রায় অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
কিন্তু এই গোটা ঘটনায় সবচাইতে বেশি শাস্তি পাচ্ছে এই প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা যাদের কোনও অপরাধ নেই। এর থেকে লজ্জার আর কি হতে পারে? নবম দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা বাবা-মার সঙ্গে বসে টিভিতে দেখছে তাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা কিভাবে পুলিশের লাথি খাচ্ছে, লাঠির বাড়ি খাচ্ছেন। তারা দেখছে তাদের মাতৃসমা শিক্ষিকারা কিভাবে খোলা আকাশের তলায় রাজপথে শুয়ে নিজেদের কোলের শিশুদের সামলাচ্ছেন। শিশুমনে এর যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে বা হবেও আগামী দিনে তা কি শিক্ষার সুস্থ পরিমণ্ডলের পক্ষে আদৌ উপযোগী? যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা শুনছে বা জানতে পারছে, তাদের একাংশের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নানা অপরাধের কারণে দাগি বা অযোগ্য বলে চিহ্নিত তাদের মানসিক সুস্থিতি নিয়ে আদৌ কি আমরা চিন্তিত? শিক্ষক ছাত্রের সম্পর্কে এর কি ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়তে পারে তা কি ভাবব না আমরা? এই কদিন বাদে স্কুলগুলো খুলবে আবার। কাদের নিয়ে চলবে শ্রেণিকক্ষের নিয়মিত পঠন-পাঠন? স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষা কর্মীদের ঘাটতি ঠিক কতটা এবং তার জন্য বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কি পরিমাণে ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে তাকি ভেবে দেখছি আমরা? 
সরকারিভাবে এখন সঠিক তথ্য পাওয়া দুরূহ কাজ। ইচ্ছে করেই আড়াল করা হয় এইসব তথ্য যাতে বিপদের মাত্রা সাধারণ মানুষ বুঝতে না পারে। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা এখন বস্তুত অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের সাহায্যে পরিচালিত হচ্ছে। স্থায়ী শূন্যপদে যথাযথ নিযুক্তি নেই। সব মিলিয়ে সমগ্র সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় এক অদ্ভুত ডামাডোল চলছে। আর একই সাথে বেসরকারি শিক্ষা ব্যবসায়ীরা তাদের মুনাফা বাড়িয়ে চলছে একের পর এক নতুন ক্যাম্পাস খুলে। এর জন্য নানাভাবে প্রয়োজনীয় দক্ষিণাও তারা পৌঁছে দিচ্ছে শাসক দলের ভাঁড়ারে। একদিকে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা তৈরি করে চরম অরাজকতা সৃষ্টি, অন্যদিকে বেসরকারি শিক্ষা ব্যবসায়ীদের উত্তরোত্তর বিনিয়োগ বৃদ্ধি— এটাই এখন এ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক চলচিত্র। 
 

Comments :0

Login to leave a comment