ফুটবল নামক জনপ্রিয় খেলাটির মধ্যে যেমন রয়েছে উত্থান পতন । তেমনই রয়েছে পিছিয়ে থাকা কোনো দলের অদম্য সাহস ও লড়াইয়ের দ্বারা উত্থানের রূপকথাও । বিশ্ব ফুটবলে ২০২৫ যেন ঘটনাবহুল একটি বছরের দিকেই এগোচ্ছে। মার্চ মাসে লিভারপুলকে হারিয়ে প্রায় ৭০বছর পর নিউক্যাসেল ইউনাইটেড কোনো ট্রফি জিতেছিল। ইএফএল কাপ জিতেছিল তারা। চলতি মাস সাক্ষী থেকেছে বিশ্ব ফুটবলের বিভিন্ন অঘটনের।ম্যান সিটিকে এফএ কাপের ফাইনালে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ক্রিস্টিয়াল প্যালেস। কোচ গ্লাসেন ক্লাবের ১২০বছরের ইতিহাসে প্রথম ট্রফি জিতিয়েছেন ক্লাবকে। ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে এসি মিলানকে হারিয়ে ৭০বছর পর হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বোলোগনা। বড় দলকে হারিয়েই ট্রফির খরা কাটিয়েছে বোলোগনা। ডাচ কাপ ইএনভিবি ( ENVB ) ফাইনালে টাই ব্রেকারে আলামকারকে হারিয়ে খেতাব জিতেছে গো আহেড ঈগলস। ১৯৩৩সালে তারা ডাচ লিগ বা ইরিডিভিস লিগ জিতেছিল। প্রায় ৯২বছর পর কোনো ট্রফি জিতল নেদ্যারল্যান্ডের ডেভেন্টার সিটির দল। বৃহস্পতিবার রাতে ইউরোপ লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং টটেনহ্যাম হটস্পারস। এই মরশুমে তিনবারের সাক্ষাতে একবার জিততে পারেনি ইউনাইটেড। প্রথম মরশুমে এসেই রুবেন আমোরিমের মতো সমর্থকরাও বিভোর ছিলেন ফের একবার ইউরোপা লিগ জয়ের জন্য। তারা শেষবার ২০১৮তে ইউরোপা লিগ জিতেছিল আর এক পর্তুগীজ কিংবদন্তি কোচ জোসে মোরিনহোর কোচিংয়ে। কিন্ত সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দিল স্পার্সরা। বার্নান জনসনের একমাত্র গোলে তৃতীয়বার ইউরোপিয়ান শিরোপা জিতল টটেনহ্যাম। ১৯৮৪-র পর আবার জিতল তারা। বহু বছর ধরে টটেনহ্যামের কোনো ট্রফি জুটছিলোনা । ২০১৯সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে উঠলেও লিভারপুলের কাছে হেরে যায় তারা। তবে এবার সেই দুঃখ ভুলিয়ে দিলেন জনসন। অধিনায়ক সন হিউং মেন প্রথম এশিয়ান ফুটবলার হিসেবে জিতলেন কোনো ইউরোপিয়ান ট্রফি। তার প্রাক্তন সতীর্থ হ্যারি কেনও তার ৩১বছরের ক্যারিয়ারে প্রথম ট্রফি জিতলেন। ২০২৪-২৫ মরশুমের বুন্দেসলিগা খেতাব জিতেছে বায়ার্ন মিউনিখ। এই ক্লাবগুলির সঙ্গে সন , হ্যারি কেনদের নামের পাশে জুড়ে গেছিল ' চোকার্স ' তকমা। তবে ফুটবলের মতো সুন্দর একটি খেলা হয়তো ফিরিয়ে দেয় সবকিছুই। এতবছর ধরে ফুটবলকে সুন্দর খেলার মুহূর্তের সঙ্গে সঙ্গে অনেক লড়াই , ঘাম , চোখের জলও দিয়েছিল এই ক্লাবগুলি । তাই এবার ফুটবলও তাদের ফিরিয়ে দিল সেই পরিশ্রম , আনুগত্য ও সংগ্রামের মূল্য। সবশেষে সমস্ত প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে জয় হল ফুটবলের। এই সৌন্দর্য্যের জন্যই ফুটবল খেলাটির প্রতি মানুষের দুর্বলতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
The Year Of Underdogs In World Football
২০২৫যেন ফিনিক্স পাখির উত্থানের বছর

×
Comments :0