মোদী সরকারের জনস্বার্থবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আগামী ৯ জুলাই এক বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিল সংযুক্ত কিষান মোর্চা। ওইদিন গোটা দেশের সঙ্গে এরাজ্যেও পালিত হবে সাধারণ ধর্মঘট। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনগুলির ডাকা ধর্মঘটকে সর্বতোভাবে সমর্থন করে শহর থেকে গ্রামে সর্বশক্তি দিয়ে শামিল হবে সংযুক্ত কিষান মোর্চার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখা। ধর্মঘটকে সমর্থন করে ৭ জুলাই সোমবার ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত হবে কৃষক-শ্রমিকের মহামিছিল। শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সংযুক্ত কিষান মোর্চা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখার পক্ষ থেকে এই ঘোষণা করা হয়।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে সংযুক্ত কিষান মোর্চার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন অমল হালদার, কার্তিক পাল, গোপাল বিশ্বাস, ফরিদ মোল্লা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
অমল হালদার সাংবাদিকদের বলেন, ধান থেকে পাট, আলুচাষিদের দৈন্যদশা চরমে উঠেছে। সার, বীজ, উপকরণ, তেলের দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। কৃষকের জন্য কালা কানুন আনতে নরেন্দ্র মোদী আবার অন্য কৌশল নিচ্ছে। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাই আক্রান্ত। মানুষের হাতে পয়সা নেই, কাজ নেই। কাজ না পেলে মানুষ বাঁচবেন না। গ্রামগঞ্জের কৃষিজীবী মানুষ, খেতমজুররা পরিযায়ী হয়ে অন্য রাজ্যে গিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন। আর মোদী সরকার জাতপাত ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করে চলেছে। আমাদের সমস্ত ক্ষেত্রের শ্রমজীবী মানুষকে শামিল করে আরও ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে হবে।
কর্পোরেটদের হাতে কৃষকের বাজার চলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে কার্তিক পাল বলেন, সামনে এক ভয়ঙ্কর দিন আসছে। গ্রামীণ কৃষকের বাজার একেবারে শেষ হয়ে যাবে। এরাজ্যে মমতা সরকার বাহবা কুড়ায় নানা চমক দিয়ে, কিন্তু মানুষের স্থায়ী সুরাহা করে না। ফলে কৃষকের ঋণ বেড়েই চলেছে। তাই ধর্মঘটে যোগ দিতে কৃষকরা এগিয়ে আসছেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
এদিন সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতৃবৃন্দ বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্য মহারাষ্ট্রে গত ৩ মাসে ঋণজর্জর ৭৬৭ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। কৃষিতে সরকারি বরাদ্দ লাগাতার কমে যাচ্ছে। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য এত সস্তা হয়ে গেছে যে চাষাবাদ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সংযুক্ত কিষান মোর্চার দাবি, কলকাতা হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়কে মান্যতা দিয়ে আগামী ১ আগস্ট থেকে ১০০ দিনের কাজ চালু করতে হবে। এছাড়াও ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিন ও দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি ধার্য করতে হবে। নতুন জাতীয় কৃষি বিপণন নীতি প্রত্যাহার, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি)'র আইনি গ্যারান্টি, বর্গাচাষিদের সরকারি স্বীকৃতি সহ কৃষকদের সুযোগ-সুবিধার নিশ্চয়তার দাবিতে এই সাধারণ ও গ্রামীণ ধর্মঘট। একে সফল করে তুলবেন শ্রমজীবীরা।
প্রসঙ্গত, এই সাধারণ ধর্মঘটের গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলির মধ্যে আরও রয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ বন্ধ করতে হবে, অসংগঠিত ক্ষেত্রে ২৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি দিতে হবে, সব গরিবকে ১০ হাজার টাকা মাসিক পেনশন, প্রকল্প কর্মীদের সরকারি স্বীকৃতি।
Comments :0