Baidyabati Couple Died

বৈদ্যবাটির যুগলের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় আটক দুই

জেলা

বৈদ্যবাটি যুগলের রহস্য মৃত্যুর কিনারা করে জানালো পুলিশ। খুনই করা হয়েছে যুগলকে! গ্রেপ্তার দুইজন। ধৃতদের শুক্রবার শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে হুগলির বৈদ্যবাটিতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় যুগলের! মৃতদের নাম মনীশ ভাদুড়ী(৩৫) ও অপর্ণা মাঝি(৩২)। রাত তিনটে নাগাদ তাদের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। বৈদ্যবাটি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারাম বাগান এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তারা। বৈদ্যবাটি রাজার বাগানে মনীশের বাড়ি আছে। গত ছয় বছর ধরে সীতারামবাগানে ভাড়া ছিলেন দুজনে। অপর্না প্রথম স্বামীকে ছেড়ে মনীশের সঙ্গে থাকতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অপর্নার ছোটো বোন রিম্পার সঙ্গে একটি পানশালায় আলাপ হয় হাওড়া চামরাইলের বাসিন্দা গাড়ি চালক অর্জুন পাশোয়ানের। আলাপ গভীর হয়। রিম্পা স্বামীকে ছেড়ে অর্জুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়। রিম্পার বড়দি তাদের দুজনকে তেলেঙ্গানায় কাজের ব্যবস্থা করে দেন।সেখানে কিছুদিন থাকার পর আবার তারা ফিরে আসেন।বিভিন্ন বিনোদন পার্কে দুজনে ঘুরতেও যান।মাস তিনেক তারা মেলামেশা করার পর রিম্পা জানায় তার অর্জুনকে পছন্দ না।আরেকজনের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরী হয়।রিম্পার দিদি অপর্না অর্জুনকে তার বোনের সঙ্গে মেলামেশা করতে বারন করে।বোনকে ভালো যায়গায় বিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন।নাছোরবান্দা অর্জুন বারন শোনেনা।অপর্নার বাড়িতে এসে তাদের হুমকি দিয়ে যায়।অর্জুনকে সঙ্গ দেয় তার জামাইবাবু নাসিরুদ্দিন সেখ।

ঘটনার তিনদিন আগে আবার বৈদ্যবাটিতে আসে অর্জুন। সেখানে বচসা হয় তার সঙ্গে।প্রকাশ্যে অপর্না তাকে চড় থাপ্পড় মারে।এই অপমান এবং তার সঙ্গে প্রতরণার বদলা নিতেই সম্ভবত খুনের পরিকল্পনা করে অর্জুন অনুমান পুলিশের। ঘটনার দিন অর্থাৎ বুধবার শিয়ালদা থেকে ছুরি কিনে বৈদ্যবাটিতে আসে অর্জুন। রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় ঘাপটি মেরে বসে থাকে। ভোররাতে সে অপর্ণার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় অপর্ণা ও মনীশের ওপরে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফালাফালা করে দেয়। রাত তিনটে নাগাদ প্রতিবেশীরা বাবা গো মা গো বাঁচাও চিৎকার শুনতে পায়। ঘটনার পর এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয় অর্জুন। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি, ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্ণব বিশ্বাস বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত শুরু করে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। মৃত অপর্ণার পরিবার তার মা বোনকে জিজ্ঞাসা করে পুলিশ অর্জুনের কথা জানতে পারে। অর্জুন আর নাসিরুদ্দিন যে তাদের হুমকি দিত একথাও জানান। এরপরই পুলিশ ওই দুজনকে ধরার ফাঁদ পাতে। দুটো টিম তৈরি করে একটি জগদীশপুর তদন্ত কেন্দ্রের অন্তর্গত চামরাইলে পাঠায় অপরটি যায় মহেশতলায়। স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার শ্রীরামপুর আদালত অভিযুক্তদের নয় দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Comments :0

Login to leave a comment