WhatsApp

মোদীর নির্দেশ মানতে হলে ভারত ছাড়বে হোয়াটসঅ্যাপ

জাতীয়

ভারতে পরিষেবা বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিল হোয়াটসঅ্যাপ। শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্টে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপের তরফে জানিয়ে দেওয়া হলো, যদি এনক্রিপশন ভাঙতে বাধ্য করা হয় তাহলে তারা এদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেবে। কিন্তু কোনোভাবেই ইউজারদের গোপনীয়তা সংক্রান্ত নিয়ম তারা লঙ্ঘন করবে না।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০২১ ঘোষণা করে কেন্দ্র। বলা হয়েছিল ফেসবুক, টুইটার (বর্তমানে এক্স), ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিকে নয়া নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনে চ্যাট অনুসরণ করে কোনও তথ্যের উৎস সন্ধান করতে হবে। মোদী সরকারের এই নতুন নিয়মে হোয়াটসঅ্যাপকে চ্যাটগুলি ট্রেস করতে এবং বার্তাগুলি যারা পাঠিয়েছেন তাদের শনাক্ত করতে বলা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, এটি তাদের প্রাইভেসি পলিসি বা এনক্রিপশন ব্যবস্থাকে দুর্বল করে। পাশাপাশি ভারতীয় সংবিধানের অধীনে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা নীতি লঙ্ঘন করে। তাই তারা এই এনক্রিপশন ভাঙতে পারবে না।
২০২১ সালে দেশে চালু হওয়া সেই তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৪(২) ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছে ফেসবুক (বর্তমানে মেটা) ও হোয়াটসঅ্যাপ। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতেই জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপের তরফে আইনজীবী তেজশ কারিয়া বলেন, মানুষ এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করতে চায় কেননা এখানে সব সময় মেসেজ এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড। এই এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড এমন একটি প্রাইভেসি ফিচার যা অনেক বছর ধরেই হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে থাকে। এর সুবিধা হলো প্রেরক বা সেন্ডার যা পাঠাচ্ছেন তিনি এবং যিনি রিসিভ করছেন বা প্রাপক তারা দু’জন ছাড়া আর কেউ জানতে পারবে না। এমনকী হোয়াটসঅ্যাপও নয়। তা মেসেজ হোক কিংবা ছবি। হোয়াটসঅ্যাপের প্রাইভেসি পলিসিতেও এই ফিচারের উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালতকে তেজাস কারিয়া স্পষ্টই জানিয়ে দেন, ‘‘একটা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আমরা বলতে চাই, আমাদের যদি এনক্রিপশন ভাঙতে হয় তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ এই দেশ ছেড়ে চলে যাবে।” পরে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এই নিয়ম মানতে গেলে প্রতি বছর কোটি কোটি মেসেজ সংরক্ষণ করতে হবে। এ এমন এক চাহিদা, যা বিশ্বের কোনও দেশে লভ্য নয়। এবার তা করতে গেলে বছরের পর বছর ধরে কোটি কোটি মেসেজ সংরক্ষণ করেই যেতে হবে। মেটার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হলো, যদি এনক্রিপশন ভাঙতে বাধ্য করা হয় তাহলে তারা এদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেবে। কিন্তু কোনোভাবেই ইউজারদের গোপনীয়তা সংক্রান্ত নিয়ম তারা লঙ্ঘন করবে না।
এই অবস্থায় বিষয়টির জটিলতা বুঝতে পেরে প্রাইভেসি ও শনাক্তকরণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে মাঝামাঝি পথ খোঁজার কথা বলেছে দিল্লি হাইকোর্ট।

Comments :0

Login to leave a comment