অন্যকথা
উড়ে যায় ডাক ও ডাকটিকিট
তপন কুমার বৈরাগ্য
মুক্তধারা
একটা ডাকটিকিটের কি অসীম ক্ষমতা। খামেতে একটা
নির্দিষ্ট মূল্যের ডাকটিকিট লাগানো থাকলে সেটা হাজার
হাজার মাইল দূরে পাড়ি দিতে পারে।যখন মোবাইল ছিল না
তখন এই চিঠিপত্রই ছিল আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগের
একমাত্র মাধ্যম।মানুষ অধীর আগ্রহে বসে থাকতো একটা
চিঠির জন্য।সেই সব চিঠির মধ্যে ছিলো অন্তরের কতো
আকুতি।চিঠি লেখাছিলো তখনকার দিনে একটা শিল্প।
অনেক লেখক, কবি, সাহিত্যিক,দেশপ্রেমিকদের লেখা
চিঠিগুলো এখন সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শণ হয়েছে।
এই সাহিত্যকে বলা হয় পত্রসাহিত্য।
এক সময় পৃথিবীতে কোনো ডাকটিকিট ব্যবহারের নিয়ম ছিলো
না।যিনি চিঠিপত্র বহন করে নিয়ে যেতেন তখন তাঁর
পারিশ্রমিক বাবদ একটা মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হতো।
যতো দূরত্ব বাড়তো ততো পারিশ্রমিকও বাড়তো।
স্যার রোনাল্ড হিল ছিলেন এক গরিব ঘরের ছেলে।
ছোটবেলায় তাঁর মা একবার খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন।
বাবা অন্য জায়গায় থাকতেন।মা-কে বাঁচানোর জন্য
অনেক টাকার প্রয়োজন।বাবাকে বাড়ি আসার জন্য
একটা চিঠি লিখলেন।যাকে দিয়ে চিঠি পাঠাবেন তিনি বিরাট
অঙ্কের একটা টাকা চেয়ে বসলেন।এই টাকা তাঁকে ভিক্ষে
করে জোগাড় করতে হয়েছিল। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন
তিনি একটা সহজ পদ্ধতি আবিষ্কার করবেনই।
নিজের চেষ্টায় তিনি মানুষের মতন মানুষ হয়েছিলেন।
পরে যখন ইংল্যান্ডের পোস্টমাস্টার জেনারেল হন তখন তিনি
১৮৪০সালের ৬ই মে ডাকটিকিটের প্রচলন করেন।
সেটায় হলো পৃথিবীতে প্রথম ডাকটিকিটের প্রচলন।
এই ডাকটিকিটে ছিলো তখনকার ইংল্যান্ডের রাজার ছবি।
এর সুবিধার কথা ভেবে দশবছরের মধ্যে পৃথিবীর একশটা
দেশ এই ডাকটিকিট ব্যবস্থাকে গ্রহণ করল।
ডাক পরিষেবার মৌলিক ধারণার উদ্ভবের কৃতিত্ব স্যার রোনাল্ড হিলের।
তাঁর জন্ম ১৭৯৫সালের ৩রা ডিসেম্বর। তিনি পরলোকগমন করেন ১৮৭৯সালের ২৭শে আগস্ট।
আজ আমরা ডাকটিকিটের উদ্ভাবকের নাম খুব অল্পলোকেই জানি।
অথচ একটা ডাকটিকিট কতো দূরদূরান্তে খবর
বহন করে নিয়ে যাচ্ছে।
Comments :0