Sajik Nyay Mancha

সামাজিক ন্যায় মঞ্চের সম্মেলনে আলোচনায় ‘চণ্ডালিকা’, ‘রথের রশি’

কলকাতা

পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চের কলকাতা জেলা সম্মেলনে মঞ্চে নেতৃবৃন্দ। ছবি: মনোজ আচার্য

দলিত আদিবাসী তপশিলী এবং সামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের  জীবন জীবিকা ও তাঁদের অধিকারের লড়াইকে আরও জোরালো করার আহ্বান জানিয়ে রবিবার অনুষ্ঠিত হলো পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চ কলকাতা জেলার তৃতীয় সম্মেলন।
সম্মেলন হয়েছে অভয়া মঞ্চে (কৃষকসভা হল)। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অধ্যাপক বাসুদেব বর্মণ। সম্মেলন পরিচালনা করেন দেবেশ দাস, রাজীব বিশ্বাস ও নমিতা দাস কে নিয়ে গঠিত সভাপতিমণ্ডলী। 
বর্মণ সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে বলেন, অনেক গরিব দলিত মানুষ আছেন যাঁরা জানেই না যে দেশের সংবিধানে তাদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধার কথা বলা আছে। দলিত সমাজের মধ‍্যে যাঁরা এগিয়ে আছেন, তাঁদের উচিত একেবারে পিছিয়ে পড়া অংশের স্বার্থে এগিয়ে আসা।
সম্মেলনে ‘রবীন্দ্রনাথ ও দলিত সমাজ’ নিয়ে একটি আলোচনা হয়। বক্তা ছিলেন কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর। তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ নিজেকে বদলেছেন। তাঁর চিন্তাধারার পরিবর্তন ঘটে গেছে। প্রথম জীবনে তাঁর কিছু লেখা পাবেন, যা বর্ণাশ্রম বিরোধী নয়। ধীরে ধীরে তাঁর পরিবর্তন হয়। ১৮৯১ সালে তিনি যখন জমিদারি দেখতে বের হন, তখন মানুষের সংস্পর্শে তাঁর মনের পরিবর্তন হতে শুরু করে। তিনি অস্পৃশ্যদের সমস্যা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হতে শুরু করেন। তিনি নমঃশূদ্র সম্মেলনে উপস্থিত হন, সেখানে তিনি কী বলেছেন, তা কোনও সংবাদপত্রে পর্যন্ত প্রকাশ হয়নি। রবীন্দ্রনাথ পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য ‘দুর্গত’ শব্দটি ব্যবহার করেন। 
কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর বলেন, ১৯১১ সালে রবীন্দ্রনাথ ‘অচলায়তন’ লিখলে তাঁর খুব সমালোচনা হয়। ‘রথের রশি’-তে তিনি ডাক দিয়েছেন শূদ্রের টানা রথের চাকায় উচ্চবর্ণ চাপা পড়ুক। ১৯৩৮ সালে রবীন্দ্রনাথ ‘চন্ডালিকা’ নাটক লেখেন যেখানে অস্পৃশ্য নারী বলে -“যে আমারে পাঠাল এই অপমানের  অন্ধকারে/ পূজিব না,  পূজিব না    সেই দেবতারে পূজিব না।’’ 
এদিন সম্মেলনে প্রতিবেদন পেশ করেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক তারক দাস, তিনিই জবাবী ভাষণ দেন। সম্মেলন থেকে তারক দাসকে ফের সম্পাদক ও রাজীব বিশ্বাসকে সভাপতি করে ৩৯ জনের জেলা কমিটি তৈরি হয়। সভাপতিমন্ডলীর থেকে সমাপ্তি ভাষণ দেন অধ্যাপক দেবেশ দাস।

Comments :0

Login to leave a comment