Modi Unequality

আয়ের সমীক্ষা নেই, আয় সমতার সাফল্য কিভাবে? মোদীর প্রচারে প্রশ্ন সিপিআই(এম)’র

জাতীয়

আয়ের সমীক্ষাই নেই দেশে। তা’হলে অন্য দেশের সঙ্গে আয়ের সমতার তুলনা করছে কী করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। দু’ধরনের সমীক্ষায় তুলনাই বা হয় কী করে?
কেন্দ্রের আয় সমতা প্রচারে তথ্য এবং সমীক্ষা পদ্ধতির ভিত্তিতে এই প্রশ্ন তুলল সিপিআই(এম)। গত ৫ জুলাই বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট উল্লেখ করে কেন্দ্র আয় সমতায় সাফল্যের দাবি জানিয়েছে। কেন্দ্রের তথ্য বিভাগের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে যে ভারত বিশ্বে আয় সমতার বিচারে চার নম্বরে। সিপিআই(এম)’র বক্তব্য, ওপরতলায় মহাধনীদের হাতে বিপুল অর্থ এবং তলার স্তরে তীব্র দারিদ্রই বাস্তবতা। আসলে দেশে আয়ের সমীক্ষা হয় না। ব্যয় বা খরচ দিয়ে ধন বৈষম্য ধরা পড়ে না। অথচ সেই তথ্য দিয়ে এমন দেশের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে যারা নিজেরা আয়ের আলাদা সমীক্ষা করে।  
শুক্রবার সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি একটি পোস্টেই তথ্যের কারচুপি নিয়ে সরব হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নিবন্ধও প্রকাশ করেছে।  নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভারতে আয়ের সমীক্ষা হয় না। করা হয় খরচের সমীক্ষা। দরিদ্র অংশ যা আয় করে প্রায় তা-ই খরচ করে। কিন্তু ধনী এবং মহাধনী এমনকি স্বচ্ছল অংশও আয়ের কম অংশ খরচ করে বাকি অর্থ সরিয়ে রাখে। তা’হলে ব্যয়ের সমীক্ষার ভিত্তিতে আয়ের সমতা ভারতে হিসেব করা হবে কী করে? কী করেই বা অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করা হবে?
একেবারে তলার ৫০ শতাংশের হাতে ১৫ শতাংশ আয়। মাঝের ৪০ শতাংশের হাতে আয়ের ২৭ শতাংশ। ওপরতলার ১০ শতাংশেরহাতে ৫৮ শতাংশ। ওপরতলার ১ শতাংশের হাতেই ২৮ শতাংশ আয়। 
ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি ল্যাব’র এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে নিবন্ধে। ওপরতলার ১ শতাংশের আয় তলার ৫০ শতাংশের ৭৫ গুন! সবচেয়ে ধনী ০.০০০১ শতাংশের সঙ্গে সবচেয়ে গরিব ৫০ শতাংশের আয়ের ফারাক ২৮০০ গুন। ভারতে এটিই বাস্তব। বলা হয়েছে, বিশ্ব ব্যাঙ্ক যে ‘গিনি সূচক’ ব্যবহার করে আয়ের সমতা বা বৈষম্য মাপে, তার ভিত্তি বিভিন্ন অংশের আয় সমীক্ষা। ভোগব্যয় সমীক্ষার তথ্যকে ব্যবহার করা হলেও তা যে আয় সমীক্ষার বিকল্প নয়, বিশ্বব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে তা উল্লেখও করা থাকে। 
জাতীয় আয়ের হিসেব সংক্রান্ত তথ্য, আয় করের তথ্য এবং অতীতে জাতীয় পরিসংখ্যান সংগঠনের আয় সমীক্ষার তথ্যের ভিত্তিতে আয়ের ফারাক হিসেব করা হয়েছিল ইনইকুয়ালিটি ল্যাবের ওই সমীক্ষায়। ব্যয় সমীক্ষার তথ্যে ওপরতলার আয় ধরা যায় না বলে এই পদ্ধতিতে আয় কর সংক্তান্ত তথ্যকে ব্যবহার করা হয়েছিল। 
সম্পদের সমীক্ষাও করা হয়েছিল এই পদ্ধতিতে। যাতে দেখা গিয়েছিল যে সবচেয়ে গরিব ৫০ শতাংশের সম্পদের ওপরতলার ১০ শতাংশের হাতে থাকা মোট সম্পদের মাত্র ৬.৪ শতাংশ। সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশের হাতে দেশের মোট সম্পদের ৬০ শতাংশ। 
নিবন্ধে মনে করানো হয়েছে যে চীনে আয় সমীক্ষা হয় না। হয় ভোগব্যয় বা খরচের সমীক্ষা। কিন্তু ব্রাজিলে আয়ের সমীক্ষা হয়। ভোগব্যয় সমীক্ষায় আয়ের ফারাক বড় অংশেই ঢাকা পড়ে যায়। ফলে ভারতের তথ্যের সঙ্গে ব্রাজিলের তথ্যের তুলনা করা যায় না। অথচ মোদী সরকার সে কাজ করেই সমতার ঢাক পেটাচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment