Teacher Recruitment scam

সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই বহাল, পরীক্ষায় বসতে পারবেন না চিহ্নিত অযোগ্যরা

রাজ্য কলকাতা

পরীক্ষায় বসতে পারবেন না নিয়োগ দুর্নীতিতে চিহ্নিত অযোগ্যরা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের মামলায় রাজ্য ও এসএসসির আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই বহাল রেখে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে নিয়োগ দুর্নীতিতে চিহ্নিত অযোগ্যদের এসএসসি’র নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ফর্ম পূরণ করলে তা বাতিল বলে গণ্য করতে হবে। এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য এই একই নির্দেশ দিয়েছিলেন।   
এসএসসির নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় যাতে চিহ্নিত অযোগ্যরাও বসার সুযোগ পান সেই চেষ্টা একাধিকরাব করেছে রাজ্য সরকার ও এসএসসি। চিহ্নিত অযোগ্যদের হয়ে আদালতে মামলা লড়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন ও রাজ্য সরকার।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিসন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস জানিয়েছএন চিহ্নিত অযোগ্যেরা নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। ইতিমধ্যে চিহ্নিত যাঁরা আবেদন জমা দিয়েছেন, তা-ও বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে হস্তক্ষেপ করা হবে না। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘চিহ্নিত অযোগ্যরা’ সুযোগ পাবেন না। এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল এসএসসি’র ওএমআর শিটে কারচুপি রয়েছে, এমন প্রার্থীরা পরীক্ষায় বসতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশে বলেছিল, চিহ্নিত অযোগ্য বলে যারা রয়েছে, তারা পরীক্ষায় বসতে পারবে না। তাদের বেতন ফেরত দিতে হবে। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কে বি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়ে বলেছে, ওএমআর শিটে কারচুপিতে চাকরি হয়েছে, এমন প্রার্থীরা অযোগ্য বলেই বিবেচিত হবে। 
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি’র ২৫ হাজার ৭৫২জন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এদের মধ্যে র্যাপঙ্ক জ্যাম্প করে যারা চাকরি পেয়েছিল, তাদের চাকরি বাতিল হয়েছে। ওএমআর শিটে কারচুপি করে যারা চাকরি পেয়েছিল, তাদের অযোগ্য হিসাবে বিবেচিত করেছে এসএসসি। চাকরি বাতিল হওয়া এমন শিক্ষকদের একটি অংশই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। তারা মামলা দায়ের করে বলেছিল, আমরা সাদা খাতা দিয়ে চাকরি পাইনি। আমরা পরীক্ষা দিয়েছিলাম। ফলে আমাদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হোক। বুধবার শীর্ষ আদালত আবার বলেছে, টেইন্টেডরা নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে পারবে না। চিহ্নিত অযোগ্যদের তালিকায় র্যাাঙ্ক জাম্প এবং ওএমআর কারচুপি করা এই প্রার্থীরা রয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে অযোগ্য বা টেইন্টেড বলে যাদের বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে ওএমআর শিট বিকৃত করা প্রার্থী, প্যানেল বহির্ভুত প্রার্থী, প্যানেল উত্তীর্ণ হওয়ার পর যাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে, সাদা খাতা জমা দিয়ে যারা চাকরি পেয়েছে, র্যা ঙ্ক জাম্প করে যারা চাকরি পেয়েছে, এছাড়াও অনেক বেআইনি নিয়োগ।
গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশে বলেছে, এসএসসি’র এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনও তথ্য এবং নথি নিজেদের কাছে রাখেনি। ফলে যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের তারা বাছাই করতে পারেনি। ওএমআর শিটের কোনও স্ক্যান কপি না রেখেই ওএমআর নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। উল্লেখ্য, অযোগ্য প্রার্থীদের রক্ষা করার জন্যই যোগ্য প্রার্থীদের ওএমআর শিট পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি এবং জালিয়াতি চাপা দেবার কাজ করতে গিয়ে নিয়োগকারী সংস্থা এসএসসি অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।
শীর্ষ আদালত তার নির্দেশে বলেছে, আগামী ৩১ মে’র মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করবে এসএসসি। এই বিজ্ঞপ্তির জারির তথ্য শীর্ষ আদালতে জমা দিতে হবে। এছাড়া আদালত বলেছে, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া কাজ শেষ করতে হবে। এদিনের কলকাতা ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে স্পষ্ট সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। 

Comments :0

Login to leave a comment