বস্তিবাসীদের স্থায়ী পাট্টা দেবার ইস্যুতে বোর্ডসভাতে বিরোধী বামপন্থী কাউন্সিলারদের উত্থাপন করা রেজুলেশনকে গুরুত্ব দিলো না শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের বর্তমান বোর্ড। রেজুলেশন প্রসঙ্গে মেয়রের অসহিষ্ণুতা প্রকাশ পেয়েছে সভাতে। বোর্ডের অসহিষ্ণুতা ও ধমক চমকের রাজনীতি করে রেজুলেশনকে বানচাল করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার বোর্ডসভা থেকে ওয়াকআউট করলেন চার বাম কাউন্সিলার। শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের দশম বোর্ড সভাকে কেন্দ্র করে এদিন দফায় দফায় সভা চত্বরে তর্কবিতর্কের পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বারবার মেয়র অসহিষ্ণু হয়ে পড়েন। বিভিন্ন প্রসঙ্গে বোর্ড সভাতে বিরোধীরা বলতে চাইলেও তাদের কথা না শুনেই একতরফাভাবে বোর্ড সভা চলে।
এদিন সিপিআই(এম) কাউন্সিলার মুন্সী নুরুল ইসলাম বলেন, রেলের অব্যবহৃত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী বস্তিবাসীদের জমির পাট্টা প্রদানের নিশ্চয়তার বিষয় নিয়ে বোর্ড সভায় রেজুলেশন পেশ করা হয়। গরিব বস্তিবাসী মানুষেরা যাতে সরকারি সাহায্য নিয়ে স্থায়ীভাবে বাড়ি বানিয়ে থাকতে পারে তার জন্য রাজ্য সরকার কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে কথা বলে পাট্টার ব্যবস্থা করুক এই উদ্দেশ্য নিয়েই রেজুলেশন পেশ করা হয়। কারণ সারা দেশে রেল ইতোমধ্যে ৪৩ হাজার হেক্টর জমি অব্যবহৃত বলে ঘোষণা করে ল্যান্ড ব্যাঙ্ক তৈরী করতে চাইছে। গরিব মানুষের হাতে স্থায়ী জমির পাট্টা দেবার জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করুক এটাই ছিলো রেজুলেশনের প্রেক্ষিত। যথাযথ নিয়ম মেনে এবিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য রেজুলেশন তোলা হলো। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কিন্তু মেয়র এই রেজুলেশনের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের গুনগান গাইতে শুরু করলেন। সেই পুরোনো ৩৪ বছরের একই ফিরিস্তি শোনালেন। বলেন, গোটা ভারতবর্ষের মধ্যে সবচাইতে বেশী গরিব মানুষের হাতে পাট্টা তুলে দেবার কাজ করেছে বিগত ৩৪ বছরে বামফ্রন্ট সরকার। বাস্তু ও চাষযোগ্য জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। মমতা ব্যানার্জির সরকার তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি।
নুরুল ইসলাম বলেন, আসলে এরা গরিব মানুষদের পাট্টা দিতেই চাইছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাট্টা দাবি করা হয়েছে। সেখানেই রাগ মেয়র ও ডেপুটি মেয়রের। তিনি বলেন, পারতো। তৃণমূল আর বিজেপি বোঝাপড়া করে চলছে। সমর্থন করা বা না করার বিষয়টি বলাই যেতে। গরিব মানুষের স্থায়ী পাট্টা হলে এরা বাংলার বাড়ি বা হাউজিং ফর অলের সুযোগ পেতে পারতেন। ৩৪বছরের গল্প শুনিয়ে কতদিন চালানো যাবে।
যদিও মেয়র ও ডেপুটি মেয়রের কথায় রাজ্য সরকার রেলের জমির পাট্টা চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রের কাছে। এই প্রসঙ্গে ইসলাম বলেন, এর কোন চিঠি বা উপযুক্ত প্রমান ওরা দেখাতে পারবেন না। যেহেতু এই পাট্টার দাবি আমরা করছি তাই বিরোধীতা করাটাই এদের কাজ। কিছু বললেই মেয়র ও তাদের দলের মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলাররা অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছেন। প্রশ্ন করার অধিকার সকলেরই রয়েছে। বিরোধীদল বললেই ওদের মেজাজ চড়া হচ্ছে।
Comments :0